একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা ১ম পত্র গাইড
এইচএসসি পরীক্ষার পূর্ণাঙ্গ প্রস্তুতি
HSC Bangla 1st Paper Srijonshil Question and Answer. Bangla Srijonshil Proshno O Uttor for HSC Exam Preparation. pdf download
জাদুঘরে কেন যাব
আনিসুজ্জামান
সৃজনশীল প্রশ্ন-০১
নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং সৃজনশীল প্রশ্নগুলোর উত্তর দাওঃ
ফ্রান্সের লোকদের দেশাত্মজ্ঞান অমনি করেই হয় বলে তাদের দেশাত্মবোধ আপনা আপনিই জন্মায়। শৈশব থেকেই তারা পথ চলতে চেনে তাদের জাতীয় পূর্ব-পুরুষদের, যাদের নিয়ে তাদের ইতিহাস লেখা হয়েছে। আর দেশের প্রতি জেলার প্রতি পর্বতের নাম-যাদের কোলে তাদের অখণ্ড জাতি লালিত হয়েছে। স্বদেশকে চেনে বলেই তারা বিশ্বকেও চিনতে পারে।
ক. পৃথিবীর প্রথম জাদুঘর স্থাপিত হয়েছিল কোথায়?
খ. জাদুঘর কীভাবে গড়ে ওঠে?
গ. অনুচ্ছেদের সঙ্গে ‘জাদুঘরে কেন যাব’ প্রবন্ধের যে সাদৃশ্য লক্ষ করা যায় তা ব্যাখ্যা কর।
ঘ. সাদৃশ্যগত দিকটি ‘জাদুঘরে কেন যাব’ প্রবন্ধের বিষয়বস্তুর সঙ্গে কতটুকু সম্পর্কিত? যাচাই কর।
১ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. জ্ঞান
পৃথিবীর প্রথম জাদুঘর স্থাপিত হয়েছিল মিশরের আলেকজান্দ্রিয়ায়।
খ. অনুধাবন
বিত্তশালী ব্যক্তি বা পরিবারের উদ্যোগে জাদুঘরের উৎপত্তি হয়।
কৌতূহলী, রুচিসম্পন্ন ও বিদগ্ধ ব্যক্তি বা পরিবারের উদ্যোগে নানা দু®প্রাপ্য ও চমকপ্রদ বস্তু সংগৃহীত হয়ে থাকে। ক্রমান্বয়ে জনগণের চাহিদা আর সমাজ, সরকার তথা রাষ্ট্রের অর্থানুকূল্যে, পৃষ্ঠপোষকতায় কোনো একটি জাদুঘর গড়ে ওঠে।
গ. প্রয়োগ
আত্মপরিচয় লাভের ক্ষেত্র হিসেবে অনুচ্ছেদের সঙ্গে ‘জাদুঘরে কেন যাব’ প্রবন্ধের সাদৃশ্য লক্ষ করা যায়।
‘দেশ’ শব্দটি ক্ষেত্রবিশেষে রাষ্ট্র, সরকার, সমাজ ও জাতি ইত্যাদির সমার্থক হিসেবে ব্যবহৃত হয়। বর্তমানে বিশ্বের যেকোনো স্থানেই দেশ বা রাষ্ট্র সর্বপ্রধান রাজনৈতিক সংগঠন। আর আত্মপরিচয় লাভ হলো জাতীয়তাবাদ, যা দেশ বা রাষ্ট্রের অন্যতম গৌণ উপাদান।
অনুচ্ছেদে ফ্রান্সে লোকদের দেশাত্মজ্ঞান ও দেশাত্মবোধ জাগ্রত হওয়ার পদ্ধতি সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। বলা হয়েছে, শৈশব থেকেই তারা পথ চলতে চেনে তাদের জাতীয় পূর্বপুরুষদের নিয়ে, যাদের নিয়ে তাদের ইতিহাস লেখা হয়েছে। আর দেশের প্রতি জেলার প্রতি পর্বতের নাম-যাদের কোলে তাদের অখণ্ড জাতি লালিত হয়েছে, তাদের নাম।
অনুচ্ছেদের দেশাত্মবোধ বা জাতীয়তাবাদী চেতনার বিষয়টি ‘জাদুঘরে কেন যাব’ প্রবন্ধে প্রাবন্ধিক তুলে ধরেছেন। পূর্ব পাকিস্তানের তৎকালীন গভর্নর মোনায়েম খানের জাদুঘরের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনকে কেন্দ্র করে আলোচনার কোনো এক প্রসঙ্গে প্রাবন্ধিক বলেন, জাদুঘরকে যদি তিনি আত্মপরিচয় লাভের ক্ষেত্র হিসেবে দেখে থাকেন, তাহলে মোটেই ভুল করেন নি। অল্প বয়সে লেখক যখন প্রথম ঢাকা জাদুঘরে গিয়েছিলেন, অতটা সচেতনভাবে না হলেও তিনিও এক ধরনের আত্মপরিচয়ের সূত্র সেখানে খুঁজে পেয়েছিলেন।
ঘ. উচ্চতর দক্ষতা
সাদৃশ্যগত দিকটি ‘জাদুঘরে কেন যাব’ প্রবন্ধের বিষয়বস্তুর সঙ্গে অত্যন্ত নিবিড়ভাবে সম্পর্কিত।
জাদুঘর হচ্ছে এমন এক সর্বজনীন প্রতিষ্ঠান যেখানে মানবসভ্যতা ও সংস্কৃতির বৈচিত্র্যপূর্ণ ও ঐতিহাসিক নিদর্শন সংগ্রহ করে রাখা হয় প্রদর্শন ও গবেষণার জন্য। অর্থাৎ, জাদুঘর কেবল বর্তমান প্রজন্মের কাছে নিদর্শনগুলো প্রদর্শন করে না, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্যেও সেগুলো সংরক্ষণ করে রাখে। সংগৃহীত নিদর্শনগুলোকে জাদুঘরে যথাযথভাবে পরিচিতিমূলক বিবরণসহ এমন আকর্ষণীয়ভাবে প্রদর্শন করা হয়, যেন তা থেকে দর্শকরা অনেক কিছু জানতে পারেন, পাশাপাশি আনন্দও পান।
অনুচ্ছেদে ফ্রান্সের লোকদের দেশাত্মজ্ঞান ও দেশাত্মবোধ জাগ্রত হওয়া সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। বলা হয়েছে, শৈশব থেকেই তারা পথ চলতে চেনে তাদের জাতীয় পূর্বপুরুষদের নিয়ে, যাদের নিয়ে তাদের ইতিহাস লেখা হয়েছে। আর দেশের প্রতি জেলার প্রতি পর্বতের নাম-যাদের কোলে তাদের অখণ্ড জাতি লালিত হয়েছে। স্বদেশকে চেনে বলেই তারা বিশ্বকেও চিনতে পারে। স্বদেশকে চেনার, দেশাত্মবোধ তথা জাতীয়তাবোধে উদ্বুদ্ধ হয়ে বিশ্ব নাগরিক হয়ে ওঠার দীক্ষা ‘জাদুঘরে কেন যাব’ প্রবন্ধে উলিখিত হয়েছে। ‘জাদুঘরে কেন যাব’ প্রবন্ধে লেখক দেশকে জানা এবং দেশাত্মবোধে উদ্বুদ্ধ হওয়ার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা বর্ণনায় বলেন, অল্প বয়সে তিনি যখন প্রথম ঢাকা জাদুঘরে যান, তখন অতটা সচেতনভাবে না হলেও এক ধরনের আত্মপরিচয়ের সূত্র সেখানে খুঁজে পান। মুদ্রা এবং অস্ত্রশস্ত্র দেখে বাংলায় মুসলিম শাসন সম্পর্কে কিছু ধারণা হয়েছিল। ঈসা খাঁর কামানের গায়ে লেখা দেখে মুগ্ধ হয়েছিলেন।
