এসএসসি পরীক্ষার পূর্ণাঙ্গ প্রস্তুতি
গণিত সমাধান
সৃজনশীল এবং বহুনির্বাচনি প্রশ্ন ও উত্তর
অনুশীলনী: ৬.১
General Math Guide Srijonshil and MCQ for Class 9-10. SSC General Math Solution MCQ and Srijonshil Question and Answer pdf download.
SSC General Math Solution
Exercise-6.1
রেখা, কোণ ও ত্রিভুজ
পাঠ সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়াদি
◈ জ্যামিতি
জ্যামিতি বা ‘Geometry’ গণিত শাস্ত্রের একটি প্রাচীন শাখা। ‘Geometry’ শব্দটি গ্রিক Geo-ভূমি (earth) ও metrein -পরিমাপ (measure) শব্দের সমন্বয়ে তৈরি। তাই ‘জ্যামিতি’ শব্দের অর্থ ‘ভূমি পরিমাপ’। কৃষিভিত্তিক সভ্যতার যুগে ভূমি পরিমাপের প্রয়োজনেই জ্যামিতির সৃষ্টি হয়েছিল। তবে জ্যামিতি আজকাল কেবল ভূমি পরিমাপের জন্যই ব্যবহৃত হয় না, বরং বহু জটিল গাণিতিক সমস্যা সমাধানে জ্যামিতিক জ্ঞান এখন অপরিহার্য। প্রাচীন সভ্যতার নিদর্শনগুলোতে জ্যামিতি চর্চার প্রমাণ পাওয়া যায়। ঐতিহাসিকদের মতে প্রাচীন মিশরে আনুমানিক চার হাজার বছর আগেই ভূমি জরিপের কাজে জ্যামিতিক ধ্যান-ধারণা ব্যবহার করা হতো।
তবে প্রাচীন গ্রিক সভ্যতার যুগেই জ্যামিতিক প্রণালিবদ্ধ রূপটি সুস্পষ্টভাবে লক্ষ করা যায়। গ্রিক গণিতবিদ থেলিসকে প্রথম জ্যামিতিক প্রমাণের কৃতিত্ব দেয়া হয়। থেলিসের শিষ্য পিথাগোরাস জ্যামিতিক তত্তে¡র বিস্তৃতি ঘটান।
◈ স্থান, তল, রেখা ও বিন্দুর ধারণা
আমাদের চারপাশে বিস্তৃত জগত (Space) সীমাহীন। এর বিভিন্ন অংশজুড়ে রয়েছে ছোট-বড় নানা রকম বস্তু। ছোট-বড় বস্তু বলতে বালুকণা, আলপিন, পেন্সিল, কাগজ, বই, চেয়ার, টেবিল, ইট, পাথর, বাড়িঘর, পাহাড়, পৃথিবী, গ্রহ-নক্ষত্র সবই বোঝানো হয়। বিভিন্ন বস্তু স্থানের যে অংশজুড়ে থাকে সে স্থানটুকুর আকার, আকৃতি, অবস্থান, বৈশিষ্ট্য প্রভৃতি থেকেই জ্যামিতিক ধ্যান-ধারণার উদ্ভব।
কোনো ঘনবস্তু (Solid) যে স্থান অধিকার করে থাকে, তা তিন দিকে বিস্তৃত। এই তিন দিকের বিস্তারেই বস্তুটির তিনটি মাত্রা (দৈর্ঘ্য, প্রস্থ ও উচ্চতা) নির্দেশ করে। সেজন্য ঘনবস্তুই ত্রিমাত্রিক (Three dimensional) যেমন, একটি ইট বা বাক্সের তিনটি মাত্রা (দৈর্ঘ্য, প্রস্থ ও উচ্চতা) আছে। একটি গোলকের তিনটি মাত্রা আছে। এর তিন মাত্রার ভিন্নতা স্পষ্ট বোঝা না গেলেও একে দৈর্ঘ্য-প্রস্থ -উচ্চতা বিশিষ্ট খণ্ডে বিভক্ত করা যায়।
▭ 🌐
