নবম-দশম শ্রেণি
বাংলা সহপাঠ গাইড
উপন্যাস
কাকতাড়ুয়া
সেলিনা হোসেন
SSC Bangla 1st Paper Uponnash
Kaktarua
Selina Hossain
Srijonshil
Question and Answer pdf download
১নং সৃজনশীল প্রশ্নঃ
নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং সৃজনশীল প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও।
পাকসেনারা থানায় ঘাঁটি স্থাপন করলে এলাকার মানুষের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করে। সবাই পালাতে শুরু করলে কলিমদ্দি দফাদার ভিন্ন পরিকল্পনা করেন। তিনি পাকসেনাদের ঘায়েল করার জন্য তাদের সাথে যোগাযোগ শুরু করেন। আর গোপনে সব খবর পৌঁছে দেন, প্রস্তুত থাকতে বলেন। একদিন সুযোগমতো পাকসেনাদের গ্রামে এনে ভাঙা পুলের গোড়ায় দাঁড় করিয়ে কলিমদ্দি দফাদার তা পার হতে গিয়ে পরিকল্পনামাফিক জলে পড়ে যান। সাথে সাথে গর্জে ওঠে ওৎ পেতে থাকা মুক্তিযোদ্ধাদের অস্ত্র। আর খতম হয় সব কজন পাকসেনা।
ক. বুধা প্রায়ই কী সাজত? ১
খ. ‘আধা-পোড়া বাজারটার দিকে তাকিয়ে ওর চোখ লাল হতে থাকে’। কেন? ২
গ. উদ্দীপকের কলিমদ্দি দফাদারের সাথে ‘কাকতাড়ুয়া’ উপন্যাসের সাদৃশ্যপূর্ণ চরিত্রটি ব্যাখ্যা করো। ৩
ঘ. উদ্দীপকটি ‘কাকতাড়ুয়া’ উপন্যাসের সমগ্র ভাবকে ধারণ করে কি? যুক্তিসহ প্রমাণ করো। ৪
১ এর ক নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তরঃ
বুধা প্রায়ই কাকতাড়ুয়া সাজত।
১ এর খ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তরঃ
হানাদাররা আগুন দিয়ে বাজারটা পুড়িয়ে দিয়েছিল বলে প্রতিশোধের প্রতিজ্ঞায় ‘আধ-পোড়া বাজারটার দিকে তাকিয়ে বুধার চোখ লাল হতে থাকে’।
কোনো অন্যায় বা নির্মমতা দেখলে বুধার খুব রাগ হয়। রেগে গেলে তার চোখ লাল হতে থাকে। মুক্তিযুদ্ধকালে পাকহানাদার বাহিনী একদিন বুধাদের গ্রামে ঢুকে বহু মানুষকে নির্বিচারে হত্যা করে। তারা আদিম নৃশংসতায় আগুন দিয়ে বাজারটা পুড়িয়ে দেয়। এ ঘটনায় বুধা দারুণ ক্রোধে অগ্নিশর্মা হয়ে ওঠে। হানাদারদের প্রতি তার প্রবল ঘৃণা সৃষ্টি হয়। এর প্রতিশোধ গ্রহণ করতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয় সে। বুধার লাল চোখ সেই অনুভূতিই প্রকাশ করে।
১ এর গ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তরঃ
সুকৌশলে শত্রু নিধনের দিক থেকে উদ্দীপকের কলিমদ্দি দফাদারের সাথে ‘কাকতাড়ুয়া’ উপন্যাসের বুধা চরিত্রটি সাদৃশ্যপূর্ণ।
‘কাকতাড়ুয়া’ উপন্যাসের বুধা পিতৃমাতৃহীন অনাথ কিশোর হলেও সে ছিল মেধাবী ও কৌশলী। শক্তি দিয়ে যে কাজটি করা যায় না বুদ্ধি দিয়ে সে কাজটি অনায়াসে করা যায়। বুধার বুদ্ধিমত্তা আমাদের সে কথাই স্মরণ করিয়ে দেয়। সে সুকৌশলে একাধিক রাজাকারের বাড়ি জ্বালিয়ে দিয়েছিল। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মিলিটারিদের বাংকারে মাইন পুঁতে রেখেছিল।
উদ্দীপকের কলিমদ্দি দফাদার পাকসেনাদের ঘায়েল করার জন্য কৌশলী পরিকল্পনা গ্রহণ করেন। তিনি পাকসেনাদের সাথে মিশে গিয়ে তাদেরকেই নাস্তানাবুদ করেন। প্রকৃতপক্ষে তিনি ছিলেন একজন মুক্তিসংগ্রামী। মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে হাত মিলিয়ে তিনি হানাদার নিধনে ভূমিকা রাখেন। ‘কাকতাড়ুয়া’ উপন্যাসের বুধাও তেমনি নানা কৌশলে মুক্তিযোদ্ধাদের সহায়তা করেছিল।
১ এর ঘ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তরঃ
উদ্দীপকে বর্ণিত দিকটি ‘কাকতাড়ুয়া’ উপন্যাসের খণ্ডিত অংশের ধারক।
আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপট নিয়ে রচিত ‘কাকতাড়ুয়া’ উপন্যাস। লেখক সেলিনা হোসেন অপরিসীম মমতায় রচনা করেছেন দেশপ্রেমের এই অনবদ্য কাহিনি। উপন্যাসটি রচিত হয়েছে বুধা চরিত্রকে ঘিরে। উপন্যাসে মূলত বাঙালির মুক্তিসংগ্রামের কাহিনি বর্ণিত হলেও পাশাপাশি প্রতিফলিত হয়েছে গ্রামীণ জীবন, সুখ-দুঃখ, ব্যথা-বেদনায় ভরা নিম্নবিত্ত ও দারিদ্র্যক্লিষ্ট মানুষের ইতিবৃত্ত।
উদ্দীপকে কলিমদ্দি দফাদার কীভাবে পাকসেনাদের নিজ বুদ্ধিবলে পরাস্ত করেছেন সেই দিকটি আলোচিত হয়েছে। তিনি পাকসেনাদের সাথে বন্ধুত্বের অভিনয় করে তাদের সাথে মিশেছেন। এরপর সুযোগ বুঝে মুক্তিসেনাদের মাধ্যমে হানাদারদের শায়েস্তা করেন। ‘কাকতাড়ুয়া’ উপন্যাসের বুধা চরিত্রের মাঝেও এই একই চেতনা রয়েছে। কিন্তু উপন্যাসটির পরিধি আরও বিস্তৃত।
‘কাকতাড়ুয়া’ উপন্যাসে মুক্তিযুদ্ধের ভয়াবহ দিনগুলোর বর্ণনার পাশাপাশি গ্রামীণ জীবনের খুঁটিনাটি, প্রেম-ভালোবাসা, মায়া-মমতার গভীর বন্ধন, আত্মমর্যাদা ও স্বাধীনতার অনুভূতি ইত্যাদি প্রকাশিত হয়েছে। শত্রুর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য বুধার দিন দিন মুক্তিযোদ্ধা হয়ে ওঠার কথা বলা হয়েছে। শত্রুর বাংকারে মাইন পুঁতে তাদের ধ্বংস করে দিয়েছে। এছাড়াও রয়েছে হানাদারদের বিরুদ্ধে বাঙালির ঐক্যবদ্ধ চেতনার স্বরূপ। কিন্তু উদ্দীপকে কেবল মুক্তিযুদ্ধে কলিমদ্দি দফাদারের ভূমিকার একটি বিশেষ মুহূর্ত তুলে ধরা হয়েছে। তাই এ কথা নিঃসন্দেহে বলা যায়, উদ্দীপকটি ‘কাকতাড়ুয়া’ উপন্যাসের আংশিক ভাব ধারণ করে।
৯ম-১০ম শ্রেণিরবাংলা ১ম পত্র গাইডকাকতাড়ুয়াউপন্যাসসৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তরSSC Bangla 1st PaperKaktaruaUponnashSrijonshilQuestion-Answer২নং সৃজনশীল প্রশ্নঃ
নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং সৃজনশীল প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও।
৭ই মার্চের ভাষণ শুনে গর্জে ওঠে কলেজপড়ুয়া আবু সাঈদ। ঝাঁপিয়ে পড়ে মুক্তিযুদ্ধে। তাঁর নেতৃত্বে একের পর এক গেরিলা আক্রমণে অতিষ্ঠ পাকসেনারা। অপারেশন জ্যাকপটের সফল অভিযানের পর পাকসেনারা আবু সাঈদের গ্রামে আক্রমণ করে। বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেয়। আর যাকে যেখানে পেয়েছে সেখানেই নির্মমভাবে হত্যা করে। একসময় আবু সাঈদ জানতে পায় স্বজন হারানোর খবর। কিন্তু সে আপসহীন। তার একটাই প্রতিজ্ঞা, এ দেশের মাটি থেকে ওদের তাড়াতেই হবে।
ক. কে বুধাকে ‘মানিকরতন’ বলে ডাকত? ১
খ. ‘এবার মৃত্যুর উৎপাত শুরু করেছে ভিন্ন রকমের মানুষ’। এ কথা বলার কারণ কী? ২
গ. উদ্দীপকে বর্ণিত কাহিনি ‘কাকতাড়ুয়া’ উপন্যাসের যে বিশেষ দিকটির ইঙ্গিত করে তা ব্যাখ্যা করো। ৩
ঘ. ‘উদ্দীপকের আবু সাঈদের মনোভাবই যেন ‘কাকতাড়ুয়া’ উপন্যাসের মূল বক্তব্য।’ যুক্তিসহ প্রমাণ করো। ৪
২ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তরঃ
ক. হরিকাকু বুধাকে মানিকরতন বলে ডাকত।
খ. ‘এবার মৃত্যুর উৎপাত শুরু করেছে ভিন্ন রকমের মানুষ’ কথাটি ‘কাকতাড়ুয়া’ উপন্যাসের বুধার। পাকহানাদার বাহিনীর নির্বিচার হত্যাকাণ্ডের বর্ণনা প্রসঙ্গে সে এ কথা বলে।
‘কাকতাড়ুয়া’ উপন্যাসে কিশোর বুধার মধ্যে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা গভীরভাবে প্রকাশিত হয়েছে। মাতৃভূমির প্রতি বুধার গভীর ও অকৃত্রিম ভালোবাসা এই উপন্যাসে ফুটে উঠেছে। গ্রামে কলেরা রোগের বিস্তার ঘটলে বুধার মা-বাবা, বোন, আত্মীয়, পরিজন অনেকেই মারা যায়। চোখের সামনে বুধা আপনজনের মৃত্যু দেখেছে। কিন্তু নতুন করে যে মৃত্যুর বিভীষিকা তৈরি হয়েছে তা কোনো রোগে শোকে নয়। বুধার কিশোর মনে আগুন জ্বলে ওঠে যখন দেখে গ্রামের ভেতর জিপ নিয়ে ঢুকে হানাদাররা নির্বিচারে গুলি করে মানুষ হত্যা করে। সে বুঝতে পারে এরা এদেশের কেউ নয়। তাই তার মনে আলোচ্য কথাটি ধ্বনিত হয়।
গ. উদ্দীপকের কলেজছাত্র আবু সাঈদ মুক্তিযুদ্ধে যে বীরত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে তা ‘কাকতাড়ুয়া’ উপন্যাসের বুধার ভূমিকাকেই ইঙ্গিত করে।
১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে রচিত ‘কাকতাড়ুয়া’ উপন্যাস। উপন্যাসের প্রধান চরিত্র পিতৃমাতৃহীন অনাথ বালক বুধার জীবন কেটেছে নানা ঘাত-প্রতিঘাতের মধ্য দিয়ে। হানাদার বাহিনীর নির্বিচার হত্যাকাণ্ড ও বাজার জ্বালিয়ে দেওয়ার ঘটনায় তার মনে ক্ষোভের আগুন জ্বলে ওঠে। সে প্রতিশোধপরায়ণ হয়ে ওঠে। দিন দিন সে মুক্তিযোদ্ধা হয়ে ওঠে। শান্তি কমিটির চেয়ারম্যানের বাড়ি সে আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেয়। পাকসেনাদের বাংকারে সে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মাইন পুঁতে আসে।
কলেজপড়ুয়া আবু সাঈদ ৭ই মার্চের ভাষণে উদ্বুদ্ধ হয়ে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে। একের পর এক গেরিলা আক্রমণ করে হানাদারদের পর্যুদস্ত করে। হানাদাররা তার গ্রামে ভয়াবহ হত্যাকাণ্ড চালায়। আত্মীয়-স্বজনের মৃত্যুর খবরেও সে দমে যায়নি। দেশ শত্রুমুক্ত করতে সে বজ্রকঠিন শপথ নেয়। ‘কাকতাড়ুয়া’ উপন্যাসের বুধা দেশের মাটি মানুষকে ভালোবেসে জীবনটাকে হাতের মুঠোয় নিয়েছিল। আবু সাঈদও যুদ্ধে স্বজন হারিয়েও একচুল পিছপা হয়নি।
ঘ. উদ্দীপকের আবু সাঈদ দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে দেশকে শত্রুমুক্ত করতে বীরত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। মুক্তিকামী মনের এই দৃঢ় তাই ‘কাকতাড়ুয়া’ উপন্যাসের মূল বক্তব্য।
‘কাকতাড়ুয়া’ মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক এক অসাধারণ উপন্যাস। লেখক সেলিনা হোসেন যুদ্ধের পটভূমি অত্যন্ত জীবনঘনিষ্ঠ করে আমাদের কাছে উপস্থাপন করেছেন। তিনি বুধার মতো এক বিস্ময়কর চরিত্র সৃষ্টি করেছেন। বুধা সহায়সম্বলহীন। তাই তার হারানোর কিছু ছিল না নিজের প্রাণটা ছাড়া। দেশের জন্য সে প্রাণটাকেই বাজি রেখেছিল। বুধা ও তার সহসঙ্গীদের মরণপণ চেষ্টায় শত্রুর ধ্বংস অনিবার্য হয়ে উঠেছিল।
উদ্দীপকে উল্লিখিত ৭ই মার্চের ভাষণের মধ্য দিয়ে এ দেশের মানুষের মাঝে গণজাগরণের সৃষ্টি হয়েছিল। মুক্তিপাগল মানুষ দেশমাতৃকার স্বাধীনতার জন্য বজ্রকঠিন সিদ্ধান্ত নেয়। কলেজপড়ুয়া আবু সাঈদও সেদিন প্রতিরোধ ও প্রতিশোধের নেশায় গর্জে উঠেছিল। একের পর এক গেরিলা আক্রমণের মধ্য দিয়ে হানাদার বাহিনীকে সমুচিত জবাব দেয় সে। হানাদাররা তার বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেয়। নির্বিচারে মানুষ হত্যা করে। প্রিয়জন হারানোর খবরেও সে দমে যায়নি বরং প্রাণপণে যুদ্ধ করেছে।