প্রবন্ধের এক অংশে লেখক বলেন যে, জাদুঘরে যখন তিনি অন্য জাতির অনুরূপ কীর্তির সঙ্গে একাত্মতা অনুভব করেন, তখন তার বৃহত্তর মানবসমাজে উত্তরণ হয়। যা উদ্দীপকের সাথে নিবিড় সম্পর্ক স্থাপন করে। সুতরাং সাদৃশ্যগত দিকটি ‘জাদুঘরে কেন যাব’ প্রবন্ধের বিষয়বস্তুর সাথে অত্যন্ত নিবিড়ভাবে সম্পর্কিত।
এইচএসসি (HSC) বোর্ড পরীক্ষার পূর্ণাঙ্গ প্রস্তুতির জন্য পড়ুন সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তরসহ:
জাদুঘরে কেন যাব
সৃজনশীল প্রশ্ন-০২
নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং সৃজনশীল প্রশ্নগুলোর উত্তর দাওঃ
নালন্দা মহাবিহার হলো ভারতীয় উপমহাদেশের প্রথম বিশ্ববিদ্যালয়। সম্রাট কুমারগুপ্তের রাজত্বকালে (৪১৫-৪৫৫) খ্রিষ্টাব্দে প্রতিষ্ঠানটির বিকাশ ঘটে। প্রথম দিকে ভারতীয় বৌদ্ধদের বৌদ্ধদর্শন আলোচিত হলেও কালক্রমে এখানে চীন, গ্রিস ও পারস্যের শিক্ষার্থীরা জ্ঞান লাভ করতেন। ফলে এটি বৌদ্ধ বিহার থেকে ক্রমান্বয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত হয়।
ক. আলেকজান্দ্রিয়ায় পৃথিবীর প্রথম জাদুঘর স্থাপিত হয়েছিল কোন শতাব্দীতে?
খ. আলেকজান্দ্রিয়া জাদুঘর কেমন ছিল?
গ. উদ্দীপকের নালন্দা মহাবিহার ও ‘জাদুঘরে কেন যাব’ প্রবন্ধে বর্ণিত আলেকজান্দ্রিয়া জাদুঘরের মধ্যে বৈসাদৃশ্য তুলে ধর।
ঘ. ‘কিছু পার্থক্য সত্তে¡ও নালন্দা মহাবিহার ও আলেকজান্দ্রিয়া জাদুঘরের প্রাচীনত্ব ও উৎপত্তিগত দিক মূলত একই,-উক্তিটির যৌক্তিকতা বিচার কর।
২ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. জ্ঞান
আলেকজান্দ্রিয়ায় পৃথিবীর প্রথম জাদুঘর স্থাপিত হয়েছিল খ্রিষ্টপূর্ব তৃতীয় শতাব্দীতে।
খ. অনুধাবন
আলেকজান্দ্রিয়া জাদুঘর আজকের দিনের আধুনিক জাদুঘরের তুলনায় একটু ভিন্ন প্রকৃতির ছিল।
পৃথিবীর প্রথম এই জাদুঘর। অর্থাৎ, আলেকজান্দ্রিয়া ছিল নিদর্শন-সংগ্রহশালা ও গ্রন্থাগার, ছিল উদ্ভিদ উদ্যান ও উন্মুক্ত চিড়িয়াখানা। তবে এটা নাকি ছিল মুখ্যত দর্শন চর্চার কেন্দ্র।
গ. প্রয়োগ
পৃথিবীর দুটি প্রাচীন ও গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান হওয়া সত্তে¡ও উদ্দীপকের নালন্দা মহাবিহার ও ‘জাদুঘরে কেন যাব’ প্রবন্ধে বর্ণিত আলেকজান্দ্রিয়া জাদুঘরের মধ্যে যথেষ্ট বৈসাদৃশ্য লক্ষণীয়।
প্রাচীনত্বের দিক দিয়ে আলেকজান্দ্রিয়া জাদুঘর এবং নালন্দা মহাবিহারের মিল বর্তমান। কিন্তু ভৌগোলিক অবস্থান, প্রতিষ্ঠানের ধরনের দিক দিয়ে এগুলোর মধ্যে যথেষ্ট ভিন্নতা রয়েছে।
আলেকজান্দ্রিয়া জাদুঘরটি জাদুঘর হলেও নালন্দা মহাবিহার একটি বিশ্ববিদ্যালয়। আলেকজান্দ্রিয়া মিশরে অবস্থিত এবং তা স্থাপন করেন আলেকজান্ডার দি গ্রেট। অন্যদিকে নালন্দা মহাবিহার ভারতের বিহারে অবস্থিত আর এর প্রতিষ্ঠাতা সম্রাট কুমারগুপ্ত। নালন্দা মহাবিহার ক্রমান্বয়ে বৌদ্ধ বিহার থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত হয়। যেখানকার মূলপাঠ্য বৌদ্ধ দর্শন। অন্যদিকে আলেকজান্দ্রিয়া জাদুঘর আসলেই একটি জাদুঘর যদিও সেখানে দর্শন চর্চা করা হতো।
ঘ. উচ্চতর দক্ষতা
‘জাদুঘরে কেন যাব’ প্রবন্ধে বর্ণিত আলেকজান্দ্রিয়া জাদুঘর এবং উদ্দীপকে বর্ণিত নালন্দা মহাবিহার দুটি ভিন্ন প্রতিষ্ঠান হলেও উৎপত্তিগত দিক দিয়ে এদের যথেষ্ট মিল রয়েছে।
উদ্দীপকের নালন্দা মহাবিহার ভারতের প্রাচীনতম বিশ্ববিদ্যালয়, অন্যদিকে আলেকজান্দ্রিয়া জাদুঘর মিশর তথা বিশ্বের প্রাচীনতম জাদুঘর। উৎপত্তিগত দিক দিয়েও আলেকজান্দ্রিয়া জাদুঘর ও নালন্দা মহাবিহারের যথেষ্ট মিল রয়েছে।
আলেকজান্দ্রিয়া প্রতিষ্ঠিত হয় এক বিখ্যাত সম্রাট দ্বারা। আলেকজান্ডার দি গ্রেট এটি স্থাপন করেন। অন্যদিকে ভারত সম্রাট কুমারগুপ্তের রাজত্বকালে নালন্দা মহাবিহারের বিকাশ ঘটে। এছাড়া উভয় প্রতিষ্ঠানে দর্শন চর্চা হতো। আলেকজান্দ্রিয়া ও নালন্দা মহাবিহারের প্রাতিষ্ঠানিক ধরনগত ভিন্নতা আছে সত্য কিন্তু দুটি প্রতিষ্ঠানই বহু প্রাচীন এবং দুজন বিখ্যাত সম্রাট দ্বারা প্রতিষ্ঠিত। এছাড়া উভয় প্রতিষ্ঠানেই দর্শন চর্চা হতো।
উপরিউক্ত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে ‘জাদুঘরে কেন যাব’ এবং উদ্দীপকের আলোকে বলা যায়- ‘পার্থক্য সত্ত্বেও নালন্দা মহাবিহার ও আলেকজান্দ্রিয়া জাদুঘরের প্রাচীনতত্ত্ব ও উৎপত্তিগত দিক মূলত একই’।
জাদুঘরে কেন যাব
সৃজনশীল প্রশ্ন-০৩
নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং সৃজনশীল প্রশ্নগুলোর উত্তর দাওঃ
লাইব্রেরি এখন আর আগের মতো নেই। লাইব্রেরি বলতে এখন আর কোনো বিশাল ভবনের অসংখ্য বইয়ের সমাহারকে বোঝায় না। ‘বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের’ ভ্রাম্যমাণ লাইব্রেরিটি লাইব্রেরি সংক্রান্ত এক অভিনব ধারণা। অন্যদিকে ইন্টারনেটে আছে ই-বুকের বিশাল সংগ্রহশালা।
ক. আজকের দিনে আলেকজান্দ্রিয়ার মতো মেলানো মেশানো জাদুঘরের সবচেয়ে বড় দৃষ্টান্ত কোনটি?