ঘনবস্তুর উপরিভাগ তল (Surface) নির্দেশ করে অর্থাৎ, প্রত্যেক ঘনবস্তু এক বা একাধিক তল দ্বারা সীমাবদ্ধ থাকে। যেমন, একটি বাক্সের ছয়টি পৃষ্ঠ ছয়টি সমতলের প্রতিরূপ।
তল দ্বিমাত্রিক (Two-dimensional) : এর শুধু দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ আছে, কোনো উচ্চতা নেই। দুইটি তল পরস্পরকে ছেদ করলে একটি রেখা (line) উৎপন্ন হয়। যেমন, বাক্সের দুইটি পৃষ্ঠতল বাক্সের একধারে একটি রেখায় মিলিত হয়।
রেখা একমাত্রিক (one-dimensional) : এর শুধু দৈর্ঘ্য আছে, প্রস্থ ও উচ্চতা নেই। বাক্সের একটি পৃষ্ঠ-তলের প্রস্থ ক্রমশ হ্রাস পেয়ে সম্পূর্ণ শূন্য হলে, ঐ তলের একটি রেখা মাত্র অবশিষ্ট থাকে। এভাবে তলের ধারণা থেকে রেখার ধারণায় আসা যায়।
দুইটি রেখা পরস্পর ছেদ করলে বিন্দুর উৎপত্তি হয়। অর্থাৎ, দুইটি রেখার ছেদস্থান বিন্দু (ঢ়ড়রহঃ) দ্বারা নির্দিষ্ট হয়। বাক্সের দুইটি ধার যেমন, বাক্সের এক কোণায় একটি বিন্দুতে মিলিত হয়।
সমতল জ্যামিতি : জ্যামিতির যে শাখায় একই সমতলে অবস্থিত বিন্দু, রেখা এবং তাদের সঙ্গে সম্পর্কিত বিভিন্ন জ্যামিতিক সত্তা সম্পর্কে আলোচনা করা হয়, তাকে সমতল জ্যামিতিক (Plane Geometry) বলা হয়। বিমূর্ত জ্যামিতিক ধারণা হিসেবে স্থানকে বিন্দুসমূহের সেট ধরা হয় এবং সরলরেখা ও সমতলকে এই সার্বিক সেটের উপসেট বিবেচনা করা হয়।
অনুশীলনীর প্রশ্ন ও সমাধান
প্রশ্নঃ 1 : স্থান, তল, রেখা এবং বিন্দুর ধারণা দাও।
উত্তর : স্থান (Space) : যে অংশ জুড়ে বিভিন্ন বস্তু অবস্থান করে সে অংশই হচ্ছে স্থান। আমাদের চারপাশে বিস্তৃত জগৎ সীমাহীন। এর বিভিন্ন অংশ জুড়ে রয়েছে ছোট-বড় নানারকম বস্তু। বস্তু বলতে বালুকণা, আলপিন, পেন্সিল, কাগজ, বই, চেয়ার, টেবিল, ইট, বাক্স, বাড়িঘর, পাহাড়, পৃথিবী, গ্রহ-নক্ষত্র সবই বোঝান হয়। বিভিন্ন বস্তু স্থানের যে অংশ জুড়ে থাকে সে স্থানটুকুর আকার, আকৃতি, অবস্থান, বৈশিষ্ট্য প্রভৃতি থেকেই জ্যামিতিক ধ্যান-ধারণার উদ্ভব হয়েছে।
▭ 🌐
চিত্র : ঘনবস্তু থেকে স্থানের ধারণা
তল (Surface) : ঘনবস্তুর উপরিভাগ তল নির্দেশ করে। অর্থাৎ, প্রত্যেক ঘনবস্তু এক বা একাধিক তল দ্বারা সীমাবদ্ধ থাকে। যেমন, একটি বাক্সের ছয়টি পৃষ্ঠ ছয়টি তলের অংশ। তলের শুধু দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ আছে, কোনো বেধ নেই। এ কারণে তল দ্বিমাত্রিক। তল দুই প্রকার। যথা- সমতল ও বক্রতল।
চিত্র : বিভিন্ন প্রকার তল