‘কাকতাড়ুয়া’ উপন্যাসে পাকসেনাদের বর্বরতা ও বাঙালির প্রতিরোধ সংগ্রামের কথা বলা হয়েছে। অন্যায় অবিচারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানের প্রত্যয় ব্যক্ত করা হয়েছে। উদ্দীপকের বক্তব্য সংক্ষিপ্ত হলেও কলেজপড়ুয়া আবু সাঈদের ভূমিকার মধ্য দিয়ে মুক্তিযুদ্ধে জীবন-মরণ সংগ্রামের চিত্রই প্রতিফলিত হয়েছে। উপন্যাসে বুধা ও তার সহযোগীরা যেভাবে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিল উদ্দীপকের আবু সাঈদও একই ভাবে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। উপন্যাসের কাহিনি আমাদের মনে মুক্তিসংগ্রামের সেই অবিনাশী চেতনার জাগরণ ঘটায়। উদ্দীপকের আবু সাঈদের বীরত্বে গর্বে আমাদের বুক ফুলে ওঠে। উপন্যাস ও উদ্দীপক উভয়টিই স্বাধীনতা সংগ্রামে মানুষের মহান আত্মত্যাগের স্বরূপ তুলে ধরে।
৯ম-১০ম শ্রেণিরবাংলা ১ম পত্র গাইডকাকতাড়ুয়াউপন্যাসসৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তরSSC Bangla 1st PaperKaktaruaUponnashSrijonshilQuestion-Answer৩নং সৃজনশীল প্রশ্নঃ
নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং সৃজনশীল প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও।
জমিদার মফিজ খাঁর নাম শুনলে প্রজারা ভয়ে কাঁপতে থাকে। তার হুকুমের অবাধ্য হলে সে প্রজার আর রক্ষা নেই। ইদানীং তার চেলা হিসেবে কাজ করছে হাসেম ব্যাপারী। সারাক্ষণ তাকে কুপরামর্শ দেয় আর নানা অজুহাতে প্রজাদের হালের বলদ, ঘরের টিন, পুকুরের মাছ ধরে নিয়ে আসে। কেউ প্রতিবাদ করলে তাকে গ্রাম ছাড়া করে। গ্রামের সালিস-বিচার সবই হাসেম ব্যাপারীর ইঙ্গিতে চলে। তাই সাধারণ মানুষ কানাঘুষা করে হাসেম ব্যাপারী যেন জমিদারের জমিদার।
ক. শান্তি কমিটির চেয়ারম্যান কে ছিল? ১
খ. যে মানুষের দৃষ্টিতে ভাষা নেই, বুধার মতে সে মানুষ কেন মানুষ নয়? ২
গ. উদ্দীপকের হাসেম ব্যাপারীর সাথে ‘কাকতাড়ুয়া’ উপন্যাসে বর্ণিত আহাদ মুন্সি চরিত্রের সাদৃশ্যের দিকটি ব্যাখ্যা করো। ৩
ঘ. উদ্দীপকে বর্ণিত দিকটিই ‘কাকতাড়ুয়া’ উপন্যাসের একমাত্র দিক নয়- যুক্তিসহ বুঝিয়ে লেখো। ৪
৩ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তরঃ
ক. শান্তি কমিটির চেয়ারম্যান ছিল আহাদ মুন্সি।
খ. যে মানুষের দৃষ্টিতে ভাষা নেই, বুধার মতে সে মানুষ নয়। কারণ সে প্রাণহীন, তার মাঝে ভালোবাসা নেই।
যে মিলিটারিরা নির্বিচারে মানুষ হত্যা করে তাদের চোখে চোখ রাখতে বুধা ভয় পায় না। বরং তাদের দিকে তাকিয়ে ভালো করে পরখ করে। তাদের দৃষ্টি ছিল নির্জীব, প্রাণহীন। আর নির্জীব প্রাণহীনরাই হিংস্র হয়ে থাকে। বুধা এই হিংস্রতা প্রত্যক্ষ করেছে। এমন নির্মমতা প্রদর্শন কোনো স্বাভাবিক মানুষের পক্ষে সম্ভব নয়। তাই সে মনে করে যে মানুষের দৃষ্টিতে ভাষা নেই, সে মানুষ মানুষ নয়।
গ. সাধারণ মানুষের ওপর অত্যাচার, অবিচার ও জুলুম চালানোর ক্ষেত্রে সহায়তাকারী হিসেবে উদ্দীপকের হাসেম ব্যাপারীর সাথে ‘কাকতাড়ুয়া’ উপন্যাসের আহাদ মুন্সির সাদৃশ্য বিদ্যমান।
মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী নিরস্ত্র বাঙালির ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। তারা নির্বিচারে মানুষ হত্যা করে, বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেয়। হানাদারদের দোসর হয়ে অপকর্মে লিপ্ত হয় এদেশীয় কিছু নরপশু। তারা নিরপরাধ মানুষকে হানাদারদের কাছে ধরিয়ে দেয়। সম্পদ লুণ্ঠনসহ বিভিন্ন কাজে তারা প্রত্যক্ষভাবে সহায়তা করে। মুক্তিযোদ্ধাদের খবর পাকিস্তানি ক্যাম্পে পৌঁছে দিয়ে তারা হানাদারদের পক্ষে কাজ করে। ‘কাকতাড়ুয়া’ উপন্যাসের আহাদ মুন্সীর মাঝে আমরা এ বৈশিষ্ট্যগুলো লক্ষ করি।
উদ্দীপকের হাসেম ব্যাপারী অত্যাচারী জমিদারের প্রতিনিধি। জমিদারের সব অপকর্মের সাথি সে। জমিদারের কথার অবাধ্য হলেই তার নেতৃত্বে প্রজাদের ওপর নেমে আসত অত্যাচারের স্টিমরোলার। সে নানা অজুহাতে প্রজাদের সহায়-সম্বল লুট করে নেয়। সবকিছুর নাটের গুরু এই হাসেম ব্যাপারী। উপন্যাসের আহাদ মুন্সি যেমন হানাদার বাহিনীর দোসর হয়ে অপকর্ম করে তেমনি হাসেম ব্যাপারীও জমিদারের চামচা হয়ে অন্যায়-অত্যাচার চালায়। উভয়ের ভূমিকাই মানবতাবিরোধী এবং নিপীড়নমূলক।
ঘ. ‘কাকতাড়ুয়া’ উপন্যাসের আহাদ মুন্সি চরিত্রের একটি খণ্ডিত দিক উদ্দীপকে প্রকাশিত হয়েছে। কিন্তু উপন্যাসে আরো বহু বিষয়ের অবতারণা করা হয়েছে।
সেলিনা হোসেন রচিত ‘কাকতাড়ুয়া’ উপন্যাসের পটভূমি রচিত হয়েছে মহান মুক্তিযুদ্ধকে কেন্দ্র করে। পাকবাহিনীর বর্বরতার বিরুদ্ধে একটি কিশোর কীভাবে প্রবল প্রতিরোধ গড়ে তোলে তারই চমকপ্রদ বর্ণনা রয়েছে উপন্যাসে। তার সংগ্রামমুখরতা প্রেরণা জোগায় মুক্তিকামীদের। সকলে শত্রুদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হয়। পাকিস্তানিদের এদেশীয় দোসরদের কর্মকাণ্ডের বিবরণ রয়েছে উপন্যাসে। গ্রামীণ জীবনে নানা খুঁটিনাটি বিরণের আড়ালে উপন্যাসে ভাস্বর হয়ে উঠেছে মুক্তির চেতনা।
উদ্দীপকে অত্যাচারী জমিদার মফিজ খাঁয়ের চেলা হলো হাসেম ব্যাপারী। সে জমিদারের হয়ে প্রজাসাধারণের ওপর নির্যাতন চালায়। জমিদারের ছত্রচ্ছায়ায় সে সাধারণ মানুষের হালের বলদ, ঘরের টিন, পুকুরের মাছ আত্মসাৎ করে। তাদের মুখের কথাই যেন আইন। বিচার-সালিসও হয় হাসেম ব্যাপারীর ইঙ্গিতে। ‘কাকতাড়ুয়া’ উপন্যাসের আহাদ মুন্সিও অনুরূপ একটি চরিত্র। কিন্তু উপন্যাসে অন্য চরিত্রগুলোর মাধ্যমে একটি বিস্তৃত কাহিনির রূপায়ণ ঘটেছে।
আহাদ মুন্সির চরিত্র ‘কাকতাড়ুয়া’ উপন্যাসের একটি অনুষঙ্গ হলেও এই উপন্যাসে বহু বিষয়ের অবতারণা করা হয়েছে। সাহস ও দেশপ্রেমের প্রতিরূপ হিসেবে বুধা চরিত্র সৃষ্টি করা হয়েছে। মুক্তিসংগ্রামে তার প্রত্যয়দীপ্ত ভূমিকার উল্লেখ রয়েছে। এছাড়া উপন্যাসে বিধৃত হয়েছে সাধারণ গ্রামীণ জীবনের বর্ণনা, মহামারির ভয়াবহতা, হানাদার বাহিনীর অবর্ণনীয় পৈশাচিকতা, আর্থিক টানাপোড়েন, ইত্যাদি। উপন্যাসের মূলভিত্তি মুক্তিযুদ্ধ হলেও উদ্দীপকে তা নয়। উদ্দীপকে শুধু গ্রামীণ সামন্তবাদের একটি করূণ রূপ ফুটে উঠেছে।
৯ম-১০ম শ্রেণিরবাংলা ১ম পত্র গাইডকাকতাড়ুয়াউপন্যাসসৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তরSSC Bangla 1st PaperKaktaruaUponnashSrijonshilQuestion-Answer৪নং সৃজনশীল প্রশ্নঃ
নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং সৃজনশীল প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও।
১৯৭১ সাল। আমাদের ইতিহাসের এক গৌরবময় অধ্যায়। নির্যাতন, হত্যা, বাড়িঘর পুড়ে যাওয়া স্বচক্ষে দেখে দেশবাসী। তাঁদের মনে প্রতিরোধ ও প্রতিশোধের বাসনা জাগে। তাঁরা দৃঢ়প্রতিজ্ঞ, শত্রুর মোকাবিলা করে দেশকে মুক্ত ও স্বাধীন করবে।
ক. বুধার মা-বাবার কবর কে পরিষ্কার করে? ১
খ. ‘ভয় কী- সে তো ও কবে ভুলে গেছে।’ কেন ভুলে গেছে? ব্যাখ্যা করো। ২
গ. “‘কাকতাড়ুয়া’ উপন্যাসটি আমাদের ইতিহাসের এক গৌরবময় দলিল”- উদ্দীপকের আলোকে বর্ণনা করো। ৩
ঘ. উদ্দীপকের মূলভাব যেন ‘বুধা’ চরিত্রের প্রতিচ্ছবি? বিশ্লেষণ করো। ৪
৪ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তরঃ
ক. বুধার মা-বাবার কবর পরিষ্কার করে কুন্তি।
খ. চোখের সামনে পরিবারের সবাইকে চিরবিদায় নেওয়ার দৃশ্য দেখার পর থেকে বুধা ভয় পেতে ভুলে গেছে।
বুধাদের গ্রামে একবার কলেরা এসেছিল মহামারির রূপ ধারণ করে। তাতে উজাড় হয়ে যায় গ্রামের অর্ধেক মানুষ। বুধার বাবা-মা ও চার ভাইবোনেরও এক রাতে অকাল মৃত্যু ঘটে। অলৌকিকভাবে বেঁচে যায় বুধা। চোখের সামনে জীবনের সবচেয়ে ভয়াবহ ও নির্মম বাস্তবতা বুধার মন থেকে সব ধরনের ভয় কেড়ে নেয়। এ কারণেরই বুধা সম্পর্কে আলোচ্য উক্তিটি করা হয়েছে।
গ. ‘কাকতাড়ুয়া’ উপন্যাসে বাংলাদেশের মুক্তিসংগ্রামের ইতিহাসকেই তুলে ধরা হয়েছে। তাই আলোচ্য উক্তিটি যথার্থ।
সেলিনা হোসেন রচিত ‘কাকতাড়ুয়া’ উপন্যাসের পটভূমি বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধ। মুক্তিযুদ্ধে বিভিন্ন সময়কালের বাস্তবতা উপন্যাসে ধরা পড়েছে। হানাদার পাকিস্তানি ও দেশীয় শত্রুদের বিরুদ্ধে মানুষের লড়াইয়ের বিবরণ রয়েছে উপন্যাসে। মানুষের গভীর দেশপ্রেম ও দৃঢ়প্রতিজ্ঞার কাছে শত্রুদের পরাজয়ের চিত্রও আমরা উপন্যাসটিতে দেখতে পাই।
উদ্দীপকে আমরা পাই ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের গৌরবের অনুভূতি। এ দেশের মানুষের ওপর পাকিস্তানি সেনারা নির্মম নির্যাতন চালিয়েছিল। কিন্তু মানুষ আশা হারায়নি। বরং ঐক্যবদ্ধ হয়ে দ্বিগুণ শক্তিতে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল শত্রুদের ওপর। অধিকার আদায়ের এই সংগ্রামী চেতনা আমাদের চিরকালের অহংকার। ‘কাকতাড়ুয়া’ উপন্যাসও একই চেতনায় সমৃদ্ধ।
[প্রশ্নটি সৃজনশীল আঙ্গিকে রচিত না হওয়ায় সঠিকভাবে উত্তর দেওয়া গেল না।]
ঘ. ‘কাকতাড়ুয়া’ উপন্যাসের বুধা চরিত্রটি স্বাধীনতার চেতনায় সমুজ্জ্বল। উদ্দীপকের মূলভাবও তা-ই।
সেলিনা হোসেন রচিত ‘কাকতাড়ুয়া’ উপন্যাসের প্রধান চরিত্র বুধা। দেশ ও দেশের মানুষের প্রতি তার মনে রয়েছে গভীর মমত্ববোধ। সেই চেতনাই তাকে মুক্তিযুদ্ধের সময় দেশমাতৃকার শত্রুদের চিনিয়ে দেয়। তাই শত্রুদের বিনাশের জন্য বুধা দৃঢ় প্রতিজ্ঞা গ্রহণ করে।
১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের চিত্রপট প্রকাশিত হয়েছে আলোচ্য উদ্দীপকে। পাকিস্তানিদের শত অত্যাচার ও নির্যাতনেও হার মানেনি বাঙালি জাতি। বরং অধিকার আদায়ের জন্য সঙ্ঘবদ্ধ হয়েছে। শত্রুকে মোকাবেলার জন্য অনেক আত্মত্যাগ স্বীকার করেছে। মুক্তিযুদ্ধ এ কারণেই আমাদের কাছে এত গৌরবের। ‘কাকতাড়ুয়া’ উপন্যাসের বুধাও বাঙালির সেই অবিনাশী চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়েছে।
বুধা বয়সে ছোট হলেও তার বোধশক্তি প্রখর। পাকিস্তানি হানাদাররা যে এদেশের মানুষের স্বাধীনতা ছিনিয়ে নিতে চায় তা সে বুঝতে পারে। সেই সাথে সে এটিও বুঝতে পারে যে সবাই এক হয়ে শত্রুদের মোকাবেলা না করলে শত্রুদের জয় সুনিশ্চিত। উদ্দীপকেও আমরা একই ভাব দেখতে পাই। প্রতিরোধ ও প্রতিশোধের যে বাসনা বাঙালির মনে ছিল সেটিই একসময় ধ্বংস করে দিয়েছিল পাকসেনাদের সমস্ত অহংকার। উপন্যাসে লেখিকা কিশোর বুধা চরিত্রের আড়ালে এই চেতনাকেই রূপায়িত করতে চেয়েছেন।