খ. জাদুঘর বলতে আজ আর ব্রিটিশ মিউজিয়ম, ল্যুভ ও হার্মিতিয়ের মতো বিশাল প্রাসাদকে বোঝায় না-কেন?
গ. উদ্দীপকের মূলবক্তব্য ‘জাদুঘরে কেন যাব’ প্রবন্ধের কোন দিকটিকে ইঙ্গিত করে? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. “সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সকল জিনিসই পরিবর্তিত হয়।”-উদ্দীপক ও ‘জাদুঘরে কেন যাব’ প্রবন্ধের আলোকে উক্তিটি বিশ্লেষণ কর।
৩ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. জ্ঞান
আজকের দিনে আলেকজান্দ্রিয়ার মতো মেলানো -মেশানো জাদুঘরের সবচেয়ে বড় দৃষ্টান্ত ব্রিটিশ মিউজিয়ম।
খ. অনুধাবন
নানা বিষয়ে বৈচিত্র্যপূর্ণ জাদুঘর গড়ে ওঠায় এখন আর জাদুঘর বলতে ব্রিটিশ মিউজিয়ম, ল্যুভ বা হার্মিতিয়ের মতো বিশাল প্রাসাদকে বোঝায় না।
আজকের দিনে বৈচিত্র্যপূর্ণ জাদুঘর তৈরি হচ্ছে। এ বৈচিত্র্য একদিকে যেমন সংগ্রহের বিষয়গত তেমনি গঠনগত এবং অন্যদিকে প্রশাসনগত। এমনকি উন্মুক্ত জাদুঘর জিনিসটাও এখন খুবই প্রচলিত, জনসমাদৃত। প্রত্নতত্ত¡, ইতিহাস, নৃতত্ত্ব, উদ্ভিদ উদ্যান এমনকি মৎস্যাধারও এখন জাদুঘর হিসেবে বিবেচ্য। এ কারণে জাদুঘর বলতে আজ আর ব্রিটিশ মিউজিয়াম ল্যুভ বা হার্মিতিয়ের মতো বিশাল প্রাসাদকে বোঝায় না।
গ. প্রয়োগ
উদ্ধৃত উদ্দীপকের মূলবক্তব্যে লাইব্রেরি বৈচিত্র্যের কথা বলা হয়েছে, যা ‘জাদুঘরে কেন যাব’ প্রবন্ধে জাদুঘরের বৈচিত্র্যের দিকটিকে ইঙ্গিত করে।
‘জাদুঘরে কেন যাব’ প্রবন্ধে উপাদানগত, গঠনগত, প্রশাসনগতভাবে বৈচিত্র্যপূর্ণ জাদুঘরের কথা বলা হয়েছে। জাদুঘরের এই বৈচিত্র্যের বিষয়টিকেই ইঙ্গিত করা হয়েছে আলোচ্য উদ্দীপকে। সেখানে অবশ্য বিবেচ্য বিষয় জাদুঘর নয়, লাইব্রেরি।
সভ্যতার উন্নয়ন এবং মানুষের বহুমুখী চাহিদার ফলে লাইব্রেরি হোক আর জাদুঘর হোক কোনোটিই আর সরল নেই। এদের মধ্যে এসেছে নানা বৈচিত্র্য। উদ্দীপকে তাই রয়েছে লাইব্রেরির নানা বৈচিত্র্যের কথা। আছে ভ্রাম্যমাণ লাইব্রেরি কিংবা ই-বুক-এর প্রসঙ্গ। উদ্দীপকে লাইব্রেরির এই বৈচিত্র্য স্মরণ করিয়ে দেয় ‘জাদুঘরে কেন যাব’ প্রবন্ধে বর্ণিত জাদুঘরের বৈচিত্র্যের প্রসঙ্গটি। ফলে প্রবন্ধে বলা হয়েছে জাতীয় জাদুঘর, আঞ্চলিক জাদুঘর কিংবা ব্যক্তিগত জাদুঘরের কথা।
ঘ. উচ্চতর দক্ষতা
অধ্যাপক আনিসুজ্জামান রচিত ‘জাদুঘরে কেন যাব’ প্রবন্ধটিতে জাদুঘরের ক্রমবিবর্তনের কথা বর্ণিত হয়েছে, যা উদ্ধৃত উদ্দীপকটিতেও লাইব্রেরির বিবর্তনে ও বৈচিত্র্যে লক্ষণীয়।
উদ্দীপকে দিনে দিনে লাইব্রেরির কেমন পরিবর্তন হচ্ছে তা দেখানো হয়েছে। লাইব্রেরি এখন আর আগের মতো নেই। তাতে এসেছে নানারকম পরিবর্তন। উদ্দীপকের মতো প্রবন্ধে বর্ণিত জাদুঘরেও এসেছে নানা পরিবর্তন।
‘জাদুঘরে কেন যাব’ প্রবন্ধে খ্রিষ্টপূর্ব তৃতীয় শতকে প্রতিষ্ঠিত আলেকজান্দ্রিয়া জাদুঘর থেকে শুরু করে কীভাবে ক্রমবিবর্তন ও পরিবর্তনের মাধ্যমে জাদুঘরের নানা বৈচিত্র্য সৃষ্টি হয় তা আমরা দেখতে পাই। লাইব্রেরিতেও সেই পরিবর্তন আজ চোখে পড়ে। বর্তমানে লাইব্রেরি বিশাল প্রাসাদে না থেকে যেমন হয়েছে ভ্রাম্যমাণ অন্যদিকে যুক্ত হয়েছে তথ্য প্রযুক্তির স্পর্শ। একইভাবে জাদুঘরও এখন কেবল ব্রিটিশ মিউজিয়মের মতো বিশাল প্রাসাদে আবদ্ধ নয়। উন্মুক্ত জাদুঘরও এখন দেখা যায়।
পরিবর্তন-লাইব্রেরি এবং জাদুঘর উভয় ক্ষেত্রেই সত্য। এ কারণে উদ্দীপক ও ‘জাদুঘরে কেন যাব’ প্রবন্ধের আলোকে বলা যায়, সময়ের সাথে সাথে সকল জিনিসই পরিবর্তিত হয়।
জাদুঘরে কেন যাব
সৃজনশীল প্রশ্ন-০৪
নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং সৃজনশীল প্রশ্নগুলোর উত্তর দাওঃ
রূপম ঢাকার বলধা গার্ডেনে বেড়াতে গেল। সেখানে সে বিভিন্ন জাতের অসংখ্য গাছ দেখতে পেল। কোনো গাছ ঔষধি, কোনো গাছ ফলদ, কোনো গাছে কেবল ফুল ফোটে। তার মনে হলো, এ উদ্যান যেন একটা জীবন্ত জাদুঘর।
ক. বর্তমানে কোন মিউজিয়ামে স্বতন্ত্রভাবে উদ্ভিদ বিজ্ঞান ও জীববিদ্যার জাদুঘর রয়েছে?
