‘লালসালু’ উপন্যাসের চরিত্র আলোচনাঃ রহিমা pdf download - Exam Cares

Breaking

Home Top Ad

Responsive Ads Here

Post Top Ad

Responsive Ads Here

‘লালসালু’ উপন্যাসের চরিত্র আলোচনাঃ রহিমা pdf download

একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণি 
বাংলা সহপাঠ গাইড 
উপন্যাস 
লালসালু 
সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ 

Character discussion of 'Lalsalu' novel: Rahima pdf download
.
লালসালু উপন্যাসের কাহিনি-সংক্ষেপ, প্রধান চরিত্র ও নামকরণের সার্থকতা গাইড

চরিত্র আলোচনাঃ রহিমা
চরিত্রচিত্রণে সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ অসাধারণ নৈপুণ্যের পরিচয় রেখেছেন তাঁর ‘লালসালু’ উপন্যাসে; যদিও এ কথা আমাদের বিস্মৃত হওয়া সংগত হবে না যে এ উপন্যাসটি চরিত্রপ্রধান উপন্যাস নয়, তাই চরিত্রসৃজন তাঁর লক্ষ নয়- উপলক্ষ মাত্র।

কাহিনির দাবিতে এবং বাস্তবতার প্রয়োজনে তিনি অল্প কিছু চরিত্র নির্মাণ করেছেন, রহিমা সেগুলোর মধ্যে বিশিষ্ট হয়ে উঠেছে।

রহিমার বিশিষ্ট হয়ে ওঠার কারণ দ্বিবিধ। প্রথম কারণটি খুব সরল ও স্পষ্ট। সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ রহিমার মধ্যে দিয়ে শাশ্বত বাঙালি নারীর একটি চেনা মুখকে আঁকবার চেষ্টা করেছেন খুব সচেতনভাবে। স্মরণাতীতকাল থেকেই বাঙালি নারী স্বামীর অনুগত। তারা স্বামীকে ধ্যান-জ্ঞান মনে করে, স্বামীর সব নির্দেশ বিনা দ্বিধায় মেনে চলে- রহিমাও সেই ঘরানার মেয়ে।

তার বর্ণনা দিতে গিয়ে ঔপন্যাসিক বলেছেন, “নাম তার রহিমা। সত্যি সে লম্বা-চওড়া মানুষ। হাড় চওড়া মাংসল দেহ। শীঘ্র দেখা গেল, তার শক্তিও কম নয়। বড় বড় হাঁড়ি সে অনায়াসে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে তুলে নিয়ে যায়, গোঁয়ার ধামড়া গাইকেও স্বচ্ছন্দে গোয়াল থেকে টেনে বের করে নিয়ে আসে। হাঁটে যখন মাটিতে আওয়াজ হয়, কথা কয় যখন, মাঠ থেকে শোনা যায় গলা।”

এ চির চেনা বাঙালি নারী- দৈহিক শক্তিমত্তায় সে যতই প্রবল হোক না কেন, স্বামীর প্রতি ভক্তি তার প্রবল, স্বামীর কথা অক্ষরে অক্ষরে সে মেনে চলে। সে নম্র ও বিনীত। এ রকম এক নারীরই প্রয়োজন ছিল মজিদের, যে তার সংসার আগলে রাখবে। কঠিন হাতে সামাল দেবে সংসার, কিন্তু স্বামীর সামনে থাকবে সদা নতমস্তকে, বিনীতা, আনুগতা। মজিদের জন্য রহিমাই আদর্শ স্ত্রী।

রহিমার বিশিষ্ট হয়ে ওঠার দ্বিতীয় কারণটি খুব সচেতনপাঠে অনুধাবন করা যায়। দ্বিতীয় কারণটি ঔপন্যাসিকের নিতান্তই পরিকল্পনার অংশ। সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ তাঁর সমকালীন সমাজব্যবস্থাকে ভেঙে ফেলতে চেয়েছিলেন এবং এটি তিনি করতে চেয়েছিলেন সমাজের ভেতর থেকেই। তাই তিনি রহিমার মতো খুব চেনা একজন গৃহবধূকে অচেনা করে নির্মাণ করেছেন উপন্যাসের শেষ দিকে।

মজিদ জমিলাকে যখন মাজারে খুঁটির সঙ্গে বেঁধে রেখে আসে, তখন থেকে রহিমার এই নতুন রূপ আমরা দেখতে পাই। অনুগতা স্ত্রী রহিমার হঠাৎ করেই স্বামীর প্রতি বিরূপ মনোভাব প্রকাশ শুরু করে। সে স্পষ্টতই জমিলার পক্ষ অবলম্বন করে। এতদিন স্বামীকে সে অন্ধভাবে সমর্থন দিয়ে এসেছিল কিন্তু এই পর্যায়ে আমরা দেখি সে তার সমর্থন প্রত্যাহার করে নিয়েছে।

প্রকৃতপক্ষে, রহিমার চরিত্রটির মধ্য দিয়ে সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ ধর্মের নামে কুসংস্কার এবং শাস্ত্রধর্মের বিরুদ্ধে প্রাণধর্মের স্বতঃস্ফূর্ত জয় দেখানোর চেষ্টা করেছেন এবং নিঃসন্দেহে তাঁর সেই প্রয়াস সফল হয়েছে।

No comments:

Post a Comment

Post Bottom Ad

Responsive Ads Here