৯ম-১০ম শ্রেণিরবাংলা ১ম পত্র গাইডকাকতাড়ুয়াউপন্যাসসৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তরSSC Bangla 1st PaperKaktaruaUponnashSrijonshilQuestion-Answer৫নং সৃজনশীল প্রশ্নঃ
নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং সৃজনশীল প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও।
এক দারুণ সাহসী ছিল ১৯৭১। সাহসে ও সংগ্রামে, লক্ষ্য অর্জনে দৃঢ় সংকল্প আর বিশাল আত্মত্যাগে পুরো বাঙালি জাতিই ছিল বিশ্বব্যাপী সংবাদ শিরোনাম। এ পথ পেরিয়েই আমাদের আজকের গৌরবদীপ্ত বাংলাদেশ। এ আমাদের বড় অহংকার।
ক. নোলক বুয়া বুধাকে কী নামে ডাকত? ১
খ. ‘গণকবর’ বলতে কী বোঝায়? ২
গ. উদ্দীপকের আলোকে ‘কাকতাড়ুয়া’ উপন্যাসের বুধা চরিত্রটি ব্যাখ্যা করো। ৩
ঘ. “এ পথ পেরিয়েই আমাদের আজকের গৌরবদীপ্ত বাংলাদেশ”- ‘কাকতাড়ুয়া’ উপন্যাসের আলোকে ঐ পথের স্বরূপ বিশ্লেষণ করো। ৪
৫ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তরঃ
ক. নোলক বুয়া বুধাকে ছন্নছাড়া নামে ডাকত।
খ. গণকবর বলতে বোঝায় এমন একটি স্থানকে যেখানে অনেক মানুষকে একত্রে সমাধিস্থ করা হয়।
সাধারণত একজন মানুষকে একটি কবরে সমাধিস্থ করা হয়। তবে বিশেষ পরিস্থিতিতে একটি বড় কবর খুঁড়ে অনেক মানুষকে একসাথে চিরবিদায় জানানো হয়। এটিকেই গণকবর বলা হয়। বাংলাদেশে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকহানাদাররা গণহত্যা চালায়। তখন সারা দেশের অনেক স্থানে অসংখ্য গণকবর তৈরি হয়।
গ. ‘কাকতাড়ুয়া’ উপন্যাসে স্বাধীনভাবে বেড়ে ওঠা কিশোর বুধা কীভাবে মুক্তিযুদ্ধে ভূমিকা পালন করে তাই আলোচিত হয়েছে।
‘কাকতাড়ুয়া’ উপন্যাসের প্রধান চরিত্র বুধা। পিতৃ-মাতৃহীন অনাথ বালক বুধা তার গ্রামে পাকহানাদার বাহিনীর বর্বরতা দেখেছে, বাজারের দোকানপাট আগুনে ভস্মীভূত হতে দেখেছে। এসব তাণ্ডব দেখে তার মনে প্রতিশোধের আগুন জ্বলে ওঠে। সে দিনের পর দিন নিজেকে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে গড়ে তুলেছে।
উদ্দীপকে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে বাঙালির বীরত্বপূর্ণ ভূমিকার কথা বলা হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের বিনিময়েই আমরা পেয়েছি স্বাধীন দেশ, স্বাধীন পতাকা, স্বাধীন পরিচয়। মুক্তিযোদ্ধা ও শান্তিকামী মানুষেরা রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীনতা ছিনিয়ে এনেছে। ‘কাকতাড়ুয়া’ উপন্যাসের কিশোর বুধার সাহস পাহাড়সম। তার কারণেই এলাকা শত্রুমুক্ত হয়। উদ্দীপকে বর্ণিত মুক্তির চেতনারই ধারক ‘কাকতাড়ুয়া’ উপন্যাসের বুধা।
ঘ. “এ পথ পেরিয়েই আমাদের আজকের গৌরবদীপ্ত বাংলাদেশ” বলতে মুক্তিসংগ্রামে বাঙালির রক্তক্ষয়ী সংগ্রাম ও আত্মত্যাগের কথা বলা হয়েছে, যা ‘কাকতাড়ুয়া’ উপন্যাসেরও মূলকথা।
‘কাকতাড়ুয়া’ উপন্যাসে আমরা দেখতে পাই মুক্তিযুদ্ধকালে পাকহানাদার বাহিনী নির্বিচারে গণহত্যা চালিয়েছে। বাড়িঘর জ্বালিয়ে দিয়েছে। পৈশাচিকভাবে এদেশের মানুষের ওপর নির্যাতননিপীড়ন চালিয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে মানুষ একসময় ঐক্যবদ্ধ হয়ে লড়াই করেছে।
উদ্দীপকে ১৯৭১ সালে বাঙালির বীরত্বপূর্ণ ভূমিকার কথা বলা হয়েছে। পুরো জাতি মুক্তিযুদ্ধে যেভাবে ঐক্যবদ্ধ হয়েছিল পৃথিবীর ইতিহাসে তা এক গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায় হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে। বিশ্ব অবাক বিস্ময়ে তাকিয়ে দেখেছে বাঙালি কীভাবে লড়াই করে দেশকে স্বাধীন করেছে। ‘কাকতাড়ুয়া’ উপন্যাসে আমরা লক্ষ করি একজন কিশোর কীভাবে প্রতিশোধের আগুনে জ্বলে উঠেছে।
উদ্দীপকে বলা হয়েছে লক্ষ্য অর্জনে বাঙালি ছিল দৃঢ় সংকল্পবদ্ধ। গুলির সামনে বাঙালি বুক পেতে দিয়েছে কিন্তু অন্যায়ের কাছে মাথা নত করেনি। রক্তের সিঁড়ি বেয়েই বিজয় অর্জিত হয়েছে। আর হানাদাররা আত্মসমর্পণে বাধ্য হয়েছে। ‘কাকতাড়ুয়া’ উপন্যাসেও আমরা দেখি নির্যাতিত মানুষেরা শত্রুকে রুখে দাঁড়িয়েছে। নিজেদের জীবনের বিনিময়ে হলেও স্বদেশকে রক্ষা করতে চেয়েছে, মানুষের আত্মত্যাগের কল্যাণেই স্বাধীন বাংলাদেশের জন্ম হয়েছে।
৯ম-১০ম শ্রেণিরবাংলা ১ম পত্র গাইডকাকতাড়ুয়াউপন্যাসসৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তরSSC Bangla 1st PaperKaktaruaUponnashSrijonshilQuestion-Answer৬নং সৃজনশীল প্রশ্নঃ
নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং সৃজনশীল প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও।
বাপ-মা মরা সবুজের খোঁজখবর কেউ রাখে না। তাই সারাদিন সে এখানে-সেখানে কাটিয়ে রাতের বেলা কারও বৈঠকখানায়, স্কুলের বারান্দায় ঘুমায়। মুক্তিযুদ্ধের সময় মানুষকে প্রাণভয়ে পালাতে দেখে সে জেনে যায় পাকসেনারা আমাদের শত্রু। এদের খতম করতেই হবে। মুক্তিযোদ্ধাদের সহায়তায় পাকসেনা ক্যাম্পে কৌশলে ঢুকে সে গ্রেনেড ছুড়ে মারলে বহু সৈন্য হতাহত হয়। সবুজ বিজয়ীর হাসি হাসে।
ক. নোলক বুয়া বুধাকে কী খেতে দেয়? ১
খ. আলো-আঁধার বুধার কাছে সমান কেন? ২
গ. উদ্দীপকে ‘কাকতাড়ুয়া’ উপন্যাসের কোন দিকটি প্রতিফলিত হয়েছে? ব্যাখ্যা করো। ৩
ঘ. উদ্দীপকের সবুজ কি বুধার প্রতিরূপ? তোমার উত্তরের সপক্ষে যুক্তি দেখাও। ৪
৬ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তরঃ
ক. নোলক বুয়া বুধাকে মুড়ি ভাজা খেতে দেয়।
খ. বুধার জীবন ছন্নছাড়া, উদ্দেশ্যহীন বলে দিনের আলো বা রাতের আঁধার বুধার কাছে বিশেষ কোনো পার্থক্য সৃষ্টি করে না।
ছেলেবেলায় বাবা-মাসহ পরিবারের সবাইকে হারিয়ে চরম মানসিক আঘাত পায় বুধা। সেই থেকে তার ভবঘুরে জীবনের শুরু। মাঠে-ঘাটে গন্তব্যহীন ঘুরে বেড়ায়। রাত কাটে স্কুলের বারান্দা, ঢেঁকিঘর, খড়ের গাদা, নতুবা নৌকায় শুয়ে। সময়ের কোনো হিসাবে সে নিজেকে বন্দি করে না। দিন কি রাত সবই তার কাছে তাই একই রকম।
গ. উদ্দীপকে ‘কাকতাড়ুয়া’ উপন্যাসে উল্লিখিত হানাদার বাহিনীকে পরাজিত করে বিজয় ছিনিয়ে আনার দিকটি প্রতিফলিত হয়েছে।
‘কাকতাড়ুয়া’ মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক একটি উপন্যাস। সেলিনা হোসেন গভীর দেশপ্রেম ও বাঙালির প্রতি মমত্ববোধ থেকে উপন্যাসটি লিখেছেন। উপন্যাসে আমরা দেখতে পাই পাক হানাদারদের বর্বরতার বিরুদ্ধে কিশোর বুধার লড়াইয়ের চিত্র। মুক্তিবাহিনীর পরিকল্পনা অনুযায়ী পাকবাহিনীর ক্যাম্প ধ্বংস করতে দুঃসাহসী ভূমিকা পালন করে সে।
উদ্দীপকে বর্ণিত হয়েছে নির্ভীক এক বালকের কথা। মুক্তিযুদ্ধের সময় স্বদেশের মানুষের অসহায়ত্ব দেখে সে বুঝে নেয় যে এদেশের শত্রু কারা। শত্রুদের বিরুদ্ধে লড়াই করার প্রতিজ্ঞা নেয় সে। মুক্তিযোদ্ধাদের সাহায্য নিয়ে পাকসেনাদের ক্ষতিসাধন করে। শত্রুবাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই করে সফল হওয়ার দিক থেকে উদ্দীপক ‘কাকতাড়ুয়া’ উপন্যাসের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ।
ঘ. জীবনযাপনের প্রণালি এবং মুক্তির চেতনা ধারণের দিক থেকে উদ্দীপকের সবুজকে ‘কাকতাড়ুয়া’ উপন্যাসের বুধার প্রতিরূপ বলা যায়।
সেলিনা হোসেন রচিত ‘কাকতাড়ুয়া’ উপন্যাসের মূল চরিত্র বুধা। সংসারে তার আপন বলতে কেউ নেই। সবাইকে সে হারিয়েছে এক রাতের ব্যবধানে। সেই দুর্ঘটনার মানসিক কষ্ট তার জীবনকে ওলটপালট করে দেয়। জীবনটা তার ছন্নছাড়া। তবে অসামান্য মানবিক বোধসম্পন্ন বুধা। পাক হানাদাররা যে এদেশের শত্রু এবং যেকোনো মূল্যে তাদেরকে যে প্রতিরোধ করতে হবে সেই চেতনা দৃঢ়ভাবে রয়েছে তার মাঝে।
উদ্দীপকের সবুজ অনাথ এক বালক। গৃহহীন সবুজের খবর রাখে না কেউ। নিজের মতোই সারা দিন এখানে ওখানে কাটায় সে। মুক্তিযুদ্ধে পাকবাহিনীর অত্যাচারের নমুনা তাকে মুক্তিচেতনা সম্পর্কে সচেতন করে তোলে। ‘কাকতাড়ুয়া’ উপন্যাসের বুধার মতোই সেও ঝাঁপিয়ে পড়ে শত্রুর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে।
উদ্দীপকের সবুজ ও ‘কাকতাড়ুয়া’ উপন্যাসের বুধা দুজনেই দুর্ভাগা। অল্প বয়সেই এতিম হয়েছে তারা। তাদের খোঁজ-খবর রাখার কেউ নেই। দুজনেই ভবঘুরে হয়ে ঘুরে বেড়ায় মাঠে-ঘাটে। দুজনের মনেই রয়েছে স্বাধীনতার অগ্নিমশাল। পাকিস্তানি শত্রুসেনাদের বিরুদ্ধে তারা সমান প্রতিবাদমুখর। দৃপ্তপদে শত্রুদের ধ্বংস করার অভিযানে অংশ নেয় বুধা ও সবুজ। শত্রুদের পরাজয় নিশ্চিত করে অসীম সাহস বুকে নিয়ে। এই দিকগুলোই উদ্দীপকের সবুজকে উপন্যাসের বুধার সাথে এক বিন্দুতে স্থাপন করেছে।
৯ম-১০ম শ্রেণিরবাংলা ১ম পত্র গাইডকাকতাড়ুয়াউপন্যাসসৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তরSSC Bangla 1st PaperKaktaruaUponnashSrijonshilQuestion-Answer৭নং সৃজনশীল প্রশ্নঃ
নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং সৃজনশীল প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও।
‘আমার বন্ধু রাশেদ’ নামক চলচ্চিত্রের এক সাহসী, নির্ভীক ও দেশপ্রেমিক কিশোর চরিত্র রাশেদ। পাকিস্তানিদের অত্যাচার আর রাজাকারদের এ দেশের মানুষের প্রতি বৈরী মনোভাবে সে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। তার মধ্যে প্রতিশোধস্পৃহা জাগ্রত হয়। সে নানা কৌশলে রাজাকারদের হেনস্তা করে। এমনকি যুক্তিযোদ্ধাদের সাহায্যে সে এগিয়ে আসে। স্কুলঘরে হানাদার বাহিনীর ক্যাম্প ধ্বংসে সে ভূমিকা রাখে। একসময় রাজাকারদের হাতে ধরা পড়ে এবং শহিদ হয়।
ক. নোলক বুয়া বুধাকে কী নামে ডাকে? ১
খ. ‘সেই শীতল মৃত্যু রাতের কথা’ বলতে কী বোঝানো হয়েছে? ২
গ. উদ্দীপকের হানাদার ও রাজাকারদের সাথে ‘কাকতাড়ুয়া’ উপন্যাসের সাদৃশ্যগত দিক নির্ণয় করো। ৩
ঘ. ‘রাশেদ ও বুধা উভয়েই দেশপ্রেমিক’-উক্তিটির যথার্থতা নিরূপণ করো। ৪
৭ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তরঃ
ক. নোলক বুয়া বুধাকে ছন্নছাড়া নামে ডাকে?
