সিরাজউদ্দৌলা নাটকের চরিত্র আলোচনাঃ জগৎশেঠ pdf download - Exam Cares

Breaking

Home Top Ad

Responsive Ads Here

Post Top Ad

Responsive Ads Here

সিরাজউদ্দৌলা নাটকের চরিত্র আলোচনাঃ জগৎশেঠ pdf download

একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণি 
বাংলা সহপাঠ গাইড 
নাটক 
সিরাজউদ্দৌলা 
সিকান্দার আবু জাফর

Sirajuddaula Drama Character Discussion: Jagatsheth pdf download

সিরাজউদ্দৌলা নাটকের চরিত্র আলোচনাঃ জগৎশেঠ

চরিত্রঃ জগৎশেঠ

ভূমিকা: জৈন জগৎশেঠ তৎকালীন বাংলার ধনকুবের ছিলেন। স্বয়ং নবাবও মাঝে মাঝে টাকার জন্য তার কাছে হাত পাতেন। ঘসেটি বেগমের বাড়িতে নাচ-গানের জলসায় তার সাথে পাঠকের প্রথম পরিচয়। তিনি লোভী, অর্থটাই তার জীবনের পরমার্থ। তিনি বুদ্ধিমান ও বহুদর্শী। ঘসেটি বেগমের ষড়যন্ত্র সফল হলে কার কী লাভ হবে তিনি সঠিকভাবে আঁচ করতে পেরেছিলেন। তাই তিনি ঘসেটি বেগমকে স্পষ্ট বলেছিলেন, “শওকতজঙ্গ নিতান্তই অকর্মণ্য। ভাং-এর গেলাস আর নর্তকী ছাড়া তিনি আর কিছুই জানেন না।

তিনি নবাব হলে আসল কর্তৃত্ব থাকবে বেগম সাহেবার হাতে। তখন বেগমের নামে শাসনকার্য চালাবেন তার অনুগ্রহভাজন রাজা রাজবল্লভ।” কাজেই শওকতজঙ্গের আমলে জগৎশেঠের স্বার্থ কিছুতেই নির্বিঘ্ন হবে না। অতএব তার জন্য সে ক্রান্তিলগ্নে নগদ কারবারই ভালো। তাই তিনি বলেন যুদ্ধের ব্যয় বাবদ তিনি শওকতকে সাধ্যমতো সাহায্য করবেন, কিন্তু আসল আর লাভ মিলিয়ে বেগম সাহেবা তাঁকে একটা কর্জনামা লিখে দিলে তিনি নিশ্চিন্ত হতে পারেন।

সিরাজভীতি: জগৎশেঠের ধারণা ছিল সিরাজ তাদের গোপন ষড়যন্ত্রের কথা টের পেয়েছেন। তিনি যে-কোনো সময় তাদের বন্দি করতে চান। কাজেই সিরাজ স্থির হয়ে মসনদে বসতে পারলে তাদের নিষ্কৃতি নেই। তিনি নিজের ধনসম্পদ নবাবের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য আগে থেকেই সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে অজস্র অর্থ ব্যয়ে সেনাপতি ইয়ার লুৎফা খাঁর অধীনে দু’হাজার অশ্বারোহী সৈন্যের একটা দল পুষতেন।

বুদ্ধিমান: বুদ্ধিমান জগৎশেঠের কোনো আস্থা ছিল না তৎকালীন বাংলার গুপ্তচরদের ওপর। তার মতে, গুপ্তচররা মূল চিঠি হয়তো আসল জায়গায় পৌঁছে দিচ্ছে। কিন্তু তার আগে সে চিঠির একটা নকল নবাব-দরবারেও পাচার করে দিচ্ছে। তবে বাংলার তৎকালীন বিশৃঙ্খল অবস্থায় গুপ্তচরদের সাহায্য ছাড়া তাদের পক্ষে এক পা-ও অগ্রসর হওয়া সম্ভব নয়।

দ্বিধা-দ্বন্দ্ব: ইংরেজের ওপর জগৎশেঠ পুরোপুরি আস্থা স্থাপন করতে পারেন নি। তিনি ক্লাইভকেও তার মুখের ওপর স্পষ্ট ভাষায় বলেছেন, “ভগবানের দিব্যি, কর্নেল সাহেব, তোমরা বড় বেহায়া। এই সেদিন কলকাতায় যা মার খেয়েছো এখনো তার ব্যথা ভোলার কথা নয়।” তিনি বলেছেন, ইংরেজরা তাদের ব্যবসায়ের স্বার্থ রক্ষা করুক; কিন্তু তারা যেন দেশের শাসন-ক্ষমতায় হস্তক্ষেপ না করে। শাসন-ব্যবস্থায় বিদেশিদের অনুপ্রবেশ সম্বন্ধে তার এ স্পষ্ট ভাষণ প্রণিধানযোগ্য।

উপসংহার: মিরজাফরের ওপরও জগৎশেঠের আস্থা পুরোপুরি ছিল না। মিরজাফর নবাব হয়ে প্রথমে দরবারে আসতে দেরি করায় তিনি রসিকতা করে বলেছেন, “খাঁ সাহেব ঢাল-তলোয়ার ছেড়ে নবাবী লেবাস নিচ্ছেন, তাই দেরি হচ্ছে। তা ছাড়া চুলে নতুন খেজাব, চোখে সুরমা, দাড়িতে আতর, এসব তাড়াহুড়ার কাজ নয়।” অর্থপিশাচ এই ধনকুবের রসিক-পুরুষও ছিলেন।

No comments:

Post a Comment

Post Bottom Ad

Responsive Ads Here