স্কুলের শেষ দিনে তোমার মনের অবস্থা বর্ণনা করে বন্ধুর কাছে চিঠি লেখো।
[রা. বো. ১৪, চ. বো. ০৯, সি. বো. ১৩]
মোহাম্মদপুর, ঢাকা
২১শে ডিসেম্বর, ২০২২
প্রিয় কবির,
একটু আগে স্কুল থেকে ফিরেছি। মনটা দারুণ যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে। ভাবলাম তোমার কাছে দু-কলম লিখতে পারলে আমার বেদনাহত হৃদয় কিছুটা হয়তো শান্ত হবে।
আজ আমার স্কুলজীবনের শেষ দিন। স্কুলের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক বিদায় সংবর্ধনার মাধ্যমে আমাদের বিদায় জানানো হয়। আমরা যারা পরীক্ষার্থী ছিলাম সবাই অন্য দিনের চেয়ে দু-ঘণ্টা আগেই স্কুলে এসে হাজির হয়েছি। কিন্ত আজ আর কারো মনে কোনো আনন্দ নেই, নেই কোনো চঞ্চলতা। সবার চোখেমুখে একটা বিষণ্ণতার ছাপ। চারদিকে যেন বিদায়ের সকরুণ সুর বাজছে, সে ধ্বনি আকাশে-বাতাসে প্রতিধ্বনি হয়ে আমার হৃদয়কে ক্ষত-বিক্ষত করতে লাগল। মনে হলো সবচেয়ে বেশি কষ্ট বোধ হয় আমিই পাচ্ছি। আসলে এ-কষ্ট এবং দুঃখ কাউকে বোঝানো কিংবা বলা যায় না বলেই এর তীব্রতা এত বেশি।
যথাসময়ে অনুষ্ঠান শুরু হয়ে গেল। অনুষ্ঠানের শুরুতেই স্কুলের নবম শ্রেণির কৃতী ছাত্রী দোলা আমাদের সবাইকে ফুলের-মালা পরিয়ে দিল। সূচনা হলো বিদায়ের! ওবায়দুল স্যার সূচনা-ভাষণ দিলেন। একে একে সিনিয়র শিক্ষকগণ বক্তব্য রেখে আমাদের প্রতি তাদের প্রত্যাশা ব্যক্ত করলেন।
স্কুলের শ্রেষ্ঠ ছাত্র হিসেবে আমাকে যখন বক্তব্য দেওয়ার জন্য বলা হলো, তখন আমি ভেবেই পাচ্ছিলাম না কীভাবে কথা বলব। দু-একটি কথা বলার পর আমি বাকরুদ্ধ হয়ে গেলাম। দু-চোখের জল বাধা মানল না। পনেরো সেকেন্ড পর অতি কষ্টে উচ্চারণ করলাম আমাদের জন্য দোয়া করবেন। এটুকু বলেই আমার বক্তব্য শেষ করতে হলো। সভাপতির ভাষণে বক্তব্য রাখলেন আমাদের পরম শ্রদ্ধাভাজন প্রধান শিক্ষক। তিনি আমাদের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ কামনা করে চলার পথের পাথেয় সম্পর্কে নানা উপদেশ দিলেন। সবশেষে আমাদের সবাইকে উপহার হিসেবে একটি করে বই দেওয়া হলো। এরপর সংগীতানুষ্ঠান। বিদায়ের গানে বেদনার সুর বেজে উঠতেই আমাদের স্কুলজীবনের শেষ দিনের মুহূর্তগুলো হৃদয়পটে ছবির মতো আটকে গেল। এ-স্মৃতি কখনোই ভোলার নয়।
সত্যিই, আজকের দিনে তোমাকে পাশে পেলে ভালো হতো। আজ এখানেই শেষ করছি। তাড়াতাড়ি চিঠি দিও। চাচা-চাচিকে সালাম জানিও।
ইতি
তোমার বন্ধু
টুটুল
[নাম ঠিকানাসহ নমুনা
খাম]
প্রেরক, নাম: তারিকুল ইসলাম ঠিকানা: তাজমহল রোড, চট্টগ্রাম। |
ডাকটিকিট |
প্রাপক, নাম: সানজিদা আক্তার ঠিকানা: সাউথ সেন্ট্রাল রোড, খুলনা। |
0 Comments:
Post a Comment