খ. ‘সেই শীতল মৃত্যু রাতের কথা’- বলতে বোঝানো হয়েছে বুধার পরিবারের সকল সদস্যকে একসাথে চিরতরে হারানোর বেদনার মুহূর্তটি সম্পর্কে।
বুধাদের গ্রামে এক বছর কলেরা মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়ে। প্রাণঘাতী সেই রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করে বুধার পরিবারের সবাই। একটি রাতের মাঝেই সামান্য সময়ের ব্যবধানে সবাই চলে যায়। বুধার চোখের সামনে একে একে বিদায় নেয় বাবা-মা ও চার ভাইবোন। সেই রাতটি বুধার জীবনে এক অন্ধকার অধ্যায়। খুব কাছ থেকে দেখা মৃত্যুর শীতলতার সেই অনুভূতি বুধাকে প্রায়ই অস্থির করে তোলে।
গ. অন্যায়ভাবে মানুষের ওপর অত্যাচার চালানোর দিক থেকে উদ্দীপকে বর্ণিত হানাদার ও রাজাকাররা ‘কাকতাড়ুয়া’ উপন্যাসে বর্ণিত হানাদার পাকিস্তানি ও দেশদ্রোহী রাজাকারদেরই প্রতিনিধি।
সেলিনা হোসেন রচিত ‘কাকতাড়ুয়া’ উপন্যাসে ১৯৭১ সালে এ দেশের মানুষের ওপর পাকবাহিনীর নৃশংসতার চিত্র উপস্থাপিত হয়েছে। উপন্যাসে আরও দেখা যায়, পাকিস্তানিদের সেই কর্মকাণ্ডে সমর্থন ও সহযোগিতা করে এদেশেরই এক শ্রেণির মানুষ। দেশ ও দেশের মানুষের সাথে তারা চরম বিশ্বাসঘাতকতা করে। তাদের প্রতি দেশপ্রেমিক মানুষের প্রবল ঘৃণার পরিচয় পাওয়া যায় উপন্যাসে।
উদ্দীপকে বর্ণিত হয়েছে ‘আমার বন্ধু রাশেদ’ নামক একটি চলচ্চিত্রের কথা। পাকিস্তানিদের বর্বরতার চিত্র রয়েছে চলচ্চিত্রটিতে। এ ছাড়াও রয়েছে ঘৃণ্য রাজাকারদের প্রতি মুক্তিকামী কিশোর রাশেদের বিক্ষুব্ধ মনের অনুভূতির কথা। উদ্দীপকের এ অনুভবগুলো ‘কাকতাড়ুয়া’ উপন্যাসেও ধরা পড়েছে।
ঘ. উদ্দীপকের রাশেদ ও ‘কাকতাড়ুয়া’ উপন্যাসের বুধা উভয়েই দেশমাতৃকাকে শত্রুমুক্ত করার জন্য নিজেদের সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছে। তারা দুজনেই মহান দেশপ্রেমিক।
সেলিনা হোসেনের ‘কাকতাড়ুয়া’ উপন্যাসে বর্ণিত বুধার হৃদয়ে দেশ ও দেশের মানুষের জন্য গভীর টান। আপাতদৃষ্টিতে তাকে দেখে মনে হয় মানসিক ভারসাম্যহীন। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে সে গভীরভাবে জীবন ও মানবিকবোধসম্পন্ন। স্বদেশের প্রতি অকৃত্রিম অনুভূতি তাকে চিনিয়ে দেয় দেশের শত্রু কারা আর বন্ধু কারা। তাই সে ঘৃণ্য রাজাকারদের বাড়ি পুড়িয়ে দেয় গোপনে। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পাকিস্তানিদের বাঙ্কার উড়িয়ে দিয়ে মুখ্য ভূমিকা পালন করে।
উদ্দীপকের রাশেদ এক সাহসী কিশোর। পাকিস্তানি হানাদারদের ধ্বংসযজ্ঞ আর তাতে বিশ্বাসঘাতক রাজাকারদের সহযোগিতা দেখে সে বিক্ষুব্ধ হয়। তার প্রতিশোধপরায়ণ মনোভাবের আগুনে পুড়তে হয় রাজাকারদের। পাকিস্তানিদের ক্যাম্প ধ্বংসে মুক্তিযোদ্ধাদের সাহায্য করে।
দেশের শত্রুদের বিরুদ্ধে উপন্যাসের বুধা ও উদ্দীপকের রাশেদের দৃঢ় অবস্থান তাদের দেশপ্রেমের গভীর অনুরাগেরই প্রকাশক। উপন্যাসের বুধা যেমন পাকিস্তানিদের অত্যাচার মেনে নিতে পারেনি তেমনি উদ্দীপকের রাশেদও পারেনি। ফলে তারা উভয়ই অন্যায়ের প্রতিবাদ করেছে। বুধা জীবন বাজি রেখে মুক্তিযোদ্ধাদের সহায়তা করেছে। উদ্দীপকের রাশেদও তেমনি সহায়তা করছে। ফলে তারা উভয়ই দেশপ্রেমিক।
৯ম-১০ম শ্রেণিরবাংলা ১ম পত্র গাইডকাকতাড়ুয়াউপন্যাসসৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তরSSC Bangla 1st PaperKaktaruaUponnashSrijonshilQuestion-Answer৮নং সৃজনশীল প্রশ্নঃ
নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং সৃজনশীল প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও।
গ্রেনেড উঠেছে হাতে, কবিতার হাতে রাইফেল
এবার বাঘের থাবা, ভোজ হবে আজ প্রতিশোধে
যার সঙ্গে যেরকম সেরকম খেলব বাঙালি
খেলেছি মেরেছি সুখে কান কেটে দিয়েছি তোদের।
ক. গাঁয়ের মানুষ কয় ভাগে ভাগ হয়ে গেছে? ১
খ. আহাদ মুন্সির চোখ কপালে উঠেছিল কেন? ২
গ. উদ্দীপকে বুধার জীবনের কোন অংশটি ফুটে উঠেছে ব্যাখ্যা করো। ৩
ঘ. “উদ্দীপকটিতে ‘কাকতাড়ুয়া’ উপন্যাসের সম্পূর্ণ ভাবের প্রতিফলন ঘটেনি।”- উক্তিটির যথার্থতা বিচার করো। ৪
৮ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তরঃ
ক. গাঁয়ের মানুষ দুই ভাগে ভাগ হয়ে গেছে।
খ. বুধার অপ্রত্যাশিত আচরণের কারণে আহাদ মুন্সির চোখ কপালে উঠেছিল।
বুধার স্বভাব-চরিত্র সম্পর্কে কিছুই জানা ছিল না আহাদ মুন্সির। বুধার সারল্যমাখা মুখ দেখে তাঁর মায়া হয়। সস্নেহে তিনি বুধাকে তার নাম জিজ্ঞেস করেন। ভয়-ডরহীন বুধা আহাদ মুন্সিকে চমকে দেওয়ার জন্য বলে ‘যুদ্ধ’। এমন অনাকাক্সিক্ষত জবাব শুনে আহাদ মুন্সি অত্যন্ত বিস্মিত হন।
গ. সেলিনা হোসেন রচিত ‘কাকতাড়ুয়া’ উপন্যাসে বর্ণিত বুধা দেশের শত্রুদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী ও প্রতিশোধপরায়ণ হয়ে ওঠে। তার জীবনের সেই বাস্তবতার সাথে উদ্দীপক কবিতাংশটির ভাব সাদৃশ্যপূর্ণ।
‘কাকতাড়ুয়া’ উপন্যাসে আমরা হানাদার পাকিস্তানি ও তাদের দোসরদের বিরুদ্ধে এদেশের মানুষদের ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তোলার কথা জানতে পারি। উপন্যাসে বুধা তেমনই এক মুক্তিকামী সত্তা। পাকিস্তানিদের নির্মমতা, রাজাকারদের হৃদয়হীনতার ব্যাপারগুলো তার মনে প্রতিশোধের স্ফুলিঙ্গ জ্বালে। নিজের সাহসিকতা ও বুদ্ধিমত্তাকে সম্বল করে সে তাদের বিরুদ্ধে লড়াই করে।
উদ্দীপকের কবিতাংশে দেশের শত্রুদের বিরুদ্ধে প্রবল প্রতিশোধের কথা বলা হয়েছে। অধিকার ফিরে পাওয়ার প্রত্যয়ে বাঙালি আজ মরিয়া। তাদের প্রবল ঘৃণার আগুনে জ্বলে-পুড়ে যায় শত্রুরা। কবিতাংশে বর্ণিত প্রতিশোধপরায়ণতার এ দিকটি ‘কাকতাড়ুয়া’ উপন্যাসে বর্ণিত বুধার জীবনের ঘটনার সাথে মিলে যায়।
ঘ. উদ্দীপকটিতে ‘কাকতাড়ুয়া’ উপন্যাসের বুধার প্রতিশোধপরায়ণতার দিকটি ছাড়া অন্য দিকগুলোর প্রতিফলন না ঘটায় উদ্দীপকটির উপন্যাসের খণ্ডিত ভাব প্রকাশ পেয়েছে।
সেলিনা হোসেনের ‘কাকতাড়ুয়া’ উপন্যাসে চিত্রিত হয়েছে বুধা নামক এক গ্রাম্য কিশোরের জীবনের অভিজ্ঞতা। আপাতদৃষ্টিতে ভাবলেশহীন মনে হলেও তার মাঝে জীবনবোধ প্রবল। মুক্তিযুদ্ধের সময় দেশের মানুষের ওপর হানাদারদের বর্বরতা লক্ষ করে সে ক্ষুব্ধ হয়। একাই শত্রুদের বিরুদ্ধে লড়াই করার প্রতিজ্ঞা করে। পরবর্তীকালে মুক্তিবাহিনীর সাথে যুক্ত হয়ে পাকিস্তানি সেনাদের আস্তানা পুড়িয়ে দেয়।
উদ্দীপকে প্রকাশিত হয়েছে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তাদের মিত্রদের ওপর বাঙালির প্রতিশোধ গ্রহণের কথা। বাংলার মানুষের ওপর নির্যাতনের পরিণতি হয়েছিল ভয়াবহ। মানুষের ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধের মুখে শত্রুদের সকল অন্যায়ের অবসান ঘটেছিল। শত্রুদের বিরুদ্ধে এমন প্রবল প্রতিরোধের কথা বলা হয়েছে ‘কাকতাড়ুয়া’ উপন্যাসেও।
উদ্দীপক কবিতাংশ ও ‘কাকতাড়ুয়া’ উপন্যাস উভয়ই মহান মুক্তিযুদ্ধের পটভূমিতে রচিত। উপন্যাসে বর্ণিত হয়েছে মুক্তিযুদ্ধের প্রারম্ভ, পাকবাহিনী ও তাদের দোসরদের বর্বরতা এবং তাদের বিরুদ্ধে বাঙালির প্রতিরোধের বর্ণনা। গ্রামীণ জীবনের নানা দিক তুলে ধরা হয়েছে উপন্যাসে। সেই সাথে রয়েছে বুধা নামক এক কিশোর মুক্তিযোদ্ধার নানা অনুভূতির কথা। কিন্তু উদ্দীপক কবিতাংশে রয়েছে মুক্তিযুদ্ধের কেবল একটি দিক। তা হলো শত্রুদের বিরুদ্ধে দেশবাসীর বীর বিক্রমে ঝাঁপিয়ে পড়ে তাদের পরাজিত করার বিষয়টি। এই বিবেচনায় উদ্দীপকটিকে ‘কাকতাড়ুয়া’ উপন্যাসের আংশিক ভাবের প্রকাশক বলা যায়।
৯ম-১০ম শ্রেণিরবাংলা ১ম পত্র গাইডকাকতাড়ুয়াউপন্যাসসৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তরSSC Bangla 1st PaperKaktaruaUponnashSrijonshilQuestion-Answer৯নং সৃজনশীল প্রশ্নঃ
নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং সৃজনশীল প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও।
উনিশশো একাত্তর সালের নভেম্বর মাসের মাঝামাঝি সময়ে মুক্তিযোদ্ধা আজাদের নেতৃত্বে বোমা মেরে একটি ব্রিজ ধ্বংস করে দেওয়া হয়। থানা সদর থেকে প্রায় ষাট কিলোমিটার দূরে চাচড়া গ্রামসংলগ্ন এ ব্রিজটি উড়িয়ে দেওয়া হয়। এতে প্রায় পঁচিশজন পাকিস্তানি হানাদার মৃত্যুমুখে পতিত হয়।
ক. উপন্যাসের প্রধান উপাদান কী? ১
খ. “বানরের আবার চাঁদে যাবার সাধ।”- এ কথা বলার কারণ ব্যাখ্যা করো। ২
গ. উদ্দীপকের আজাদ ‘কাকতাড়ুয়া’ উপন্যাসের কোন চরিত্রের প্রতিনিধি?- ব্যাখ্যা করো। ৩
ঘ. “উদ্দীপকটি ‘কাকতাড়ুয়া’ উপন্যাসের সমগ্র ভাব ধারণ করে না”- যথার্থতা নির্ণয় করো। ৪
৯ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তরঃ
ক. উপন্যাসের প্রধান উপাদান এর কাহিনি বা গল্প।
খ. বুধা নিজের নাম ‘বঙ্গবন্ধু’ রাখায় বন্ধু মধু তাকে ব্যঙ্গ করে আলোচ্য উক্তিটি করেছে।