খ. উন্মুক্ত জাদুঘর বলতে কী বোঝ?
গ. ‘জাদুঘরে কেন যাব’ প্রবন্ধের সঙ্গে উদ্দীপকের রূপমের দৃষ্টিভঙ্গির তুলনা কর।
ঘ. “উদ্ভিদ উদ্যানও একটি জাদুঘর হতে পারে।” -উদ্দীপক ও ‘জাদুঘরে কেন যাব’ প্রবন্ধের আলোকে মন্তব্যটির সত্যতা নিরূপণ কর।
৪ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. জ্ঞান
বর্তমানে ব্রিটিশ মিউজিয়মে স্বতন্ত্রভাবে উদ্ভিদ বিজ্ঞান ও জীববিদ্যার জাদুঘর রয়েছে।
খ. অনুধাবন
বিশাল বা সাধারণ প্রাসাদে অবস্থিত না হয়ে যে জাদুঘর উন্মুক্ত পরিবেশে অবস্থিত, তাকে উন্মুক্ত জাদুঘর বলা যায়।
আজকের দিনে জাদুঘরের আছে নানা বৈচিত্র্য। আগের মতো জাদুঘর বলতে আজ আর ব্রিটিশ মিউজিয়াম, ল্যুভ বা হার্মিতিয়ের মতো বিশাল প্রাসাদ বোঝায় না। উদ্ভিদ উদ্যান, চিড়িয়াখানা কিংবা নক্ষত্রশালা জাদুঘর হিসেবে বিবেচ্য। এগুলো গড়ে ওঠে উন্মুক্ত পরিবেশে এবং এ ধরনের জাদুঘরকে বলা যায় উন্মুক্ত জাদুঘর।
গ. প্রয়োগ
অধ্যাপক আনিসুজ্জামান রচিত ‘জাদুঘরে কেন যাব’ প্রবন্ধে জাদুঘরকে কোনো নির্দিষ্ট কাঠামোয় না ফেলে এর বৈচিত্র্যকে স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে, যে মনোভাবের পরিচয় পাওয়া যায় রূপমের দৃষ্টিভঙ্গিতে।
উদ্দীপকের রূপম তার নিজস্ব মনোভাবের কারণে জাতীয় উদ্যানকে একটা জীবন্ত জাদুঘর হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। ‘জাদুঘরে কেন যাব’ প্রবন্ধে এই একই মনোভাবের কারণে বলা হয়েছে মৎস্যাধার ও নক্ষত্রশালাও এখন জাদুঘর হিসেবে বিবেচিত।
উদ্দীপকের রূপম বলধা গার্ডেনের অসংখ্য গাছ দেখে বিস্মিত হয়েছে। তার মনে হয়েছে এটিও এক ধরনের জাদুঘর। এ হলো উদ্ভিদের জীবন্ত জাদুঘর। এই একই মনোভাব প্রকাশ পেয়েছে প্রবন্ধে। যেখানে প্রাবন্ধিক বলেছেন জাদুঘরের বৈচিত্র্য আজ খুবই চোখে পড়ে। জাদুঘর বলতে আজ আর ব্রিটিশ মিউজিয়ম বা হার্মিতিয়ের মতো বিশাল প্রাসাদকে বোঝায় না। আর এভাবেই প্রাবন্ধিকের দৃষ্টিভঙ্গির সঙ্গে রূপমের দৃষ্টিভঙ্গি অভিন্ন হয়ে গেছে।
ঘ. উচ্চতর দক্ষতা
আধুনিক যুগে যেকোনো বিষয় নিয়ে জাদুঘর তৈরি হচ্ছে-এ কথার সমর্থন রয়েছে ‘জাদুঘরে কেন যাব’ প্রবন্ধে এবং এই একই মনোভাবের কারণে উদ্দীপকেও একটি উদ্ভিদ উদ্যানকে জাদুঘর হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে।
উদ্দীপকের রূপম বলধা গার্ডেনে গিয়ে বিভিন্ন শ্রেণির উদ্ভিদ দেখে বিস্মিত হয়েছে। তার মনে হয়েছে এটি কেবল উদ্যান নয়, এ উদ্যান যেন একটা জীবন্ত জাদুঘর। অর্থাৎ, রূপমের চেতনায় একটি উদ্ভিদ উদ্যান জাদুঘরে পরিণত হয়েছে। প্রবন্ধেও রয়েছে এ মতের সমর্থন।
উদ্দীপকের মতো প্রবন্ধেও জাদুঘর সম্পর্কিত ধারণাকে কোনো বিশেষ গণ্ডিতে বাঁধা হয়নি। প্রাবন্ধিকের মতে, আজ ভিন্ন ভিন্ন বিষয়ের জাদুঘর গড়ে তোলার চেষ্টাই প্রবল। প্রত্নতত্ত¡ ও ইতিহাস, মানববিকাশ ও নৃতত্ত্ব, পরিবেশ, কৃষি, উদ্ভিদ বিজ্ঞান, জীবতত্ত¡ ইত্যাদি বিষয় এখন জাদুঘরের বিষয় হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। এমনকি মৎস্যাধার ও নক্ষত্রশালাও এখন জাদুঘর বলে বিবেচিত। প্রবন্ধ ও উদ্দীপক উভয় ক্ষেত্রেই জাদুঘরের বিষয়গত বৈচিত্র্যকে স্বীকার করা হয়েছে। উদ্দীপকের রূপমের চেতনায় জাতীয় উদ্যান যেন একটা জীবন্ত জাদুঘর। অন্যদিকে প্রাবন্ধিক যে সকল বিষয় নিয়ে জাদুঘর তৈরি হতে পারে বলে মনে করেন, তার মধ্যে উদ্ভিদ উদ্যান রয়েছে।
উদ্দীপক ও ‘জাদুঘরে কেন যাব’ প্রবন্ধের আলোকে উদ্ভিদ উদ্যানও একটি জাদুঘর হতে পারে। উক্তিটি সর্বাংশে সত্য।
জাদুঘরে কেন যাব
সৃজনশীল প্রশ্ন-০৫
নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং সৃজনশীল প্রশ্নগুলোর উত্তর দাওঃ
আমরা বাঙালি! আমাদের ইতিহাস-ঐতিহ্য পরিবর্তনশীল ও বৈচিত্র্যময়। এখানে এক সময় বৌদ্ধদের প্রভাব-প্রতিপত্তি ছিল। এরপর শুরু হয় হিন্দুদের লৌকিক পৌরাণিক দেব-দেবীর প্রভাব। মুসলিম শাসনও এদেশে চলেছে দীর্ঘদিন। যে সকল ঐতিহাসিক নিদর্শন এদেশে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে ছিল, এর বেশ কিছু সংগৃহীত হয়েছে বিভিন্ন জাদুঘরে। এসব সংরক্ষিত নির্দশন প্রদর্শনের মাধ্যমে আমরা বাঙালি হিসেবে নিজেদের আত্মপরিচয় লাভ করতে পারি।
ক. ঈসা খাঁর কামানের গায়ে কী লেখা দেখে লেখক মুগ্ধ হয়েছিলেন?
