এলাকার গ্রন্থাগারের দুরবস্থা তুলে ধরে একটি পত্রিকায় প্রকাশের জন্য একটি প্রতিবেদন লেখো।
খুলনা বিভাগীয় গণগ্রন্থাগারের বেহাল দশা
নিজস্ব প্রতিবেদক: খুলনা বিভাগীয় সরকারি গণগ্রন্থাগার ভবনটি সংস্কারের অভাবে জরাজীর্ণ ও এর ভেতরে স্যাঁতসেঁতে হয়ে পড়েছে। ফলে এ গ্রন্থাগারের দুষ্প্রাপ্য ও মূল্যবান বইগুলো নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। গ্রন্থাগার সূত্র জানায়, ১৯৬৪ সালে একটি দোতলা ভবনে গ্রন্থাগারটির কার্যক্রম শুরু হয়েছিল। প্রতিষ্ঠার পর থেকে বিএল কলেজ, খুলনা মহিলা কলেজ, আযম খান সরকারি কমার্স কলেজ, এমএম সিটি কলেজসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী এবং বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ নিয়মিত গ্রন্থাগারটিতে আসছেন।
গ্রন্থাগারটির আওতায় দশটি জেলা সরকারি গ্রন্থাগারের প্রশাসনিক ও আর্থিক কার্যক্রম পরিচালিত হয়। বর্তমানে অবকাঠামো এবং জনবল সংকটসহ নানা সমস্যার শিকার গ্রন্থাগারটি। এখানে ১৮ জনের জনবল কাঠামো রয়েছে। কিন্তু কর্মরত আছেন ১৪ জন। লাইব্রেরিয়ানের একটি পদ, রিডিং হল সহকারীর একটি পদ এবং নৈশপ্রহরী ও মালীর একটি করে পদ শূন্য রয়েছে। একটিমাত্র ফটোস্ট্যাট মেশিন, সেটিও অকেজো পড়ে রয়েছে। সরেজমিনে গিয়ে ভবনটির মেঝে ও দেয়ালগুলো স্যাঁতসেঁতে দেখা গেছে। গ্রন্থাগারের মধ্যে রাখা বইগুলোর অবস্থা অত্যন্ত নাজুক। ধুলা জমে রয়েছে বইগুলোর ওপর। অধিকাংশ চেয়ার-টেবিল ফাঁকা পড়ে থাকতে দেখা যায়।
দোতলায় গিয়ে দেখা যায়, সেখানে নতুন বইয়ের স্তুপ। কিন্তু ক্যাটালগ তৈরি না হওয়ায় সব বই পাঠকের জন্য উন্মুক্ত করা হয়নি। কয়েকজন কর্মচারী নাম না প্রকাশের শর্তে বলেন, গ্রন্থাগারের মূল সমস্যা জনবল সংকট। ক্যাটালগারের পদ না থাকায় নতুন যে বইগুলো আসে, সেগুলো পাঠকদের জন্য সহজে উন্মুক্ত করা সম্ভব হয় না। একাধিক পাঠকের সাথে কথা বললে তাঁরা আক্ষেপ প্রকাশ করেন। তাঁদের অভিযোগ, আমাদের পক্ষে সব বই কিনে পড়া সম্ভব নয়। তাই এখানে আসি। কিন্তু বই পড়ার সুষ্ঠু পরিবেশ যেমন নেই, তেমনি নেই প্রয়োজনীয় অনেক বই।
অবিলম্বে গ্রন্থাগারটির সংস্কার দাবি করেন তাঁরা। বিভাগীয় গণগ্রন্থাগারের উপপরিচালক রেজাউল করীম বলেন, প্রয়োজনীয় জনবলের অভাবে কাজ করতে খুব সমস্যা হয়। আমরা প্রতি মাসের রিপোর্টের সঙ্গে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে এসব সমস্যার কথা জানাই। কিন্তু কোনো কাজ হয় না। প্রতিবছর গ্রন্থাগারের সংস্কারকাজের জন্য যে পরিমাণ টাকা বরাদ্দ করা হয়, তা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই কম। গণপূর্ত অধিদপ্তরকে বলা হয়েছে নতুন করে ভবন তৈরি করার জন্য একটি প্রকল্প হাতে নিতে।
বহু বছর ধরে খুলনা শহরবাসীর জ্ঞান তৃষ্ণা মিটিয়ে আসছে খুলনা বিভাগীর গণগ্রন্থাগারটি। কিন্তু প্রয়োজনীয় সংস্কারের অভাবে এটির এখন নাজুক অবস্থা। শীঘ্রই এর দিকে নজর না দিলে জ্ঞানার্জনের এ তীর্থস্থানটি সম্পূর্ণরূপে ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়বে।
প্রতিবেদক
সমীর বড়ুয়া
খুলশী, খুলনা।
[এখানে পত্রিকার ঠিকানা সংবলিত খাম আঁকতে হবে]
0 Comments:
Post a Comment