কেউ নতুন নামে ডাকলে খুব ভালো লাগে বুধার। বঙ্গবন্ধুর ভাষণ শোনার পর তাঁর প্রতি বুধার এক ধরনের আকর্ষণ তৈরি হয়। তাই তার ইচ্ছা হয় তাকে সবাই বঙ্গবন্ধু নামে ডাকুক। কিন্তু বঙ্গবন্ধুর বিশাল ব্যক্তিত্বের পাশে বুধাকে নিতান্তই বেমানান মনে হয় বন্ধু মধুর কাছে। তাই বুধার কথা শুনে সে হেসে ফেলে এবং আলোচ্য উক্তিটি করে তাকে কটাক্ষ করে।
গ. পাকিস্তানি হানাদারদের ওপর আক্রমণ করার দিক থেকে উদ্দীপকের আজাদ ‘কাকতাড়ুয়া’ উপন্যাসের বুধা চরিত্রটির সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ।
সেলিনা হোসেন রচিত ‘কাকতাড়ুয়া’ উপন্যাসের মূল চরিত্র বুধা। কিশোর হলেও ভীষণ সাহসী সে। নিজের ভেতরে থাকা গভীর স্বদেশপ্রেম তার অজান্তেই তাকে যুক্ত করে দেয় মুক্তিযুদ্ধের সাথে। তাই সে রাজাকারদের বাড়ি আগুনে পুড়িয়ে দেয়। পাকিস্তানিদের বাঙ্কারে মাইন পুঁতে রেখে আসে।
উদ্দীপকে আমরা পাই, আজাদ নামক এক স্বাধীনতা সংগ্রামীর পরিচয়। পাকিস্তানি হানাদারদের বিরুদ্ধে সে সশস্ত্র সংগ্রামে লিপ্ত ছিল। তার নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধারা বোমা মেরে একটি ব্রিজ ধ্বংস করে দেয়। ফলে অনেক শত্রুসেনা নিহত হয়। মুক্তির চেতনা ধারণ করে হানাদারদের বিরুদ্ধে লড়াই করার দিক থেকে উদ্দীপকের আজাদকে ‘কাকতাড়ুয়া’ উপন্যাসের বুধার সাথে মেলানো যায়।
ঘ. উদ্দীপকটিতে ‘কাকতাড়ুয়া’ উপন্যাসের দেশাত্মবোধ এবং সাহসিকতার দিকটিই কেবল প্রকাশিত হওয়ায় এটি উপন্যাসের খণ্ডিত ভাবের ধারক।
সেলিনা হোসেনের ‘কাকতাড়ুয়া’ উপন্যাসটি ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের পটভূমিতে রচিত। উপন্যাসে প্রকাশিত হয়েছে দেশ ও দেশের মানুষের প্রতি মমত্ববোধ, বিদেশি যুদ্ধবাজদের প্রতি ঘৃণা, দেশের মানুষের মুক্তিযুদ্ধকালীন অসহায়ত্ব, বাঙালির ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ মানবিকতা, মর্যাদাবোধ, সহমর্মিতা ইত্যাদির অনুভূতি। একজন সাধারণ কিশোর কিভাবে অসাধারণ এক মুক্তিযোদ্ধা হয়ে ওঠে তার বর্ণনা পাওয়া যায় উপন্যাসে।
উদ্দীপকে প্রকাশিত হয়েছে আজাদ নামক এক মুক্তিযোদ্ধার বীরত্বের কথা। সাথি মুক্তিযোদ্ধাদের সহায়তা নিয়ে সে পাকিস্তানি হানাদারদের আক্রমণ করে। এতে অনেক হানাদারের মৃত্যু ঘটে। শত্রুদের বিরুদ্ধে এমন আক্রমণের বর্ণনা ‘কাকতাড়ুয়া’ উপন্যাসে মিললেও উপন্যাসটির ভাব তুলনামূলকভাবে বেশি বিস্তৃত।
‘কাকতাড়ুয়া’ উপন্যাসে রয়েছে মুক্তিযুদ্ধের সূচনা পর্বের কথা। সেখান থেকে উপন্যাসের কাহিনি ধারাবাহিকভাবে এগিয়েছে। অন্যদিকে উদ্দীপকে কেবল মুক্তিযুদ্ধের একটি ঘটনার উল্লেখ রয়েছে। উপন্যাসের মূল চরিত্র বুধার মাঝে আমরা মুক্তির চেতনা ছাড়াও আত্মনির্ভরশীলতা, পরোপকারিতা, তীক্ষ্ণ জীবনবোধ ইত্যাদি অনুভূতির ছাপ লক্ষ করি। কিন্তু উদ্দীপকে এর মূল চরিত্র আজাদের দেশাত্মবোধ ও সাহসিকতাই কেবল প্রকাশিত হয়েছে। এসব যুক্তি বিবেচনায় উদ্দীপকটিকে ‘কাকতাড়ুয়া’ উপন্যাসের সমগ্র ভাবের ধারক বলা যায় না।
৯ম-১০ম শ্রেণিরবাংলা ১ম পত্র গাইডকাকতাড়ুয়াউপন্যাসসৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তরSSC Bangla 1st PaperKaktaruaUponnashSrijonshilQuestion-Answer১০নং সৃজনশীল প্রশ্নঃ
নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং সৃজনশীল প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও।
দীনু ঔপন্যাসিক ইমদাদুল হক মিলনের “উনিশ শ একাত্তর” গল্পের এক অসহায় কিশোর চরিত্র। বয়স দশ বছর। গায়ের রং কালো। সংসারে তার আপন বলতে কেউ নেই। একাত্তরে সবাই যখন ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যায়, তখন দীনু গ্রামের ভিক্ষুক জমির চাচার সাথে ‘সুবলদের বাংলা’ ঘরে অবস্থান করে। সারাদিন ঘুরে বেড়ায় জমির চাচার সাথে। দেশ স্বাধীন হলে সবাই আবার গ্রামে ফিরে আসবে, এই স্বপ্ন নিয়ে দীনু যখন খালের ওপারে হানাদারদের ক্যাম্পের পাশ দিয়ে যাচ্ছিল তখন হানাদাররা তাকে গুলি করে হত্যা করে।
ক. শান্তি কমিটির চেয়ারম্যান কে? ১
খ. বুধা কাকতাড়ুয়া সেজেছিল কেন? ২
গ. উদ্দীপকের কাহিনি ‘কাকতাড়ুয়া’ উপন্যাসের যে দিকটির ইঙ্গিত করে তা ব্যাখ্যা করো। ৩
ঘ. উদ্দীপকের দীনুকে কি ‘কাকতাড়ুয়া’ উপন্যাসের বুধার সাথে তুলনা করা যায়? যুক্তিসহ বিচার করো। ৪
১০ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তরঃ
ক. শান্তি কমিটির চেয়ারম্যান আহাদ মুন্সি।
খ. অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী কণ্ঠস্বর হিসেবে নিজেকে উপস্থাপন করার জন্যই বুধা কাকতাড়ুয়া সেজেছিল।
কাকতাড়ুয়া মাঠের ফসলকে পাখপাখালির হাত থেকে রক্ষা করে। কাকতাড়ুয়ার ভয়ে পাখিরা ফসলের খেতে নামতে সাহাস পায় না। পাকিস্তানি হানাদাররাও বাঙালির স্বাধীনতা কেড়ে নিতে চেয়েছিল। বাঙালির সমস্ত সম্পদ নিজেদের অধিকারে নিতে চেয়েছিল। তাদের অত্যাচারের দৃশ্য বুধাকে অত্যন্ত ক্ষুব্ধ করে। গ্রাম থেকে হানাদারদের তাড়িয়ে দেওয়ার জন্য সেও কাকতাড়ুয়ার ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে চায়।
গ. উদ্দীপকের কাহিনি ‘কাকতাড়ুয়া’ উপন্যাসে বর্ণিত পাকিস্তানি হানাদারদের নিষ্ঠুরতার দিকটিকে ইঙ্গিত করে।
সেলিনা হোসেন ‘কাকতাড়ুয়া’ উপন্যাসে ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের ভয়াবহতার চিত্র তুলে ধরেছেন। পাকিস্তানি হানাদাররা এদেশে নির্মম ধ্বংসযজ্ঞ চালায়। গ্রাম-গঞ্জ, বাজার-ঘাট আগুনে পুড়িয়ে দেয়। অসংখ্য নিরপরাধ মানুষকে হত্যা করে। প্রাণে বাঁচতে অনেক মানুষ ভিটেমাটি ছেড়ে পালায়। দেশান্তরি হতে বাধ্য হয় অনেকে।
উদ্দীপকে উল্লেখ করা হয়েছে ইমদাদুল হক মিলন রচিত ‘উনিশ শ একাত্তর’ গল্পের কথা। হানাদারবাহিনীর অত্যাচারে মানুষের বাড়িঘর ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানের কথা বলা হয়েছে তাতে। নিষ্পাপ কিশোর দীনুকে বিনা কারণে হত্যা করে হৃদয়হীন পাকসেনা। এ দেশের মানুষদের ওপর বর্বর অত্যাচারের নমুনা রয়েছে উদ্দীপক ও ‘কাকতাড়ুয়া’ উপন্যাসে।
ঘ. উদ্দীপকের দীনু ‘কাকতাড়ুয়া’ উপন্যাসের ‘বুধা’ চরিত্রকে আংশিকভাবে ধারণ করেছে।
সেলিনা হোসেন রচিত ‘কাকতাড়ুয়া’ উপন্যাসের কেন্দ্রীয় চরিত্র বুধা। অনাথ বুধার জীবন ছন্নছাড়া। আচার আচরণ অসংলগ্ন। তবে আশপাশের সবকিছুতেই তার সজাগ দৃষ্টি। একসময় দুর্দান্ত বুদ্ধিমত্তা ও সাহসিকতার কারণে বুধা হয়ে ওঠে মুক্তিসংগ্রামের অসামান্য এক যোদ্ধা।
উদ্দীপকে বর্ণিত গল্পের দীনু দুঃখী এক কিশোর। আপন বলতে কেউ নেই তার। পাকবাহিনীর ভয়ে গ্রাম মানুষশূন্য হয়ে গেলেও রয়ে যায় দীনু। তার বুকের ভেতর রয়েছে স্বাধীন দেশের স্বপ্ন। কিন্তু সে স্বপ্ন সত্যি হওয়ার আগেই হানাদারের গুলি কেড়ে নেয় দীনুর জীবন। ‘কাকতাড়ুয়া’ উপন্যাসের বুধার সাথে বিভিন্ন দিক থেকে মিল থাকলেও মুক্তিযুদ্ধে প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণ না থাকা এবং শহিদ হওয়ার বাস্তবতার দিক থেকে উদ্দীপকের দীনু চরিত্রটি অসামঞ্জস্যপূর্ণ।
উদ্দীপকের দীনু ও ‘কাকতাড়ুয়া’ উপন্যাসের বুধা দুজনেই এতিম কিশোর। দুজনের জীবনই গন্তব্যহীন। তারা দুজনেই পাকবাহিনীর নির্মম অত্যাচার স্বচক্ষে দেখেছে। গ্রামের মানুষেরা প্রাণভয়ে গ্রাম ছাড়লেও তারা ছাড়েনি। উপন্যাসের বুধা শত্রুদের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়েছে। দেশপ্রেমের প্রেরণায় সে জ্বালিয়ে দেয় রাজাকারের ঘর। পাকিস্তানিদের ক্যাম্প ধ্বংসে মুখ্য ভূমিকা পালন করে। মুক্তির চেতনা ছিল দীনুর মনেও। কিন্তু বুধার ক্ষেত্রে তার কর্মকাণ্ডে যেভাবে প্রকাশ পেয়েছে দীনুর ক্ষেত্রে তেমনটির উল্লেখ নেই। আবার দীনু পাকিস্তানি সৈনিকের নির্মমতার বলি হয়ে শহিদ হলেও বুধাকে এমন করুণ পরিণতি বরণ করতে হয়নি। উদ্দীপকের দীনুকে ‘কাকতাড়ুয়া’ উপন্যাসের বুধার সাথে তাই কিছু দিক থেকে তুলনা করা গেলেও দীনু বুধার শতভাগ প্রতিনিধি নয়।
৯ম-১০ম শ্রেণিরবাংলা ১ম পত্র গাইডকাকতাড়ুয়াউপন্যাসসৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তরSSC Bangla 1st PaperKaktaruaUponnashSrijonshilQuestion-Answer১১নং সৃজনশীল প্রশ্নঃ
নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং সৃজনশীল প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও।
প্রখ্যাত শিল্পী কামরুল হাসান জানোয়ারের ভয়ংকর মুখ এঁকেছিলেন। যেটা ছিল তদানীন্তন পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়ার মুখ। দেশ-বিদেশে যে মুখটা নিন্দিত হয়েছিল ঘৃণায়। এর পাশাপাশি তিনি অকুতোভয় দুর্দান্ত মুক্তিযোদ্ধাদের ছবিও এঁকেছিলেন- হাস্যোজ্জ্বল মুক্তিযোদ্ধার ছবি। যা দেশে দেশে প্রশংসার আলোড়ন তুলেছিল। এ ছবি সাহসী মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি সকৃতজ্ঞ ভালোবাসার।
ক. বুধার চাচাতো ভাই-বোন কতজন? ১
খ. চাচি বলল, “তাহলে তুই আমাকে মুক্তি দিবি”? এখানে কোন মুক্তির কথা বলা হয়েছে? ২
গ. উদ্দীপকটি “কাকতাড়ুয়া” উপন্যাসের কোন বিশেষ দিকটি ইঙ্গিত করে? ব্যাখ্যা করো। ৩