ঘনবস্তু থেকে তলের ধারণা :
চিত্র : ঘনবস্তু থেকে তলের ধারণা
রেখা (Line) : দুইটি তল পরস্পরকে ছেদ করলে ছেদস্থলে একটি রেখা উৎপন্ন হয়। যেমন, বাক্সের দুইটি পৃষ্ঠতল বাক্সের একধারে একটি রেখায় মিলিত হয়। এ রেখা একটি সরলরেখা। রেখার শুধু দৈর্ঘ্য আছে, প্রস্থ বা বেধ নেই। এ কারণে রেখা একমাত্রিক। রেখা দুই প্রকার। যথা- সরলরেখা (Straight line) ও বক্ররেখা (Curved line)
চিত্র : তল থেকে রেখার ধারণা
বিন্দু (Point) : দুইটি রেখা পরস্পর ছেদ করলে বিন্দুর উৎপত্তি হয়। অর্থাৎ দুইটি রেখার ছেদস্থান বিন্দু দ্বারা নির্দিষ্ট হয়। বিন্দুর দৈর্ঘ্য, প্রস্থ ও বেধ নেই, শুধু অবস্থান আছে। একটি রেখার দৈর্ঘ্য ক্রমশ হ্রাস পেয়ে অবশেষে শূন্য হলে, একটি বিন্দু মাত্র অবশিষ্ট থাকে। বিন্দুকে শূন্য মাত্রার সত্তা বলে গণ্য করা হয়।
চিত্র : রেখা হতে বিন্দুর ধারণা
প্রশ্নঃ 2 : ইউক্লিডের পাঁচটি স্বীকার্য বর্ণনা কর।
সমাধান : ইউক্লিড প্রদত্ত পাঁচটি স্বীকার্য হলো :
স্বীকার্য 1। একটি বিন্দু থেকে অন্য একটি বিন্দু পর্যন্ত একটি সরলরেখা আঁকা যায়।
স্বীকার্য 2। খণ্ডিত রেখাকে যথেচ্ছভাবে বাড়ানো যায়।
স্বীকার্য 3। যেকোনো কেন্দ্র ও যেকোনো ব্যাসার্ধ নিয়ে বৃত্ত আঁকা যায়।
স্বীকার্য 4। সকল সমকোণ পরস্পর সমান।
স্বীকার্য 5। একটি সরলরেখা দুইটি সরলরেখাকে ছেদ করলে এবং ছেদকের একই পাশের অন্তঃস্থ কোণদ্বয়ের সমষ্টি দুই সমকোণের চেয়ে কম হলে, রেখা দুইটিকে যথেচ্ছভাবে বর্ধিত করলে যেদিকে কোণের সমষ্টি দুই সমকোণের চেয়ে কম, সেদিকে মিলিত হয়।
প্রশ্নঃ 3 : পাঁচটি আপতন স্বীকার্য বর্ণনা কর।
সমাধান : আপতন স্বীকার্য : বিমূর্ত জ্যামিতিক ধারণা হিসেবে স্থানকে বিন্দুসমূহের সেট ধরা হয় এবং সরলরেখা ও সমতলকে এই সার্বিক সেটের উপসেট বিবেচনা করা হয়। এই বিবেচ্য বৈশিষ্ট্যসমূহকে জ্যামিতিক স্বীকার্য বলা হয়। স্বীকার্য -1 থেকে স্বীকার্য-5 কে আপতন স্বীকার্য বলা হয়।
স্বীকার্য 1। জগৎ (Space) সকল বিন্দুর সেট এবং সমতল ও সরলরেখা এই সেটের উপসেট।
এই স্বীকার্য থেকে আমরা লক্ষ করি যে, প্রত্যেক সমতল ও প্রত্যেক সরলরেখা এক একটি সেট, যার উপাদান হচ্ছে বিন্দু। জ্যামিতিক বর্ণনায় সাধারণত সেট প্রতীকের ব্যবহার পরিহার করা হয়। যেমন, কোনো বিন্দু একটি সরলরেখার (বা সমতলের) অন্তর্ভুক্ত হলে বিন্দুটি ঐ সরলরেখায় (বা সমতলে) অবস্থিত অথবা, সরলরেখাটি (বা সমতলটি) ঐ বিন্দু দিয়ে যায়। একইভাবে, একটি সরলরেখা একটি সমতলের উপসেট হলে সরলরেখাটি ঐ সমতলে অবস্থিত, অথবা সমতলটি ঐ সরলরেখা দিয়ে যায় এ রকম বাক্য দ্বারা তা বর্ণনা করা হয়।