খ. ‘জাদুঘরে কেন যাব’ প্রবন্ধে লেখক কীভাবে প্রথম বাঙালির আত্মপরিচয় লাভ করেছিলেন? ব্যাখ্যা দাও।
গ. উদ্দীপকটি ‘জাদুঘরে কেন যাব’ প্রবন্ধের কোন দিকটিকে ইঙ্গিত করে? -বুঝিয়ে দাও।
ঘ. ‘জাদুঘর থেকে আমরা বাঙালির আত্মপরিচয় লাভ করতে পারি।’-উদ্দীপক এবং ‘জাদুঘরে কেন যাব’ প্রবন্ধের আলোকে উক্তিটি বিশ্লেষণ কর।
৫ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. জ্ঞান
ঈসা খাঁর কামানের গায়ে বাংলা লেখা দেখে লেখক মুগ্ধ হয়েছিলেন।
খ. অনুধাবন
ঢাকা জাদুঘরে বাংলার হাজার বছরের ইতিহাস ও সমৃদ্ধ সংস্কৃতির বিভিন্ন নিদর্শন দেখে ‘জাদুঘরে কেন যাব’ প্রবন্ধের লেখক প্রথম বাঙালির আত্মপরিচয় লাভ করেছিলেন।
লেখক অল্প বয়সে ঢাকা জাদুঘরে গিয়ে বাংলার স্থাপত্য ও ভাস্কর্যের সঙ্গে প্রথম পরিচিত হন। তিনি দেখতে পান বৌদ্ধমূর্তি, অসংখ্য লৌকিক ও পৌরাণিক দেব-দেবীর মূর্তি। দেখতে পান মুসলিম যুগের মুদ্রা, অস্ত্রশস্ত্র, এবং ব্রিটিশ আমলের নীল জাল দেয়ার কড়াই। এসব ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক উপাদান থেকে লেখক বুঝতে পারেন হাজার বছর ধরে বাঙালির জীবন কেমন বিবর্তিত হচ্ছে।
গ. প্রয়োগ
‘জাদুঘরে কেন যাব’ প্রবন্ধে বাঙালির ইতিহাস ও সংস্কৃতির বিবর্তন এবং জাদুঘর প্রদর্শনে লেখকের যে ধারণা লাভের বিষয়টি বর্ণিত হয়েছে তা আলোচ্য উদ্দীপকেও ইঙ্গিত করা হয়েছে।
লেখক জাদুঘর দেখতে গিয়ে সেখানকার বৌদ্ধ নিদর্শন, পৌরাণিক নিদর্শন, মুসলিম শাসনের নানা নিদর্শন দেখে বাঙালির ইতিহাসের বিবর্তন এবং বাঙালির আত্মপরিচয় লাভ করেন। উদ্ধৃত উদ্দীপকের মূলবক্তব্যে বাঙালির ইতিহাসের বিবর্তন এবং আত্মপরিচয় লাভের উল্লেখ রয়েছে।
উদ্দীপকে বলা হয়েছে, বাঙালির ইতিহাস পরিবর্তনশীল ও বৈচিত্র্যময়। কীভাবে ক্রমান্বয়ে বৌদ্ধ-হিন্দু-মুসলিমের প্রভাব এদেশে পড়েছে তার ইঙ্গিত আছে সেখানে। জাদুঘরে সংরক্ষিত নানা ঐতিহাসিক নিদর্শনের মাধ্যমে আমরা যে বাঙালির আত্মপরিচয় পেতে পারি, সে মন্তব্যও আছে উদ্দীপকটিতে। উদ্দীপকের মতো মূল রচনাতেও দেখি লেখক ঢাকা জাদুঘরে রক্ষিত বাঙালির হাজার বছরের ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক নিদর্শন দেখে বাঙালির আত্মপরিচয় লাভ করেছেন। আর এ বিষয়টিই নির্দেশিত হয়েছে আলোচ্য উদ্দীপকে।
ঘ. উচ্চতর দক্ষতা
অধ্যাপক আনিসুজ্জামান-এর ‘জাদুঘরে কেন যাব’ প্রবন্ধে জাদুঘরের মাধ্যমে বাঙালির আত্মপরিচয় লাভের যে বিষয়টি বর্ণিত হয়েছে উদ্ধৃত উদ্দীপকটিতেও তা উপস্থাপিত হয়েছে।
উদ্দীপকে সরাসরি বলা হয়েছে, জাদুঘরে সংরক্ষিত নিদর্শন থেকে বাঙালি হিসেবে আমারা আত্মপরিচয় লাভ করতে পারি। ‘জাদুঘরে কেন যাব’ প্রবন্ধেও রয়েছে এ বক্তব্যের সমর্থন।
‘জাদুঘরে কেন যাব’ প্রবন্ধে দেখি লেখক ঢাকা জাদুঘরে বেড়াতে গিয়ে বাঙালির হাজার বছরের ঐতিহাসিক নিদর্শন দেখে আত্মপরিচয় লাভ করেছেন। অন্যদিকে ঐতিহাসিক নিদর্শন সংগ্রহ ও সংরক্ষণের মাধ্যমে কীভাবে আত্মপরিচয় লাভ করতে পারি তার নির্দেশ বর্তমান। উদ্দীপক থেকে জানতে পাই, বাঙালির বৈচিত্র্যময় ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক নিদর্শন সারাদেশে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে। জাদুঘরে এগুলো সংগৃহীত হয়। আর এগুলো থেকেই আমরা লাভ করি আমাদের আত্মপরিচয়।
‘জাদুঘরে কেন যাব’ প্রবন্ধে লেখক ঢাকা জাদুঘরে বৌদ্ধ নিদর্শন, পৌরাণিক-লৌকিক নিদর্শন, মুসলিম শাসনামলের নিদর্শন দেখে বিস্মিত হয়েছেন এবং প্রথমবারের মতো লাভ করেছেন বাঙালির আত্মপরিচয়। আর উদ্দীপক ও প্রবন্ধ দুইদিক থেকে প্রতীয়মান হয় জাদুঘর থেকে আমরা আমাদের আত্মপরিচয় লাভ করতে পারি।
জাদুঘরে কেন যাব
সৃজনশীল প্রশ্ন-০৬
নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং সৃজনশীল প্রশ্নগুলোর উত্তর দাওঃ
জনাব দবিরউদ্দিন একজন স্কুলশিক্ষক। তিনি শিক্ষার্থীদের ইতিহাস পড়ান। শিক্ষার্থীদের তিনি জাদুঘরে বেড়াতে যেতে বলেন। তাঁর মতে, ইতিহাস পড়ে আমরা অনেক বিষয় জানতে পারি, আর জাদুঘরে নানা ঐতিহাসিক নিদর্শন দেখে সহজে তা জানা সম্ভব। কারণ এতে ইতিহাসকে অনেকটা স্বচক্ষে দেখতে পাওয়া যায়।
ক. বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর কোন নামে যাত্রা শুরু করে?