ঘ. “এ ছবি সাহসী মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি সকৃতজ্ঞ ভালোবাসার”। ‘কাকতাড়ুয়া’ উপন্যাসের আলোকে মূল্যায়ন করো। ৪
১১ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তরঃ
ক. বুধার চাচাতো ভাইবোন আটজন।
খ. আলোচ্য উক্তিতে অর্থনৈতিক মুক্তির কথা বলা হয়েছে।
একই রাতে বাবা-মাসহ পরিবারের সবাইকে হারিয়ে বুধার আশ্রয় হয় চাচার সংসারে। সেই ঘরে রয়েছে আরো আটটি ছেলেমেয়ে। বুধার রোজগারহীন দরিদ্র চাচা বিশাল পরিবারের অন্ন সংস্থান করতে গিয়ে হিমশিম খান। তাই চাচির কাছে বুধা সংসারে একটি বোঝা হিসেবে পরিগণিত হয়। তাই বুধা যখন বলে সে চাচির পরিবারের ভার আর বাড়াবে না, আত্মনির্ভরশীল হবে তখন তার চাচি যেন মুক্তি পান। হতদরিদ্র সংসারে একজন সদস্য কমে যাওয়ায় অর্থনৈতিক চাপ থেকে কিছুটা মুক্তি পাওয়ার অনুভূতি প্রকাশিত হয়েছে উক্তিটিতে।
গ. উদ্দীপকটি ‘কাকতাড়ুয়া’ উপন্যাসে বর্ণিত শিল্পী শাহাবুদ্দিনের যুদ্ধে অংশগ্রহণের ইঙ্গিত বহন করে।
বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী এদেশের নিরীহ মানুষের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। বাংলার সংগ্রামী জনতা পাকিস্তানিদের এই বর্বরতার প্রতিবাদ জানায়। তারা পাক হানাদারদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে। বাংলার কৃষক, শ্রমিক, শিল্পী-বুদ্ধিজীবী সবাই নিজ নিজ অবস্থান থেকে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। ‘কাকতাড়ুয়া’ উপন্যাসে বর্ণিত শাহাবুদ্দিন বাংলার এই সংগ্রামী মানুষদের প্রতিনিধি। তিনি একজন চিত্রশিল্পী হয়েও সশস্ত্র যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন।
উদ্দীপকে শাহাবুদ্দিনের মতো, চিত্রশিল্পী কামরুল হাসান মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন। তিনি তাঁর শিল্পকর্মের মাধ্যমে পাকিস্তানি হানাদারদের মুখোশ উন্মোচন করেন। ফলে তা পরোক্ষভাবে মুক্তিযুদ্ধে প্রেরণা জাগায়। ‘কাকতাড়ুয়া’ উপন্যাসে শাহাবুদ্দিন উদ্দীপকের কামরুল হাসানের মতোই একজন চিত্রশিল্পী ছিলেন। তিনি যেমন পাকিস্তানি বর্বরতার প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন অস্ত্র ধরে তেমনি উদ্দীপকের শিল্পী প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন তুলির আঁচড়ে। ফলে উদ্দেশ্যগত দিক থেকে তাদের মিল ফুটে ওঠে।
ঘ. ‘কাকতাড়ুয়া’ উপন্যাসের আলোকে বলা যায়, উদ্দীপকের সাহসী মুক্তিযোদ্ধার ছবিটি দেশে দেশে আলোড়ন তুলেছিল মানুষ মুক্তিযোদ্ধাদের ভালোবেসেছিল বলে।
বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধারা তাদের জীবনের তোয়াক্কা না করে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। অনেকে জীবন দিয়ে শহিদ হয়েছিলেন আবার কেউ কেউ পঙ্গু হয়েছিলেন। এদেশের আপামর জনতা তাদের প্রতি চিরকৃতজ্ঞ। কেননা তারা পাকিস্তানি হানাদারদের এদেশ থেকে বিতাড়িত করে ছিনিয়ে এনেছিল স্বাধীনতার সূর্য। এজন্য এদেশের শিল্পী-সাহিত্যিকরা তাদের শিল্পকর্মে পরম মমতায় ফুটিয়ে তুলেছেন মুক্তিযোদ্ধাদের। ‘কাকতাড়ুয়া’ উপন্যাসে এই মুক্তিযোদ্ধাদের বীরত্বের কথাই বিবৃত হয়েছে।
উদ্দীপকে শিল্পী কামরুল হাসানের সৃষ্ট হাস্যোজ্জ্বল মুক্তিযোদ্ধার চিত্রটি বাংলার মুক্তিযোদ্ধাদের বীরত্বের স্বাক্ষর বহন করে। মুক্তিযোদ্ধারা দেশমাতৃকার স্বাধীনতার জন্য নিজেদের জীবন বিলিয়ে দিতেও কুণ্ঠাবোধ করেননি। তাদের অপরিসীম সাহসিকতায় বাংলার মানুষ দেখেছিল স্বাধীনতার স্বপ্ন। মুক্তিযোদ্ধাদের এরূপ বীরত্বের কারণে বাংলার জনগণ তাদের হৃদয় দিয়ে ভালোবেসেছিল। উদ্দীপকের হাস্যোজ্জ্বল মুক্তিযোদ্ধার ছবিটি তাই আলোড়ন তুলেছিল।
‘কাকতাড়ুয়া’ উপন্যাসে মুক্তিযোদ্ধাদের এই বীরত্বগাথা সুনিপুণ দক্ষতায় ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। সেখানে মুক্তিযোদ্ধা শাহাবুদ্দিন বুধার বীরত্বে মুগ্ধ হন। তিনি তাকে ভালোবেসে বিভিন্ন নামে ডাকেন। মনে মনে ভাবেন এই ভালোবাসার মানুষটির নানা রকম ছবি আঁকবেন যুদ্ধের পর। উদ্দীপকেও হাস্যোজ্জ্বল মুক্তিযোদ্ধার ছবিও একই রকম ভালোবাসার প্রকাশক। ‘কাকতাড়ুয়া’ উপন্যাসে বুধাকে যেমন দেশের সাধারণ মানুষ ভালোবেসেছিল তেমনি তার বীরত্বে সকলে মুগ্ধও হয়েছিল। শাহাবুদ্দিন যে কারণে ভালোবাসা ও কৃতজ্ঞতায় বুধার ছবি আঁকার ইচ্ছা পোষণ করেছিলেন উদ্দীপকের শিল্পী সেই একই কারণে ছবি এঁকেছেন। তাই বলা যায়, উদ্দীপকের হাস্যোজ্জ্বল মুক্তিযোদ্ধার ছবি সাহসী মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি সকৃতজ্ঞ ভালোবাসার।
৯ম-১০ম শ্রেণিরবাংলা ১ম পত্র গাইডকাকতাড়ুয়াউপন্যাসসৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তরSSC Bangla 1st PaperKaktaruaUponnashSrijonshilQuestion-Answer১২নং সৃজনশীল প্রশ্নঃ
নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং সৃজনশীল প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও।
রোজানা ও তার পরিবার সাভারে বাস করে। রোজানা মায়ের সাথে বেড়াতে গিয়ে সাভারের স্মৃতিসৌধ দেখে অবাক হয়। সে মায়ের কাছে এই স্মৃতির মিনার সম্পর্কে জানতে চায়। মা তাকে বলে, মুক্তিযুদ্ধের শহিদদের স্মরণে এই স্মৃতিসৌধটি নির্মিত হয়েছে। স্মৃতিসৌধ তরুণ প্রজন্মের কাছে মুক্তিযুদ্ধের প্রামাণ্য দলিল হয়ে দাঁড়িয়ে আছে।
ক. বুধা কার কাছে গণকবর সম্পর্কে জানতে চেয়েছিল? ১
খ. বুধাকে ‘সাহসী বালক’ বলা হয়েছে কেন? ২
গ. উদ্দীপকের স্মৃতিসৌধ ‘কাকতাড়ুয়া’ উপন্যাসের কোন স্মৃতি মনে করিয়ে দেয়? ব্যাখ্যা করো। ৩
ঘ. উদ্দীপকের ‘স্মৃতিসৌধ’ ও উপন্যাসের ‘কাকতাড়ুয়া’ উভয়ই মুক্তিযুদ্ধের প্রামাণ্য দলিল। মূল্যায়ন করো। ৪
১২ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তরঃ
ক. বুধা হাবিব ভাইয়ের কাছে গণকবর সম্পর্কে জানতে চেয়েছিল।
খ. কোনো কিছুর ভয়েই বুধা কাবু হয় না বলে বুধাকে ‘সাহসী বালক’ বলা হয়েছে।
খুব ছোটবেলায় পরিবারের সবাইকে হারিয়ে অন্য রকম হয়ে যায় বুধা। চোখের সামনে এতগুলো মানুষ একে একে চলে যাওয়ার দৃশ্য তার মন থেকে সমস্ত ভয় কেড়ে নেয়। তাই সে কাউকে অকারণে ভয় পায় না। দৃঢ়ভাবে অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে জানে। এ কারণেই তাকে সাহসী বলা হয়েছে।
গ. উদ্দীপকের স্মৃতিসৌধ ‘কাকতাড়ুয়া’ উপন্যাসে বর্ণিত পাকিস্তানি হানাদারদের গণহত্যার স্মৃতি মনে করিয়ে দেয়।
পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী এদেশের সাধারণ মানুষের ওপর বর্বর নৃশংসতা চালায়। তারা এদেশের মানুষের ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেয়। গুলি করে হত্যা করে অসংখ্য মানুষকে। তাদের বর্বরতার হাত থেকে ছাত্র-শিক্ষক, বৃদ্ধ-যুবা কেউই রেহাই পায় না। ‘কাকতাড়ুয়া’ উপন্যাসে পাকিস্তানি বাহিনীর এই বর্বরতার চিত্র ফুটে উঠেছে।
উদ্দীপকে রোজানা তার পরিবারের সাথে পাকহানাদারদের নৃশংসতার স্বাক্ষর বহনকারী স্মৃতিসৌধে বেড়াতে গিয়েছে। এই স্মৃতিসৌধ বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানি হানাদারদের নৃশংস গণহত্যার শিকার শহিদদের স্মরণে নির্মিত। এই গণহত্যার নিদর্শন ‘কাকতাড়ুয়া’ উপন্যাসের মধ্যেও পরিলক্ষিত হয়। সেখানে পাকিস্তানি মিলিটারি বাহিনী বুধার এলাকায় গুলি করে অনেককে হত্যা করে। মুক্তিযুদ্ধের সময় এই শহিদদের স্মরণেই নির্মিত হয় উদ্দীপকের স্মৃতিসৌধ। তাই বলা যায়, উদ্দীপকের স্মৃতিসৌধ ‘কাকতাড়ুয়া’ উপন্যাসের গণহত্যার স্মৃতি মনে করিয়ে দেয়।
ঘ. উদ্দীপকের স্মৃতিসৌধের মতো উপন্যাসের কাকতাড়ুয়া মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিতে নির্মিত হওয়ায় উভয়ই মুক্তিযুদ্ধের প্রামাণ্য দলিল।
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ একটি গৌরবময় ঘটনা। এই যুদ্ধে বাংলার মুক্তিকামী জনগণ পাকিস্তানি হানাদারদের কাছ থেকে ছিনিয়ে এনেছিল স্বাধীনতার সূর্য। লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে অর্জিত এই স্বাধীনতার স্মরণে এদেশে নির্মিত হয়েছে অনেক স্মৃতিস্তম্ভ। ‘কাকতাড়ুয়া’ উপন্যাসের কাকতাড়ুয়া তেমনই একটি স্মৃতির মিনার।
উদ্দীপকে উল্লিখিত স্মৃতিসৌধ বাঙালির গৌরবময় স্মৃতির স্বাক্ষর বহন করে। মহান মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী যে বর্বর গণহত্যা চালিয়েছিল তাতে নিহত শহিদদের স্মরণে নির্মিত হয়। রোজানার দেখা স্মৃতিসৌধ। ফলে এই স্মৃতিসৌধ মুক্তিযুদ্ধের প্রামাণ্য দলিল।
