বাঙ্গালি জাতির উদ্ভবঃ
ভূতাত্ত্বিক গঠনের দিক দিয়ে বাংলাদেশ নামক ভূখণ্ড গঠিত হয় প্লাইস্টোসিনযুগে (প্রায় ১০-২৫ লক্ষ বছর পূর্বে। এর পরের যুগকে বলা হয় প্লাইস্টোসিন কাল। প্লাইস্টোসিন কালেই (প্রায় ২৫,০০০ বছর পূর্বে) বাংলাদেশে মানুষের আবিভাব ঘটে। বর্তমান বাঙ্গালি জনগোষ্ঠী দীর্ঘকালব্যাপী বহু জাতির সমম্বয়ে গড়ে উঠেছে। সুতরাং বাঙালি জাতির উদ্ভবের ইতিহাসে সমগ্র বাঙালি জনগোষ্ঠকে দু’ভাবে ভাগ করা যায়। যাথ-
ক. প্রাক-আর্য বা অনার্য নরগোষ্ঠী
খ. আর্য নরগোষ্ঠী।
আর্য পূর্ব জনগোষ্ঠী মূলত নেগ্রিটো, অস্ট্রিক, দ্রাবিড়, ভোটচীনীয় এই চার শাখায় বিভক্ত ছিল। অস্ট্রিক গোষ্ঠী থেকে বাঙালি জাতির প্রধান অংশ গড়ে উঠেছে বলে মনে করা হয়। কেউ কেউ তাদের নিষাদ জাতি হিসেবে আখ্যা দেয়। প্রায় ৫-৬ হাজার বছর পূর্বে অস্ট্রিক জাতি ইন্দোচীন থেকে আসাম হয়ে বাংলায় প্রবেশ করে। অষ্ট্রিক জাতির সময়কালে বা কিছু পরে দ্রাবিড় জাতি এ দেশে আসে এবং সভ্যতায় উন্নততর বলে তারা অস্ট্রিক জাতিকে গ্রাস করে।
অস্ট্রিক ও দ্রাবিড় জাতির সংমিশ্রণেই সৃষ্টি হয়েছে আর্য-পূর্ব বাঙালি জনগোষ্ঠী। এদের রক্তধারা বর্তমান বাঙালি জাতির মধ্যে প্রবহমান। এভাবে অন্তত দেড় হাজার বছরের অনুশীলন, গ্রহণ, বর্জন ও রূপান্তরীকরণের মাধ্যমে বাঙালি জাতির উদ্ভব ও বিকাশের ধারাটি বর্তমান জাতিসত্তায় পরিণত হয়েছে। আর এ কারণেই বাঙালি জাতি সংকর জাতি হিসেবে বিবেচিত।
0 Comments:
Post a Comment