খ. ঢাকা জাদুঘরে লেখক কীভাবে বাঙালি আত্মপরিচয় লাভ করেছিলেন? ব্যাখ্যা দাও।
গ. ‘জাদুঘর’ সম্পর্কে ‘জাদুঘরে কেন যাব’ প্রবন্ধের লেখকের দৃষ্টিভঙ্গির সঙ্গে উদ্দীপকের দবিরউদ্দিন সাহেবের দৃষ্টিভঙ্গির সাদৃশ্য দেখাও।
ঘ. ‘জাদুঘরের একটা প্রধান কাজ হলো জাতিকে আত্মপরিচয় দানের সূত্র জানানো।’- উদ্দীপক ও ‘জাদুঘরে কেন যাব’ প্রবন্ধের আলোকে উক্তিটির যথার্থতা নিরূপণ কর।
৬ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. জ্ঞান
বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর ‘ঢাকা জাদুঘর’ নামে যাত্রা শুরু করে।
খ. অনুধাবন
বাঙালির হাজার বছরের ইতিহাস ও ঐতিহ্যের নানা নিদর্শন দেখে ঢাকা জাদুঘরে লেখক বাঙালির আত্মপরিচয় লাভ করেছিলেন।
‘জাদুঘরে কেন যাব’ প্রবন্ধের লেখক আনিসুজ্জামান অল্প বয়সে ঢাকা জাদুঘরে যান। সেখানে তিনি বাঙালির হাজার বছরের নানা ঐতিহাসিক স্থাপত্য, ভাস্কর্য, মুদ্রা ও অস্ত্রশস্ত্র দেখতে পান। তিনি দেখতে পান বৌদ্ধমূর্তি, পৌরাণিক দেব-দেবীর মূর্তি, ইসা খাঁর কামানের গায়ের বাংলা লেখা, নীল জালের কড়াই। এ সকল নিদর্শন লেখকের চেতনায় বাঙালির ইতিহাসকে স্পষ্ট করে তোলে। আর এভাবেই তিনি লাভ করেন বাঙালির আত্মপরিচয়।
গ. প্রয়োগ
‘জাদুঘরে কেন যাব’ প্রবন্ধে লেখক জাদুঘরকে জাতির আত্মপরিচয় লাভের সূত্র হিসেবে অভিহিত করেছেন। অন্যদিকে উদ্দীপকের দবিরউদ্দিন সাহেবের মনোভাবও অনেকটাই সেই রকম।
বাংলাদেশের জাদুঘরগুলোতে এদেশের হাজার বছরের ইতিহাস, সংস্কৃতির নানা উপাদান সংগৃহীত, সংরক্ষিত ও প্রদর্শিত হয়। এগুলো উন্মোচন করে বাঙালির আত্মপরিচয়। ‘জাদুঘরে কেন যাব’ প্রবন্ধে লেখক তাই জাদুঘরকে আত্মপরিচয় লাভের মাধ্যম হিসেবে বিবেচনা করেছেন। উদ্দীপকের দবিরউদ্দিন সাহেবও একই রকম দৃষ্টিভঙ্গি পোষণ করেন।
উদ্দীপকের স্কুলশিক্ষক দবিরউদ্দিন সাহেব শিক্ষার্থীদের জাদুঘরে বেড়াতে যেতে উৎসাহিত করেন। তাঁর মতে ইতিহাস পড়ে যতটুকু জানা যায়, তার চেয়ে জাদুঘরে ঐতিহাসিক নিদর্শনগুলো স্বচক্ষে দেখে আরও ভালোভাবে সে বিষয়গুলো জানা যায়। অনেকটা একইরকম দৃষ্টিভঙ্গি লক্ষ করি ‘জাদুঘরে কেন যাব’ প্রবন্ধের ক্ষেত্রে। সেখানে প্রাবন্ধিক ঢাকা জাদুঘর দেখে প্রথমবারের মতো বাঙালি আত্মপরিচয় লাভের কথা বলেছেন। তাঁর মতে বৌদ্ধমূর্তি, দেব-দেবীর মূর্তি মুসলিম শাসনামলের নানা ঐতিহাসিক নিদর্শন তাঁকে আত্মপরিচয় লাভ করিয়ে দেয়। আসলে এ দৃষ্টিভঙ্গির সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ দবিরউদ্দিন সাহেবের দৃষ্টিভঙ্গিও।
ঘ. উচ্চতর দক্ষতা
জ্ঞানদান, আনন্দদানের পাশাপাশি জাদুঘরের একটা প্রধান কাজ হলো জাতিকে আত্মপরিচয় দানের সূত্র জানানো। এ বক্তব্যের সমর্থন আছে আলোচ্য উদ্দীপক ও ‘জাদুঘরে কেন যাব’ প্রবন্ধে।
উদ্দীপকের দবিরউদ্দিন সাহেব বিশ্বাস করেন, জাদুঘরে গিয়ে আমরা ইতিহাস অনেকটা স্বচক্ষে দেখতে পারি, যা আত্মপরিচয় লাভের নামান্তর, অন্যদিকে প্রাবন্ধিকও জাদুঘরকে আত্মপরিচয় লাভের সূত্র হিসেবে বিবেচনা করেন।
জাদুঘরের কাজ বহুবিধ। এটি মানুষকে যেমন জ্ঞান দান করে তেমনি আনন্দও দান করে। তবে এর প্রধান কাজ জাতিকে আত্মপরিচয় দানের সূত্র জানানো। ‘জাদুঘরে কেন যাব’ প্রবন্ধে বলেছেন-জাতীয় জাদুঘরে মানুষ তার নিজের ও জাতির স্বরূপ উপলব্ধি করতে পারে। অন্যদিকে উদ্দীপকে দবিরউদ্দিন সাহেবও জাদুঘরে ইতিহাসকে স্বচক্ষে দেখতে পাওয়ার কথা ব্যক্ত করেন। প্রাবন্ধিকের মতে, জাতীয় জাদুঘর একটা জাতিসত্তার পরিচয় বহন করে। তিনি নিজেও জাতীয় জাদুঘর দেখে প্রথম বাঙালির আত্মপরিচয় লাভ করেছিলেন। অন্যদিকে দবিরউদ্দিন সাহেব তার শিক্ষার্থীদের জাদুঘরে যেতে উৎসাহিত করেন। কারণ তিনিও জানেন শিক্ষার্থীরা এর মাধ্যমে সহজেই জাতির ইতিহাস জানতে পারবে।
পরিশেষে বলা যায়, উদ্দীপক ও প্রবন্ধের বক্তব্য মূলত এ সমর্থনই দেয় যে-‘জাদুঘরের একটা প্রধান কাজ জাতিকে আত্মপরিচয়ের সূত্র জানানো।’ সুতরাং প্রশ্নোক্ত উক্তিটি যথার্থ।
জাদুঘরে কেন যাব
সৃজনশীল প্রশ্ন-০৭
নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং সৃজনশীল প্রশ্নগুলোর উত্তর দাওঃ
দেশ বিভাগের সময় কাঞ্চননগরের জমিদার কলকাতায় চলে গেলে তার দূরসম্পর্কের ভাগ্নে পরিত্যক্ত জমিদার বাড়িতে জমিদারি আমলের নানা আসবাব সামগ্রী, যুদ্ধাস্ত্র, তৈলচিত্র, বইপত্র ইত্যাদি সংরক্ষণ করেন। ক্রমান্বয়ে কাঞ্চননগরের শিক্ষিত-সচেতন জনসমাজ তার এ কাজে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেয়। এতে করে জমিদার আমলেরও পূর্বের নানা দর্শনীয় প্রত্নবস্তু ও পুরাকীর্তি সংগৃহীত হয়ে কাঞ্চননগর জাদুঘরের সৃষ্টি হয়। পরবর্তীতে সরকারের প্রত্নতত্ত¡বিভাগ জাদুঘরটির দায়িত্ব গ্রহণ করে দর্শনীর বিনিময়ে সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়।
ক. কখন আলেকজান্দ্রিয়ায় জাদুঘর স্থাপিত হয়েছিল?