‘কাকতাড়ুয়া’ উপন্যাসের কাকতাড়ুয়া হলো বাংলাদেশ থেকে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী বিতাড়নের প্রতীক। অর্থাৎ ফসলের ক্ষেত থেকে যেমন ক্ষতিকর জীবজন্তু তাড়াতে কাকতাড়ুয়া লাগানো হয় তেমনি বাংলাদেশ থেকে পাকিস্তানি হায়েনাদের বিতাড়নে এই কাকতাড়ুয়া প্রতীক হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে। বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধে অনেক বীর বাঙালি জীবন দিয়ে অমর হয়ে আছেন। তাদের স্মৃতি রক্ষায় নির্মিত হয় স্মৃতিসৌধ। অর্থাৎ উদ্দীপকে স্মৃতিসৌধ মুক্তিযুদ্ধের দলিল। এমনিভাবে ‘কাকতাড়ুয়া’ উপন্যাসেও পাকিস্তানি বাহিনীকে বিতাড়নের জন্য প্রতীকী হিসেবে কাকতাড়ুয়া ব্যবহার করা হয়। ফলে এটিও মুক্তিযুদ্ধের দলিল। তাই বলা যায়, প্রশ্নোক্ত উক্তিটি যথার্থ।
৯ম-১০ম শ্রেণিরবাংলা ১ম পত্র গাইডকাকতাড়ুয়াউপন্যাসসৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তরSSC Bangla 1st PaperKaktaruaUponnashSrijonshilQuestion-Answer১৩নং সৃজনশীল প্রশ্নঃ
নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং সৃজনশীল প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও।
ফুলবাড়ি গ্রামের জনগণ জমির উদ্দীনের অত্যাচারে সবসময় আতঙ্কে দিন যাপন করত। এমনকি গ্রামের সালিস বিচারও তার হুকুমে চলত। কেউ প্রতিবাদ করলে তার ওপর অমানুষিক নির্যাতন নেমে আসত। কিশোর রাসেল এই বর্বরতার দৃশ্য দেখে একসময় প্রতিবাদী হয়ে ওঠে। গ্রামবাসীদের সহযোগিতার জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সে জনমত গড়ে তোলে। তার একটাই প্রতিজ্ঞা, গ্রামবাসীকে এ অত্যাচার থেকে রক্ষা করবে।
ক. শান্তি কমিটির চেয়ারম্যান কে? ১
খ. ‘আধা-পোড়া বাজারটার দিকে তাকিয়ে ওর চোখ লাল হতে থাকে’- কেন? ২
গ. উদ্দীপকে বর্ণিত কাহিনি ‘কাকতাড়ুয়া’ উপন্যাসের যে বিশেষ দিকটি ইঙ্গিত করে তা ব্যাখ্যা করো। ৩
ঘ. উদ্দীপকের কিশোর রাসেলের মনোভাবই যেন ‘কাকতাড়ুয়া’ উপন্যাসের মূল বক্তব্য - যুক্তিসহ প্রমাণ করো। ৪
১৩ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তরঃ
ক. শান্তি কমিটির চেয়ারম্যানের নাম আহাদ মুন্সি।
খ. ১ নং সৃজনশীল প্রশ্নের (খ) এর উত্তর দেখো।
গ. উদ্দীপকে বর্ণিত কাহিনি ‘কাকতাড়ুয়া’ উপন্যাসে উল্লিখিত পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর অত্যাচার এবং তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদী মনোভাবের দিকটিকে ইঙ্গিত করে।
বাঙালিরা মহান মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানি হানাদারদের বিরুদ্ধে অস্ত্রধারণ করে দেশ স্বাধীন করেছে। সেসময় পাকিস্তানি হানাদাররা এদেশের সাধারণ মানুষের ওপর বর্বর অত্যাচার চালিয়েছিল। সেই অত্যাচারের বিরুদ্ধে বাঙালিরা প্রতিবাদী হয়েছিল। ‘কাকতাড়ুয়া’ উপন্যাসে মুক্তিযুদ্ধের উক্ত দিকগুলো তুলে ধরা হয়েছে।
উদ্দীপকে ফুলবাড়ি গ্রামে জমির উদ্দিনের অত্যাচার এবং তার বিরুদ্ধে কিশোর রাসেলের প্রতিবাদী মনোভাব বর্ণিত হয়েছে। এটি ‘কাকতাড়ুয়া’ উপন্যাসের পাকিস্তানি বাহিনীর অত্যাচার এবং বুধা ও অন্যদের প্রতিবাদের কাহিনির সাথে সাযুজ্যপূর্ণ। উপন্যাসে পাকিস্তানিদের অত্যাচারে বুধার এলাকার মানুষ জর্জরিত হয়। এই অত্যাচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী চরিত্র বুধা। উদ্দীপকের জমির উদ্দিন পাকিস্তানিদের প্রতীক এবং রাসেল বুধার প্রতীক। তাই বলা যায়, উদ্দীপকে বর্ণিত কাহিনির মধ্যে পাকিস্তানিদের অত্যাচার এবং তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদের ইঙ্গিত রয়েছে।
ঘ. ‘কাকতাড়ুয়া’ উপন্যাসে অত্যাচারীর বিরুদ্ধে প্রতিরোধের যে চিত্র অঙ্কিত হয়েছে তা উদ্দীপকের রাসেলের মনোভাবে সুস্পষ্ট হয়ে ওঠে।
‘কাকতাড়ুয়া’ উপন্যাসে অত্যাচারীর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ এবং প্রতিশোধ গ্রহণের ভাবনার প্রকাশ ঘটেছে। অন্যায়কারী যেই হোক তার প্রতিবাদ করা উচিত। অত্যাচারীর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়ে অন্যায়ের প্রতিবাদ করা প্রয়োজন। আর উপন্যাসের মধ্যে সুনিপুণভাবে সেই ভাবনার প্রতিফলন ঘটিয়েছেন ঔপন্যাসিক ।
উদ্দীপকে রাসেলের মাঝে প্রতিবাদী চেতনার বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে। সে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অন্যায়ের প্রতিবাদ করার জন্য দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। গ্রামবাসীকে রক্ষা করার জন্য রাসেল অত্যাচারীর বিরুদ্ধে দাঁড়ায়। সে নিজের জীবনের মৃত্যুঝুঁকি থাকা সত্ত্বেও গ্রামবাসীকে ঐক্যবদ্ধ করার চেষ্টা করে। অন্যায়কে কোনোভাবেই মেনে না নেওয়ার এই মানসিকতা উদ্দীপকের রাসেলকে অনবদ্য করে তুলেছে।
‘কাকতাড়ুয়া’ উপন্যাসের মূল উপজীব্য পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর অত্যাচার এবং তার বিপরীতে বুধা এবং মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতিবাদী চরিত্র হিসেবে উপস্থাপন করা অন্যায়ের প্রতিবাদের ধারণাকে কেন্দ্র করেই ‘কাকতাড়ুয়া’ উপন্যাসটি আবর্তিত হয়েছে। আর উদ্দীপকে রাসেলের মনোভাব এই প্রতিবাদী মানসিকতাকেই ধারণ করেছে। রাসেল যেমন এলাকায় জমির উদ্দীনের অত্যাচার মেনে নিতে পারেনি, উপন্যাসের বুধাও তেমনি পাকিস্তানিদের অত্যাচার মেনে নিতে পারেনি। তাই বলা যায়, উদ্দীপকের কিশোর রাসেলের মনোভাবই যেন ‘কাকতাড়ুয়া’ উপন্যাসের মূল বক্তব্য।
৯ম-১০ম শ্রেণিরবাংলা ১ম পত্র গাইডকাকতাড়ুয়াউপন্যাসসৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তরSSC Bangla 1st PaperKaktaruaUponnashSrijonshilQuestion-Answer১৪নং সৃজনশীল প্রশ্নঃ
নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং সৃজনশীল প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও।
সাকিব পিতামাতাকে হারিয়ে চাচির সংসারে বেড়ে ওঠেন। অভাবের সংসারে চাচি তাকে বোঝা মনে করলে, সাকিব তখন আত্মকর্মসংস্থানের লক্ষ্যে উপজেলা যুব অধিদপ্তরের অধীনে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন এবং একজন সফল নার্সারি মালিক হিসেবে সাফল্য অর্জন করেন।
ক. কুন্তি কে? ১
খ. বুধার চোখ লাল হয়ে ওঠে কেন? ২
গ. বুধা ও সাকিবের কর্মকাণ্ডে যে অমিল লক্ষ করা যায় তা তুলে ধরো। ৩
ঘ. “উদ্দীপকটি ‘কাকতাড়ুয়া’ উপন্যাসের বুধার চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের আংশিক প্রতিফলন মাত্র”- মন্তব্যটি বিচার করো। ৪
১৪ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তরঃ
ক. কুন্তি বুধার চাচাতো বোন।
খ. কোনো ব্যাপারে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ হলে বুধার চোখ লাল হয়ে ওঠে।
আপাতদৃষ্টিতে বুধাকে মানসিক ভারসাম্যহীন মনে হলেও বুধা মোটেও তা নয়। বরং তার মাঝে রয়েছে প্রবল মানসিক শক্তি। আত্মসম্মানবোধে সে সমুজ্জ্বল। তাই কেউ তাকে অপমান করলে তার আত্মমর্যাদায় আঘাত লাগে। অন্যায়ের বিরুদ্ধে সে ক্ষুব্ধ হয়। এ মুহূর্তগুলোতে সে অপমানের প্রত্যুত্তর দেওয়ার জন্য, অন্যায়ের প্রতিশোধ গ্রহণের জন্য দৃঢ় শপথ গ্রহণ করে। আর তখনই তার চোখ লাল হয়ে যায়।
গ. উদ্দীপকে সাকিব একটি নির্দিষ্ট কাজে আত্মনিয়োগ করলেও ‘কাকতাড়ুয়া’ উপন্যাসে বর্ণিত বুধার ক্ষেত্রে এর ব্যতিক্রম দেখা যায়।
বুধা ‘কাকতাড়ুয়া’ উপন্যাসের কেন্দ্রীয় চরিত্র। বয়স অল্প হলেও আত্মনির্ভরশীল সে। তবে তার কাজকর্মের কোনো ঠিক ঠিকানা নেই। একেক সময় একেক রকম কাজ করে বুধা। কখনো দোকানের কাজ করে, কখনো করে ফসলের মাঠে, কখনোবা মাছ ধরায় সাহায্য করে।
উদ্দীপকের সাকিব নিজের পায়ে দাঁড়ানোর শপথ গ্রহণ করেন। যুব কর্মস্থান সম্পর্কিত প্রতিষ্ঠান থেকে তিনি প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। এপর নার্সারী পেশায় নিয়োজিত হন। তাঁর মতো কোনো নির্দিষ্ট কাজে উপন্যাসের বুধা আটকে থাকে না। সাকিবের মতো সে কোনো বিশেষ প্রশিক্ষণও গ্রহণ করে নি। এসব ক্ষেত্রেই উভয়ের মাঝে অমিল বিদ্যমান।
ঘ. উদ্দীপকের সাকিব ‘কাকতাড়ুয়া’ উপন্যাসের বুধা চরিত্রের একটি খণ্ডরূপকে ধারণ করে।
‘কাকতাড়ুয়া’ উপন্যাসের কেন্দ্রীয় চরিত্র বুধা অসীম সাহস আর মানবিক গুণাবলির অধিকারী। দেশের মানুষের প্রতি মমত্ববোধ, বিদেশি মিলিটারির প্রতি ঘৃণা এবং দেশাত্মবোধ তার চরিত্রের প্রধান বৈশিষ্ট্য। আত্মমর্যাদাবোধসম্পন্ন বুধা গ্রামের সবার কাছে ভালোবাসার পাত্র হয়ে ওঠে।
উদ্দীপকের সাকিব আত্মমর্যাদাবোধে উজ্জ্বল একটি চরিত্র। সে চাচির সংসারে থেকে মানুষ হলেও চাচির বিরক্তিতে নিজের আত্মসম্মানে আঘাত পান। এ কারণেই তিনি উপজেলা যুব অধিদপ্তরে প্রশিক্ষণ নেন নিজের পায়ে দাঁড়ানোর জন্য। এতে তিনি নিজের আত্মসম্মান ঠিক রাখতে পেরেছেন। উদ্দীপকে সাকিবের এই আত্মমর্যাদাবোধের দিকটিকেই তুলে ধরা হয়েছে।
উদ্দীপকের সাকিবের মাঝে ‘কাকতাড়ুয়া’ উপন্যাসের বুধা চরিত্রের সামগ্রিক দিক ফুটে ওঠেনি। বুধার মাঝে যে দেশাত্মবোধ আর গ্রামের মানুষের প্রতি ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে উদ্দীপকের সাকিবের মাঝে তা লক্ষ করা যায় না। বুধা অসীম সাহসিকতার পরিচয় দিলেও সাকিবের ক্ষেত্রে তা অনুপস্থিত। শুধু চাচির বিরক্তিতে নিজের আত্মমর্যাদাবোধের দিকটি ঠিক রাখার ক্ষেত্রেই বুধা এবং সাকিব চরিত্রটি এক মনে হয়। বুধার মাঝে সাহসিকতা, মমত্ববোধ, ভালোবাসা, আত্মমর্যাদাবোধ, দেশাত্ববোধ প্রভৃতি গুণের সমন্বয় ঘটলেও উদ্দীপকের সবুজের মাঝে শুধু আত্মমর্যাদাবোধের দিকটিই প্রস্ফুটিত হয়েছে। ফলে সাকিব বুধা চরিত্রটির সামগ্রিক দিককে ধারণ করতে পারেনি।