স্বীকার্য 2। দুইটি ভিন্ন বিন্দুর জন্য একটি ও কেবল একটি সরলরেখা আছে যাতে উভয় বিন্দু অবস্থিত।
স্বীকার্য 3। একই সরলরেখায় অবস্থিত নয় এমন তিনটি ভিন্ন ভিন্ন বিন্দুর জন্য একটি ও কেবল একটি সমতল আছে যাতে বিন্দু তিনটি অবস্থিত।
স্বীকার্য 4। কোনো সমতলের দুইটি ভিন্ন বিন্দু দিয়ে যায় এমন সরলরেখা ঐ সমতলে অবস্থিত।
স্বীকার্য 5। (ক) জগতে (Space) একাধিক সমতল বিদ্যমান।
(খ) প্রত্যেক সমতলে একাধিক সরলরেখা অবস্থিত।
(গ) প্রত্যেক সরলরেখার বিন্দুসমূহ এবং বাস্তব সংখ্যাসমূহকে এমনভাবে সম্পর্কিত করা যায় যেন, রেখাটির প্রত্যেক বিন্দুর সঙ্গে একটি অনন্য বাস্তব সংখ্যা সংশ্লিষ্ট হয় এবং প্রত্যেক বাস্তব সংখ্যার সঙ্গে রেখাটির একটি অনন্য বিন্দু সংশ্লিষ্ট হয়।
প্রশ্নঃ 4 : দূরত্ব স্বীকার্যটি বর্ণনা কর।
সমাধান : নিচে দূরত্ব স্বীকার্যটি বর্ণনা করা হলো :
জ্যামিতিতে দূরত্বের ধারণাও একটি প্রাথমিক ধারণা। এ জন্য স্বীকার করে নেওয়া হয় যে,
(ক) P ও Q বিন্দুযুগল একটি অনন্য বাস্তব সংখ্যা নির্দিষ্ট করে থাকে। সংখ্যাটিকে P বিন্দু থেকে Q বিন্দুর দূরত্ব বলা হয় এবং PQ দ্বারা সূচিত করা হয়।
(খ) P ও Q ভিন্ন বিন্দু হলে PQ সংখ্যাটি ধনাত্মক। অন্যথায়, PQ = 0।
(গ) P থেকে Q-এর দূরত্ব এবং Q থেকে P-এর দূরত্ব একই। অর্থাৎ PQ = QP।
PQ = QP হওয়াতে এই দূরত্বকে সাধারণত P বিন্দু ও Q বিন্দুর মধ্যবর্তী দূরত্ব বলা হয়। ব্যবহারিকভাবে, এই দূরত্ব পূর্ব নির্ধারিত এককের সাহায্যে পরিমাপ করা হয়।
প্রশ্নঃ 5 : রুলার স্বীকার্যটি বর্ণনা কর।
সমাধান : কোনো সরলরেখায় অবস্থিত বিন্দুসমূহের সেট এবং বাস্তব সংখ্যার সেটের মধ্যে এমনভাবে এক-এক মিল স্থাপন করা যায়, যেন রেখাটির যেকোনো বিন্দু P, Q এর জন্য PQ = |a - b| হয়, যেখানে মিলকরণের ফলে P ও Q এর সঙ্গে যথাক্রমে a ও b বাস্তব সংখ্যা সংশ্লিষ্ট হয়।
এই স্বীকার্যে বর্ণিত মিলকরণ করা হলে, রেখাটি একটি সংখ্যারেখায় পরিণত হয়েছে বলা হয়। সংখ্যারেখায় P বিন্দুর সঙ্গে a সংখ্যাটি সংশ্লিষ্ট হলে P কে a-এর লেখবিন্দু এবং a-কে P-এর স্থানাঙ্ক বলা হয়।
প্রশ্নঃ 6 : সংখ্যারেখা বর্ণনা কর।
সমাধান : সংখ্যারেখা : বাস্তব সংখ্যাকে সরলরেখার ওপর বিন্দুর সাহায্যে চিত্রের মাধ্যমে দেখানো যায়। যে রেখায় বিন্দুর সঙ্গে সংখ্যার এক-এক মিল দেখানো হয়, তাকে সংখ্যারেখা বলে।