খ. ফরাসি বিপ্লব বলতে কী বোঝ? বর্ণনা কর।
গ. উদ্দীপকের প্রথম দিককার কর্মপ্রয়াস ‘জাদুঘরে কেন যাব’ রচনার কোন দিকটিকে নির্দেশ করে? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উদ্দীপকটিতে জাদুঘর প্রতিষ্ঠার ক্রমবিবর্তনের ইতিহাস ফুটে উঠেছে। মন্তব্যটির পক্ষে তোমার মতামত দাও।
৭ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. জ্ঞান
খ্রিষ্টপূর্ব তৃতীয় শতাব্দীতে আলেকজান্দ্রিয়ায় জাদুঘর স্থাপিত হয়েছিল।
খ. অনুধাবন
১৭৮৯ সালে সংঘটিত ফরাসি বিপ্লব ইউরোপের প্রথম বুর্জোয়া বিপ্লব।
১৭৮৯ সালের ১৪ জুলাই ফরাসি জনগণ সেখানকার কুখ্যাত বাস্তিল দুর্গ ও কারাগার দখল করে নেয় এবং সমস্ত বন্দিকে মুক্তি দেয়। এর মাধ্যমে এই বিপ্লবের সূচনা হয়। এই বিপ্লবে নেতৃত্ব দেয় ধনিকশ্রেণি আর অত্যাচারিত কৃষকরা ছিল তাদের সহযোগী। বিপ্লবের মূল বাণী ছিল ‘সাম্য, স্বাধীনতা, মৈত্রী ও সম্পত্তির পবিত্র অধিকার’ এই বিপ্লবের ফলে সামন্তবাদের উৎপাটন হয়।
গ. প্রয়োগ
উদ্দীপকের প্রথম দিককার কর্মপ্রয়াস ‘জাদুঘরে কেন যাব’ রচনার অবস্থাসম্পন্ন ব্যক্তি বা পরিবারের উদ্যোগ জাদুঘর গড়ার প্রাথমিক স্তরের দিকটিকে নির্দেশ করে।
মানুষ সৃষ্টির সেরা জীব। সে শুধু খাওয়া-পরা আর বিনোদনে তার জীবন ব্যয় করে না। সে জগতে এমন কিছু করে যা তাকে স্মরণীয় করে রাখবে। পাশাপাশি সে তার পূর্বপুরুষ ও তাদের কালকে স্মরণ রাখতে নানা ব্যবস্থা গ্রহণ করে। জাদুঘর প্রতিষ্ঠা এমনই এক ব্যক্তিগত ও সামাজিক প্রচেষ্টা। জাদুঘরকে এ কারণে একটা শক্তিশালী সামাজিক সংগঠন বলা হয়।
উদ্দীপকে দেখা যায়, কাঞ্চননগরের জমিদারের পরিত্যক্ত বাড়িতে তার দূরসম্পর্কের এক ভাগ্নে একটি জাদুঘর প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টা চালান। এরপর কাঞ্চননগরের শিক্ষিত-সচেতন জনসমাজ এ কাজে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিলে কাঞ্চননগর জাদুঘরের সৃষ্টি হয়। উদ্দীপকের এ বিষয়টি ‘জাদুঘরে কেন যাব’ রচনায় জাদুঘর প্রতিষ্ঠার প্রাথমিক স্তর হিসেবে দেখানো হয়েছে। বলা হয়েছে, কালক্রমে প্রাচীন জিনিসপত্র সম্পর্কে মানুষের আগ্রহ বাড়ছিল এবং অবস্থাসম্পন্ন ব্যক্তি বা পরিবারের উদ্যোগে তা সংগৃহীত হয়ে জাদুঘর গড়ার ভিত্তি রচনা করছিল। নবনির্মিত এসব জাদুঘরই জনসাধারণের জন্য অবারিত হয় গণতন্ত্রের বিকাশের ফলে কিংবা বিপ্লবের সাফল্যে। অর্থাৎ, উদ্দীপকে ‘জাদুঘরে কেন যাব’ রচনার জাদুঘর প্রতিষ্ঠার প্রাথমিক স্তরের প্রতি নির্দেশ করা হয়েছে।
ঘ. উচ্চতর দক্ষতা
উদ্দীপকটিতে জাদুঘর প্রতিষ্ঠার ক্রমবিবর্তনের ইতিহাস ফুটে উঠেছে-শীর্ষক মন্তব্যের সাথে আমি একমত পোষণ করি।
জাদুঘর হলো যেখানে পুরাতত্ত¡বিষয়ক ও অন্যান্য বহু প্রকার অদ্ভুত ও কৌতূহলোদ্দীপক প্রাকৃতিক ও শিল্পবিজ্ঞানজাত বস্তু সংরক্ষিত থাকে। এভাবে জাদুঘর ইতিহাস ও ঐতিহ্য, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি ইত্যাদি সম্পর্কিত জ্ঞান ও তথ্যের সঙ্গে জনগণকে আকৃষ্ট ও সম্পৃক্ত করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
উদ্দীপকে আমরা একটি জাদুঘরের উন্মেষ থেকে তার পরিপূর্ণ রূপ দেখতে পাই। কাঞ্চননগরের জমিদারের পরিত্যক্ত বাড়িতে জমিদারি আমলের নানা বিষয়বস্তু সংরক্ষণ করে জামিদারের দূরসম্পর্কের ভাগ্নে একটি জাদুঘর প্রতিষ্ঠা করে। ক্রমে কাঞ্চননগরের শিক্ষিত-সচেতন জনসমাজ জাদুঘরটির সমৃদ্ধি ও শ্রী-বৃদ্ধিতে তাদের সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়। নানা দর্শনীয় প্রত্নবস্তু ও পুরাকীর্তিতে সৃষ্টি হয় কাঞ্চননগর জাদুঘর। পরবর্তীতে সরকারের প্রত্নতত্ত¡ বিভাগ জাদুঘরটির দায়িত্ব গ্রহণ করে দর্শনীর বিনিময়ে সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়। উদ্দীপকের এ বিষয়টিতে ‘জাদুঘরে কেন যাব’ রচনার প্রারম্ভে জাদুঘর প্রতিষ্ঠার ইতিহাস তুলে ধরা হয়েছে।
‘জাদুঘরে কেন যাব’ রচনার শুরুতে ব্যক্তিগত ও পারিবারিক প্রচেষ্টায় জাদুঘরের ভিত্তি স্থাপনের কথা বলা হয়েছে। এরপর গণতন্ত্রায়ন বা বিপ্লবের মাধ্যমে জনগণের জন্য তা উন্মুক্ত হওয়ার ইতিহাস বিবৃত হয়েছে। শেষাবধি এসব ব্যক্তিগত সংগ্রহের দায়িত্বভার রাষ্ট্র গ্রহণ করে তা সকলের গোচরীভূত করার ব্যবস্থা গ্রহণের কথা বলা হয়েছে। খ্রিষ্টপূর্ব তৃতীয় শতক থেকে বিংশ শতক পর্যন্ত জাদুঘর প্রতিষ্ঠার এমনই ক্রমবিবর্তনে যে-ইতিহাস তুলে ধরা হয়েছে, তা প্রদত্ত উদ্দীপকে যথার্থভাবে প্রতিফলিত হয়েছে।
জাদুঘরে কেন যাব
সৃজনশীল প্রশ্ন-০৮
নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং সৃজনশীল প্রশ্নগুলোর উত্তর দাওঃ
শাহাদাত তখন রংপুরের শীর্ষস্থানীয় একটি মাদরাসায় বাংলার শিক্ষক হিসেবে কর্মরত। মাদরাসার কার্যকরী কমিটির বৈঠকের আলোচ্যসূচির মধ্যে ‘বাউন্ডারি ওয়াল’ নির্মাণ সংক্রান্ত একটি আলোচনা ছিল। শাহাদাত নোটিস খাতায় ‘বাউন্ডারি ওয়াল’-এর পরিবর্তে ‘সীমানা প্রাচীর’ লিখেছিল। মাদরাসার প্রিন্সিপাল এবং কার্যকরী কমিটির সভাপতি এ বিষয়ে প্রবল আপত্তি তুললেন। শাহাদাত যতই বোঝাতে চায়, তারা ততই বিরক্ত ও রাগান্বিত হন। শেষাবধি ‘সীমানা প্রাচীর’ শব্দটি কেটে দিয়ে ‘বাউন্ডারি ওয়াল’ লিখে শাহাদাত তার চাকরি বাঁচায়।
ক. ‘জাদুঘরে কেন যাব’ প্রবন্ধে শিক্ষকপ্রতিম অর্থমন্ত্রীর নাম কী?