৯ম-১০ম শ্রেণিরবাংলা ১ম পত্র গাইডকাকতাড়ুয়াউপন্যাসসৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তরSSC Bangla 1st PaperKaktaruaUponnashSrijonshilQuestion-Answer১৫নং সৃজনশীল প্রশ্নঃ
নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং সৃজনশীল প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও।
আমেরিকায় পড়াশোনার জন্য যাওয়ার সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন রুমীর। কিন্তু বেঁকে বসল সে। দেশকে শত্রুর কবল থেকে রক্ষা করার জন্য সাধারণ মেধাবী আর সাহসী রুমী মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। পিতামাতার শত আপত্তি উপেক্ষা করে অবশেষে গেরিলা যোদ্ধা হিসেবে দুই নম্বর সেক্টরে যোগ দেয়। একের পর এক আক্রমণে পাকসেনাদের অতিষ্ঠ করে তোলে। একপর্যায়ে তাদের হাতে বন্দি হয় সে। প্রাণভিক্ষা চেয়ে শত্রুর কাছে মার্সি পিটিশন করা পছন্দ করল না সে। শেষ পর্যন্ত রুমী শহিদ হয়।
ক. শান্তি কমিটির চেয়ারম্যান কে ছিল? ১
খ. “লোহার টুপি ওদের মগজ খেয়েছে”- ব্যাখ্যা করো। ২
গ. উদ্দীপকের রুমীর সাথে ‘কাকতাড়ুয়া’ উপন্যাসের বুধা চরিত্রের মিল ব্যাখ্যা করো। ৩
ঘ. “মিল থাকলেও কিছু ক্ষেত্রে অমিলও রয়েছে”- মন্তব্যটি বিশ্লেষণ করো। ৩
১৫ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তরঃ
ক. শান্তি কমিটির চেয়ারম্যান ছিল আহাদ মুন্সি।
খ. পাকিস্তানি সেনাদের বিবেকহীনতার কথা বলা হয়েছে আলোচ্য উক্তিটিতে।
আপাতদৃষ্টিতে মানসিক ভারসাম্যহীন মনে হলেও বুধা আসলে গভীর অনুভূতিপ্রবণ এক কিশোর। পাকিস্তানি সৈন্যরা যে দায়িত্বের খাতিরে নিজেদের বিচার-বুদ্ধি, বিবেচনাবোধ বিসর্জন দিয়েছে সেটি যে বুঝতে পারে। লোহার টুপি মাথায় দেওয়া অর্থাৎ হুকুম তামিলের জন্য প্রস্তুত হওয়ার পর থেকে তাদের মাঝে আর মনুষ্যত্ববোধ অবশিষ্ট থাকে না। এ কারণেই বুধা বলেছে যে লোহার টুপি ওদের মগজ খেয়েছে।
গ. দেশাত্মবোধে উদ্বুদ্ধ হয়ে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণের দিক থেকে উদ্দীপকের রুমীর সাথে ‘কাকতাড়ুয়া’ উপন্যাসের বুধার মিল পরিলক্ষিত হয়।
বুধা ‘কাকতাড়ুয়া’ উপন্যাসের কেন্দ্রীয় চরিত্র। সে অসীম সাহস আর মানবিক গুণাবলির সমন্বয়ে গঠিত একটি দেশপ্রেমী চরিত্র। দেশের মানুষের মক্তির জন্য সে গেরিলা যুদ্ধে অংশগ্রহণ করে। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর প্রতি তীব্র ঘৃণায় সে তাদের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ গ্রহণের সংকল্প করে।
উদ্দীপকের রুমী ‘কাকতাড়ুয়া’ উপন্যাসের বুধার মতোই দেশপ্রেমী। সে দেশের জন্য অসীম সাহসিকতা নিয়ে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করে। রুমীর এই দিকটি ‘কাকতাড়ুয়া’ উপন্যাসের বুধার মাঝে সমানভাবে প্রস্ফুটিত হয়েছে। বুধার সাহসিকতা, দেশপ্রেম এবং যুদ্ধে অংশগ্রহণের দিকটি উদ্দীপকের রুমীর ক্ষেত্রে স্পষ্টভাবে প্রতীয়মান। তাই বলা যায়, উদ্দীপকের রুমী এবং উপন্যাসের বুধা দেশপ্রেমের দিক থেকে একই সুতোয় গাঁথা।
ঘ. দেশপ্রেমের ক্ষেত্রে উদ্দীপকের রুমীর সাথে বুধার মিল থাকলেও পরিণতি বিচারে তাদের অমিল রয়েছে।
বুধা একজন সাহসী ও দেশপ্রেমিক চরিত্র। সে নিজের জীবন বাজি রেখে শত্রুসেনার কবল থেকে দেশকে রক্ষার জন্য ঝাঁপিয়ে পড়ে। গাঁয়ের লোক পাগল বললেও বুধা একজন সাহসী বালক। সে বাবা-মা হারা এতিম হওয়ায় তার কোনো নির্দিষ্ট ঠিকানা ছিল না। যেখানে সেখানে রাত কাটিয়েও সে অসীম সাহসিকতায় পাকিস্তানি মিলিটারি ক্যাম্প উড়িয়ে দেয়।
উদ্দীপকে বর্ণিত রুমী এক মহান দেশপ্রেমিক। নিজের সুন্দর ভবিষ্যতের চেয়ে দেশের মুক্তির ভাবনা তার কছে বেশি প্রধান্য পেয়েছে। তাই আমেরিকায় যাওয়ার বাসনা ত্যাগ করে সে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেয়। তার বীরত্বপূর্ণ ভূমিকায় দিশেহারা হয়ে যায় শত্রুসেনারা। ‘কাকতাড়ুয়া’ উপন্যাসের বুধাও একইবাবে মুক্তিযুদ্ধ অংশ নিয়ে সাহসিকতা প্রদর্শন করে। কিন্তু উভয়ের পরিণতি ও জীবনপদ্ধতিতে অনেক অমিল লক্ষ করা যায়।
উদ্দীপকের রুমী অসীম সাহসিকতা নিয়ে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়ে শহিদ হয়। রুমীর সাথে চেতনাগত দিক থেকে মিল থাকলেও জীবনাচরণ এবং পরিণতির দিক থেকে বুধার অমিল ফুটে ওঠে। বুধা তার অপারেশনে সফল হলেও উদ্দীপকের রুমী পাক হানাদারদের হাতে ধরা পড়ে এবং শহিদ হয়। তাছাড়া রুমী শিক্ষিত এবং মেধাবী যুবক হলেও ‘কাকতাড়ুয়া’ উপন্যাসের বুধা ছিল এতিম এবং উদ্বাস্তু। বুধা পাকিস্তানি বাহিনীর ক্যাম্প উড়িয়ে দিয়ে সফলভাবে নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে পারলেও রুমী তা পারেনি। আবার বুধা যে ধরনের জীবনযাপন করে রুমী তার উল্টো। ফলে দেশপ্রেমের ক্ষেত্রে মিল থাকলেও জীবনাচরণে ও পরিণতিতে তাদের তফাৎ রয়েছে। তাই প্রশ্নোক্ত মন্তব্যটি যথার্থ।
৯ম-১০ম শ্রেণিরবাংলা ১ম পত্র গাইডকাকতাড়ুয়াউপন্যাসসৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তরSSC Bangla 1st PaperKaktaruaUponnashSrijonshilQuestion-Answer১৬নং সৃজনশীল প্রশ্নঃ
নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং সৃজনশীল প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও।
মা মরা ছেলে রতন ও মেয়ে ময়নাকে নিয়ে ছমির মাস্টারের সংসার। গাঁয়ের মোড়লের নজর পড়ে ময়নার ওপর। বিয়ের প্রস্তাব দেয়। কিন্তু মাস্টার তাতে রাজি হয় না। এত রাতে ছেলে রতনকে নিয়ে গঞ্জ থেকে ফেরার পথে মোড়লের লোকজন মাস্টারের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। বাধা দিতে গেলে রতনকেও বেদম প্রহার করে। পরদিন সকালে উঠানে শায়িত বাবা ও ভাইয়ের লাশ দেখে ময়না বাকশক্তিহারা হয়ে পড়ে।
ক. গাঁয়ের লোকে বুধার কী নাম দিয়েছে? ১
খ. বুধার চোখ লাল হয়ে যায় কেন? ২
গ. “উদ্দীপকের ময়না এবং বুধার পরিণতি একই”-ব্যাখ্যা করো। ৩
ঘ. “পরিণতি এক হলেও প্রেক্ষাপট ভিন্ন”- মন্তব্যটি বিশ্লেষণ করো। ৪
১৬ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তরঃ
ক. গাঁয়ের লোকে বুধার নাম দিয়েছে কাকতাড়ুয়া।
খ. ১৪ নং সৃজনশীল প্রশ্নের খ. নং দেখো।
গ. আপনজন হারিয়ে বিপর্যস্ত হওয়ার দিক থেকে উদ্দীপকের ময়না এবং ‘কাকতাড়ুয়া’ উপন্যাসের বুধা একই পরিণতি বরণ করেছে।
‘কাকতাড়ুয়া’ উপন্যাসের বুধা একটি এতিম কিশোর। সে বাবা-মা, ভাই-বোন হারিয়ে নিঃস্ব। তার থাকার কোনো নির্দিষ্ট জায়গা নেই। খাবার পাওয়ার কোনো নিশ্চয়তা নেই। গ্রামের রাস্তাঘাটই তার ঠিকানা। সে বাবা-মা, ভাই-বোনকে হারিয়েছে কলেরা রোগের আক্রমণে। তার আপনজন বলতে কেউ আর থাকে না। থাকলে সমবেদনা জানালেও সে হয়ে পড়ে এতিম।
উদ্দীপকের ময়নাকেও বুধার মতো একই পরিণতি বরণ করতে হয়। ময়না তার পরিবার পরিজন হারিয়ে নিঃস্ব হয়। ‘কাকতাড়ুয়া’ উপন্যাসে বুধা যেমন পরিবারের সবাইকে হারিয়ে এতিম হয়েছে উদ্দীপকের ময়নাও তেমনি এতিম হয়েছে। অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে যাত্রা তাদের দুজনেরই। তাই বলা যায়, উদ্দীপকের ময়না এবং বুধার পরিণতি একই।
ঘ. উদ্দীপকের ময়নার এতিম হওয়া এবং ‘কাকতাড়ুয়া’ উপন্যাসের বুধার এতিম হওয়ার কারণ আলাদা।
‘কাকতাড়ুয়া’ উপন্যাসের প্রধান চরিত্র বুধা পরিবার-পরিজন হারিয়ে এতিম হয়েছে কলেরার প্রকোপে। সে চোখের সামনে বাবা-মা, ভাইবোনদের মরতে দেখেছে। একরাতের কলেরায় বাবা-মা, দুই-বোন শিলু আর বিনু এবং ভাই তালেব মারা যায়। শুধু বুধা ভাগ্যের জোরে বেঁচে যায়। সে বেঁচে গিয়ে অনিশ্চিত ভবিষ্যতের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে।
উদ্দীপকে ময়না বুধার মতো এতিম হলেও তার প্রেক্ষাপট ছিল ভিন্ন। ময়না গ্রামের মোড়লের রোষানলে পড়ে তার বাবা ও ভাইকে হারায়। মোড়ল নিজের স্বার্থসিদ্ধি করতে না পেরে তার লোকজন গিয়ে ময়নার বাবা ও ভাইকে হত্যা করে। ফলে ময়নার জীবন বিপর্যস্ত হয়।
‘কাকতাড়ুয়া’ উপন্যাসের বুধা প্রাকৃতিকভাবে মহামারির প্রকোপে পরিবার-পরিজন হারিয়েছে। অন্যদিকে মানুষের ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড উদ্দীপকের ময়নার জীবনে দুঃসহ যন্ত্রণা সৃষ্টি করে। ফলে দেখা যায় বুধা এবং ময়না উভয়ই এতিম হলেও তার কারণ ছিল ভিন্ন। বুধা কলেরার প্রকোপে পরিবারের লোকদের হারালেও ময়না হারিয়েছে সন্ত্রাসের শিকার হয়ে। তাই বলা যায়, প্রশ্নোক্ত মন্তব্যটি যথার্থ।
nice ❤️🩹
ReplyDeleteThanks for this type of content
ReplyDeleteTnx
ReplyDeleteCarry nice
ReplyDeleteVary tnx
ReplyDelete