সিরাজউদ্দৌলা নাটকের চরিত্র আলোচনাঃ মোহনলাল pdf download - Exam Cares

Breaking

Home Top Ad

Responsive Ads Here

Post Top Ad

Responsive Ads Here

সিরাজউদ্দৌলা নাটকের চরিত্র আলোচনাঃ মোহনলাল pdf download

একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণি 
বাংলা সহপাঠ গাইড 
নাটক 
সিরাজউদ্দৌলা 
সিকান্দার আবু জাফর

Character discussion of Sirajuddaula play: Mohanlal pdf download

সিরাজউদ্দৌলা নাটকের চরিত্র আলোচনাঃ মোহনলাল

চরিত্রঃ মোহনলাল

ভূমিকা: কাশ্মীরি মোহনলাল সাহসী যোদ্ধা ও বিশ্বস্ততার মূর্ত প্রতীক। নিজের জীবন দিয়ে মোহনলাল দেশের কল্যাণ চেয়েছিলেন, বিদেশি ক্ষমতালোভী আর স্বদেশি দেশদ্রোহীদের গতিরোধ করতে গিয়ে নিজের প্রাণ দিয়ে ইতিহাসে তিনি অমর হয়ে আছেন।

সিপাহসালার আর গণ্যমান্য সভাসদেরা যখন ঘসেটি বেগমকে কেন্দ্র করে ষড়যন্ত্রের ছুরি শাণাচ্ছেন তখন এ বিশ্বাসী সেনাপতির অধীনে ফৌজ পাঠিয়ে নবাব শওকতজঙ্গের বিদ্রোহ দমন করেন। নবাবের বিরুদ্ধে নিরন্তর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ঘসেটি বেগমকে তার মতিঝিলের প্রাসাদ থেকে নিয়ে এসে নবাবের নিজের প্রাসাদে রাখার দায়িত্বও পেয়েছিলেন মোহনলাল। নবাব যখন মিরজাফরের মত প্রমুখ প্রভাবশালী ব্যক্তিদের প্রকাশ্য দরবারে শপথ করান তখনও বিশ্বাসী মোহনলাল ছিলেন নবাবের পাশে। একমাত্র মিরমর্দান ছাড়া ভাগ্যবিড়ম্বিত নবাবের এতোবড়ো বিশ্বস্ত অনুচর মোহনলাল ছাড়া আর কেউ ছিলেন না।

নবাবপ্রীতি: বাংলার স্বাধীনতা, নবাবের নিরাপত্তার চিন্তায় মোহনলালের চোখে ঘুম ছিল না। মিরনের আবাসে ষড়য়ন্ত্রকারীরা গোপন সভায় সম্মিলিত হয়েছে- গুপ্তচরের মুখে এ সংবাদ পেয়ে মোহনলাল সেখানে হানা দিয়েছিলেন।

দেশপ্রীতি: পলাশির যুদ্ধের পূর্বরাত্রে নবাব যখন নিজের শিবিরে বিশ্বাসঘাতক সেনাপতিদের কথা ভেবে ক্ষণে ক্ষণে বিভ্রান্ত ও ব্যাকুল হয়ে পড়ছিলেন, তখনো সবশেষ খবর জানতে এসেছেন মোহনলাল। তিনি নবাবকে আশ্বাস দিয়েছেন, নবাবের শক্তি ইংরেজদের শক্তির চেয়ে অনেক বেশি। ইংরেজের তিন হাজার সৈন্যের মোকাবেলায় নবাবের রয়েছে পঞ্চাশ হাজার সৈন্য, ইংরেজদের দশটি কামানের তুলনায় নবাবের রয়েছে পঞ্চাশটিরও বেশি।