AB দ্বারা একটি অসীম রেখা সূচিত করা হলো।
সংখ্যারেখায় P বিন্দুর সঙ্গে a সংখ্যাটি সংশ্লিষ্ট হলে P কে a এর লেখবিন্দু এবং a কে P এর স্থানাঙ্ক বলা হয়।
কোনো সরলরেখাকে সংখ্যারেখায় পরিণত করার জন্য প্রথমে রেখাটির একটি বিন্দুর স্থানাঙ্ক 0 এবং অপর একটি বিন্দুর স্থানাঙ্ক 1 ধরে নেওয়া হয়। এতে রেখাটিতে একটি একক দূরত্ব এবং একটি ধনাত্মক দিক নির্দিষ্ট হয়।
সংখ্যারেখায় সকল মূলদ ও অমূলদ সংখ্যার সঙ্গে সংখ্যারেখাস্থ সকল বিন্দুর এক-এক মিল রয়েছে। a ও b দুইটি অসমান বাস্তব সংখ্যা হলে, হয় a > b না হয় a < b হবে, সংখ্যারেখায় a > b এর অর্থ, a এর প্রতিরূপী বিন্দু b এর প্রতিরূপী বিন্দুর ডানে অবস্থিত।
প্রশ্নঃ 7 : রুলার স্থাপন স্বীকার্যটি বর্ণনা কর।
সমধান : রুলার স্থাপন স্বীকার্য : কোনো সরলরেখাকে সংখ্যা রেখায় পরিণত করার জন্য প্রথমে রেখাটির একটি বিন্দুর স্থানাঙ্ক 0 এবং অপর একটি বিন্দুর স্থানাঙ্ক 1 ধরে নেওয়া হয়। এতে রেখাটিতে একটি একক দূরত্ব এবং একটি ধনাত্মক দিক নির্দিষ্ট হয়। এজন্য স্বীকার করে নেওয়া হয় যে, যেকোনো সরলরেখা AB কে এমনভাবে সংখ্যা রেখায় পরিণত করা যায় যে, A এর স্থানাঙ্ক 0 (শূন্য) এবং B এর স্থানাঙ্ক ধনাত্মক হয়। একে রুলার স্থাপন স্বীকার্য বলে।
প্রশ্নঃ 8 : পরস্পরছেদী সরলরেখা ও সমান্তরাল সরলরেখার সংজ্ঞা দাও।
সমাধান : পরস্পরছেদী সরলরেখা: একই সমতলস্থ দুইটি ভিন্ন সরলরেখাকে পরস্পরছেদী বলা হয়, যদি উভয়রেখায় অবস্থিত একটি সাধারণ বিন্দু থাকে।
চিত্রে AB ও CD রেখাদ্বয়ের সাধারণ বিন্দু P। তাই AB ও CD পরস্পরছেদী সরলরেখা।
সমান্তরাল সরলরেখা : একই সমতলস্থ দুইটি ভিন্ন সরলরেখাকে সমান্তরাল সরলরেখা বলা হয় যদি তাদের কোনো সাধারণ বিন্দু না থাকে।
A ←→ B
C ←→ D
চিত্রে, AB ও CD রেখাদ্বয়ের মধ্যে কোনো সাধারণ বিন্দু নেই। তাই AB ও CD সমান্তরাল সরলরেখা।
লক্ষণীয় যে,
(1) দুইটি ভিন্ন সরলরেখার সর্বাধিক একটি সাধারণ বিন্দু থাকতে পারে। কারণ স্বীকার্য-2 অনুযায়ী দুই ভিন্ন বিন্দু কেবল একটি সরলরেখাতেই অবস্থিত থাকতে পারে।
(2) একই সমতলস্থ দুইটি ভিন্ন সরলরেখা হয় সমান্তরাল, না হয় তারা কেবল এক বিন্দুতে ছেদ করে।
সৃজনশীল প্রশ্ন ও সমাধান
অনুশীলনী ৬.১
প্রশ্নঃ 1 : বিভিন্ন বস্তু স্থানের যে অংশ জুড়ে থাকে সে স্থানটুকুর আকার, আকৃতি, অবস্থান, বৈশিষ্ট্য প্রভৃতি থেকেই জ্যামিতিক ধ্যান-ধারণার উদ্ভব।
ক. ঘনবস্তু কী? 2
খ. ঘনবস্তু থেকে কীভাবে তলের ধারণায় আসা যায় বর্ণনা কর। 4
গ. তল থেকে কীভাবে রেখার ধারণায় আসা যায় তা বর্ণনা কর। 4
1নং প্রশ্নের সমাধান
ক. যে সকল বস্তু তিনটি মাত্রা অর্থাৎ দৈর্ঘ্য, প্রস্থ ও উচ্চতা নির্দেশ করে সেগুলো ঘনবস্তু। প্রত্যেক ঘনবস্তুই ত্রিমাত্রিক। যেমন : ইট, পাথর, বাড়ি-ঘর, পাহাড়, টেবিল ইত্যাদি ঘনবস্তু।
খ. একটি ইট বা বাক্সের তিনটি মাত্রা (দৈর্ঘ্য, প্রস্থ ও উচ্চতা) আছে। আবার গোলকেরও তিনটি মাত্রা আছে। একটি বাক্সের দুইটি মাত্রা ঠিক রেখে তৃতীয় মাত্রা ক্রমশ হ্রাস করে শূন্যে পরিণত করলে বাক্সটির পৃষ্ঠ বিশেষ মাত্রা অবশিষ্ট থাকে।
এভাবে ঘনবস্তু থেকে তলের ধারণায় আসা যায়। একটি বাক্সের উপরিভাগ সমতল এবং একটি গোলকের উপরিভাগ বক্রতল।
গ. দুইটি তল পরস্পরকে ছেদ করলে একটি রেখার সৃষ্টি হয়। যেমন, বাক্সের দুইটি উপরিতল বাক্সের একধারে একটি রেখায় মিলিত হয়। এই রেখা একটি সরলরেখা।
আবার, একটি লেবুকে একটি পাতলা ছুরি দিয়ে কাটলে ছুরির সমতল লেবুর বক্রতলকে যেখানে ছেদ করে সেখানে একটি বক্ররেখা উৎপন্ন হয়।
প্রশ্নঃ 2 : যেকোনো গাণিতিক আলোচনায় এক বা একাধিক প্রাথমিক ধারণা স্বীকার করে নিতে হয়। বর্তমান সময়ে জ্যামিতিতে কিছু ধারণা স্বীকার করে নেয়া হয়েছে।
ক. জ্যামিতিক স্বীকার্য কী? 2
খ. দূরত্ব স্বীকার্যের বর্ণনা দাও। 4
গ. রেখাংশের মাধ্যমে দূরত্ব স্বীকার্যকে কি ব্যাখ্যা করা সম্ভব? যদি সম্ভব হয় ব্যাখ্যা দাও। 4
2নং প্রশ্নের সমাধান
ক. জ্যামিতিক যেকোনো আলোচনায় এক বা একাধিক প্রাথমিক ধারণাকে স্বীকার করে নিতে হয়। আধুনিক জ্যামিতিতে বিন্দু, সরলরেখা ও সমতলকে প্রাথমিক ধারণা হিসেবে গ্রহণ করে তাদের কিছু বৈশিষ্ট্যকে স্বীকার করে নেয়া হয়। আর এই স্বীকৃত বৈশিষ্ট্যগুলোই জ্যামিতিক স্বীকার্য (Postulate)।
খ. দূরত্ব স্বীকার্য : (ক) P ও Q বিন্দুযুগল একটি অনন্য বাস্তব সংখ্যা নির্দিষ্ট করে থাকে। সংখ্যাটিকে P বিন্দু থেকে Q বিন্দুর দূরত্ব বলা হয় এবং PQ দ্বারা সূচিত করা হয়।
(খ) P থেকে Q এর দূরত্ব এবং Q থেকে P এর দূরত্ব একই। অর্থাৎ PQ = QP. PQ = QP হওয়াতে এই দূরত্বকে সাধারণত P বিন্দু ও Q বিন্দুর মধ্যবর্তী দূরত্ব বলা হয়। ব্যবহারিকভাবে, এই দূরত্ব পূর্ব নির্ধারিত এককের সাহায্যে পরিমাপ করা হয়।