মোহনলাল ছিলেন নবাবের দুর্দিনের বন্ধু, অন্ধকারের আলো। দেশহিতব্রতী এ বিশ্বস্ত সৈনিকের ছিল একটি নির্ভরযোগ্য গুপ্তচর বাহিনী। তাদের মাধ্যমে তিনি ষড়যন্ত্রকারীদের সব সংবাদ রাখতেন। মিরজাফর আর ক্লাইভের মধ্যে যে সব গোপনীয় পত্র বিনিময় হতো তার বেশ কয়েকটি তার গুপ্তচরদের হাতে ধরা পড়ে। তিনি নিজেদের জয় সম্বন্ধে নিশ্চিত ছিলেন। পলাশিতে যুদ্ধের প্রহসন না হয়ে সত্যিকার যুদ্ধ হলে নবাবের জয় ছিল অবধারিত।

বিশ্বস্ত: তিনি নবাবকে শ্রদ্ধা করতেন, ভয়ও করতেন। যুদ্ধের পূর্বরাত্রে মিরজাফরের গুপ্তচর কমর বেগ ধরা পড়লে সে নবাবকে জানায় মোহনলালের হুকুমে তার ভাই উমর বেগ জমাদারকে হত্যা করা হয়েছে। সিরাজ তাঁর প্রতি অসন্তোষের দৃষ্টিতে তাকান। তখন মোহনলাল নবাবকে কৈফিয়তের সুরে জানান, মিরজাফরের গুপ্তচর উমর বেগ জমাদার ক্লাইভের চিঠিসহ ধরা পড়ে। সে পালাবার চেষ্টা করলে প্রহরীদের তরবারির আঘাতে তার মৃত্যু হয়।

সাহসী যোদ্ধা: মোহনলাল ছিলেন দুর্দান্ত সাহসী যোদ্ধা। প্রতিকূল অবস্থার মধ্যেও পলাশির যুদ্ধের সময় তিনি তাঁর ক্ষুদ্র বাহিনী নিয়ে ইংরেজ বাহিনীর ওপর প্রচণ্ড আক্রমণ চালান। ইংরেজ বাহিনী লক্ষবাগের দিকে হটে যেতে থাকে। বিশ্বাসঘাতক মিরজাফর বৃষ্টিতে নবাবের বারুদ ভিজে অকেজো হয়ে গেছে অজুহাতে যুদ্ধ বন্ধ করার হুকুম জারি করেন, কিন্তু দুঃসাহসী যোদ্ধা মোহনলাল সে হুকুম মানতে চান নি। সিপাহ্সালার, রায়দুর্লভ প্রমুখের ষড়যন্ত্র ও বিশ্বাসঘাতকতায় যুদ্ধের অবস্থা যখন মারাত্মক পরিণতির দিকে যাচ্ছিল, তখনো তিনি নিজের নিরাপত্তার কথা ভাবেননি।

তিনি নবাবকে শিবিরে গিয়ে জানিয়েছেন, যুদ্ধে তাঁদের পরাজয় হয়েছে। তখন আর আত্মভিমানের সময় নেই। নবাব যেন এক মুহূর্ত সময়ও নষ্ট না করে মুর্শিদাবাদে গিয়ে রাজধানী রক্ষার চেষ্টা করেন। পরাজয় নিশ্চিত জেনেও মোহনলাল নবাবের সাথে রাজধানীতে ফিরে যান নি। তিনি বলেছেন, পলাশিতে তাঁর যুদ্ধ তখনো শেষ হয় নি। তিনি ফরাসি বীর সাঁফ্রের সাথে যুদ্ধক্ষেত্রে ফিরে যান জীবনের শেষ যুদ্ধ লড়তে।

উপসংহার: সিরাজ অনেক ভরসা রাখতেন তাঁর বিশ্বস্ত সেনাপতি মোহনলালের ওপর। পরাজিত হয়ে রাজধানীতে ফিরে তিনি জনগণকে জানিয়েছিলেন, তখনো মোহনলাল জীবিত আছেন। তিনি বন্দি হননি। তিনি শত্রুর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়তে জনগণকে পরিচালিত করবেন।

এমন সময় বার্তাবাহক এসে জানায় সেনাপতি মোহনলাল বন্দি হয়েছেন। খবরটা নবাবের মনোবল ভেঙে দিয়েছিল। মোহনলালের স্মৃতি সিরাজের নামের সাথে অমর হয়ে আছে।

No comments:

Post a Comment

Post Bottom Ad

Responsive Ads Here