গ. একটি রেখাংশের মাধ্যমে দূরত্ব স্বীকার্যকে ব্যাখ্যা দেওয়া সম্ভব। ব্যাখ্যা নিম্নরূপ-
মনে করি, P থেকে Q বিন্দুর মধ্যবর্তী দূরত্ব a cm. সুতরাং, PQ এর দূরত্ব একটি অনন্য বাস্তব সংখ্যা নির্দেশ করে।
P ও Q ভিন্ন বিন্দু বলে PQ দূরত্ব একটি ধনাত্মক সংখ্যা। আবার, P ও Q একই বিন্দু হলে এদের মধ্যবর্তী কোনো দূরত্ব থাকতো না। সুতরাং, PQ = 0 হতো।
P থেকে Q এর দূরত্ব যত Q থেকে P এর দূরত্ব একই অর্থাৎ a cm হয়। (স্কেলের সাহায্যে মেপে)। অর্থাৎ PQ = QP।
প্রশ্নঃ 3 : জ্যামিতি গণিত শাস্ত্রের একটি প্রাচীন শাখা। শুধু ভূমি পরিমাপই নয় বরং বহু জটিল গাণিতিক সমস্যা সমাধানে এই জ্ঞান এখন অপরিহার্য।
ক. আধুনিক জ্যামিতির ভিত্তি কী? 2
খ. বিন্দু, রেখা ও তল সম্পর্কে ইউক্লিডের ধারণা লেখ। 4
গ. বিন্দু, রেখা ও তল সম্পর্কিত ইউক্লিডের স্বতঃসিদ্ধগুলো লেখ। 4
3নং প্রশ্নের সমাধান
ক. আনুমানিক খ্রিষ্টপূর্ব 300 অব্দে গ্রিক পণ্ডিত ইউক্লিড জ্যামিতির ইতস্তত বিক্ষিপ্ত সূত্রগুলোকে বিধিবদ্ধভাবে সুবিন্যস্ত করে তাঁর বিখ্যাত গ্রন্থ ‘ইলিমেন্টস’ রচনা করেন। তেরো খণ্ডে সম্পূর্ণ কালোত্তীর্ণ এই ‘ইলিমেন্টস’ গ্রন্থটিই আধুনিক জ্যামিতির ভিত্তি।
খ. ইউক্লিড বিন্দু, রেখা, তল সম্পর্কে যে বর্ণনা দিয়েছেন তা নিম্নরূপ :
1. যার কোনো অংশ নেই, তাই বিন্দু।
2. রেখার প্রান্ত বিন্দু নেই।
3. যার কেবল দৈর্ঘ্য আছে কিন্তু প্রস্থ ও উচ্চতা নেই, তাই রেখা।
4. যে রেখার উপরিস্থিত বিন্দুগুলো একই বরাবর থাকে, তাই সরলরেখা।
5. যার কেবল দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ আছে, তাই তল।
6. তলের প্রান্ত হলো রেখা।
7. যে তলের সরলরেখাগুলো তার ওপর সমভাবে থাকে, তাই সমতল।
গ. বিন্দু, রেখা ও তল সম্পর্কে ধারণা দিতে গিয়ে ইউক্লিড কিছু প্রাথমিক ধারণা স্বীকার করে নিয়েছেন। এগুলোকে তিনি স্বতঃসিদ্ধ বলে আখ্যায়িত করেছেন। ইউক্লিড প্রদত্ত স্বতঃসিদ্ধগুলো নিম্নরূপ :
1. যে সকল বস্তু একই বস্তুর সমান, সেগুলো পরস্পর সমান।
2. সমান সমান বস্তুর সাথে সমান বস্তু যোগ করা হলে যোগফল সমান।
3. সমান সমান বস্তু থেকে সমান বস্তু বিয়োগ করা হলে বিয়োগফল সমান।
4. যা পরস্পরের সাথে মিলে যায়, তা পরস্পর সমান।
5. পূর্ণ তার অংশের চেয়ে বড়।
৯ম-১০ম শ্রেণি
সাধারণ গণিত সমাধান
এসএসসি পরীক্ষার পূর্ণাঙ্গ প্রস্তুতি।
SSC General Math Solution Download pdf version.
Exercise-6.1
0 Comments:
Post a Comment