খ. টাওয়ার অব লন্ডন বলতে কী বোঝ?
গ. উদ্দীপকের শাহাদাতের মধ্যে ‘জাদুঘরে কেন যাব’ রচনার কোন বিষয়টি প্রতিফলিত হয়েছে? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উদ্দীপক ও ‘জাদুঘরে কেন যাব’ রচনার উভয়ক্ষেত্রেই ব্যক্তিমনের সংকীর্ণতা ফুটে উঠেছে-মন্তব্যটির যথার্থতা মূল্যায়ন কর।
৮ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. জ্ঞান
‘জাদুঘরে কেন যাব’ প্রবন্ধে শিক্ষকপ্রতিম অর্থমন্ত্রীর নাম ড. এম. এন. হুদা।
খ. অনুধাবন
‘টাওয়ার অব লন্ডন’ হলো লন্ডনের টেমস নদীর উত্তর তীরবর্তী রাজকীয় দুর্গ।
‘টাওয়ার অব লন্ডন’-এর মূল অংশে রয়েছে সাদা পাথরের গম্বুজ। এটি নির্মিত হয় ১০৭৮ খ্রিষ্টাব্দে। এক সময় দুর্গটি রাজকীয় ভবন ও রাষ্ট্রীয় কারাগার হিসেবে ব্যবহৃত হতো। বর্তমানে অস্ত্রশালা ও জাদুঘর হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।
গ. প্রয়োগ
উদ্দীপকের শাহাদাতের মধ্যে ‘জাদুঘরে কেন যাব’ রচনার লেখকের ‘যঃ পলায়েতে স জীবতি’র বিষয়টি প্রতিফলিত হয়েছে।
পরিভাষা, প্রতিশব্দ, প্রয়োগে নানা সুবিধা ও সম্ভাবনার সাথে অনাকাক্সিক্ষত নানা অসুবিধা ও বিড়ম্বনারও সৃষ্টি হয়। বিশেষত লেখকের চেয়ে পাঠক যখন অতিরিক্ত ক্ষমতাবান হন তখন বিড়ম্বনা চরমে উঠতে পারে। উদ্দীপক ও ‘জাদুঘরে কেন যাব’ রচনায় এমনই বিড়ম্বনার চিত্র অঙ্কিত হয়েছে।
উদ্দীপকে মাদরাসার কার্যকরী কমিটির সভার অন্যতম আলোচ্যসূচি ‘বাউন্ডারি ওয়ালকে’ সীমানা প্রাচীর লেখায় শাহাদাতকে ভীষণ বিড়ম্বনার মুখোমুখি হতে হয়েছে। সে যতই বোঝাতে চায় কর্তৃপক্ষ ততই বিরক্ত ও ক্ষুব্ধ হয়। শেষাবধি ‘সীমানা প্রাচীর’ শব্দটি কেটে দিয়ে ‘বাউন্ডারি ওয়াল’ লিখে তার চাকরি বাঁচান। উদ্দীপকের শাহাদাতের মতো ‘জাদুঘরে কেন যাব’ রচনায় ‘মিউজিয়ম’-এর বাংলা প্রতিশব্দ জাদুঘরই হবে বলে লেখক পূর্ব-পাকিস্তানের তৎকালীন গভর্নর এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর মোনায়েম খানের বিরাগভাজন হন। লেখক যতই বোঝান বিস্ময় জাগায় অর্থে ‘জাদু’ শব্দটির প্রয়োগ হয়েছে, গভর্নর ততই ক্ষুব্ধ হতে থাকেন। শেষে তর্ক করা বৃথা- হুকুম শিরোধার্য করে তিনি চ্যান্সেলরের সামনে থেকে পালিয়ে বাঁচেন।
ঘ. উচ্চতর দক্ষতা
উদ্দীপক ও ‘জাদুঘরে কেন যাব’ রচনার উভয়ক্ষেত্রেই ব্যক্তিমনের সংকীর্ণতা ফুটে উঠেছে- শীর্ষক মন্তব্যটি যথার্থ।
ইংরেজি ‘মিউজিয়ম’-এর বাংলা প্রতিশব্দ ‘জাদুঘর’। জাদুঘর একটি মিশ্র শব্দ। ‘জাদু’ শব্দটা ফারসি আর ঘরটা বাংলা। ‘জাদু’ শব্দটি বাংলা ভাষায় একটু বিভ্রান্তির সৃষ্টি করে। কেননা, জাদু শব্দে দ্যোতনা আছে দুরকম; একদিকে কুহক, ইন্দ্রজাল, ভেলকি; অন্যদিকে চমৎকার, মনোহর, কৌতূহলোদ্দীপক।
উদ্দীপকে আমরা দেখি, মাদরাসার কার্যকরী কমিটির সভার অন্যতম আলোচ্যসূচি ‘বাউন্ডারি ওয়ালকে’ ‘সীমানা প্রাচীর’ লেখায় শাহাদাত বিড়ম্বনার শিকার হন। শাহাদাত ‘সীমানা প্রাচীন’ লেখার যৌক্তিকতা যতই বোঝাতে থাকেন মাদরাসার প্রিন্সিপাল ও কমিটির সভাপতি ততই বিরক্ত ও রাগান্বিত হতে থাকেন। ‘জাদুঘরে কেন যাব’ রচনায় মিউজিয়ামকে জাদুঘর বলায় লেখকের প্রতি তৎকালীন পূর্ব-পাকিস্তানের গভর্নর ও চ্যান্সেলরকে এমনই রাগান্বিত হতে দেখি।
উদ্দীপকের মাদরাসা কর্তৃপক্ষ সংস্কৃতঘেঁষা বাংলার ‘সীমানা প্রাচীর’ থেকে ইংরেজি ‘বাউন্ডারি ওয়াল’-এ স্বস্তি খুঁজেছেন। ‘জাদুঘরে কেন যাব’ রচনায় দ্বিজাতিতত্তে¡ বিশ্বাসী গভর্নর সাহেবও তেমনি বাংলায় হিন্দু-মুসলমান নির্বিশেষে ব্যবহৃত ‘জাদুঘর’-এর স্থলে ‘মিউজিয়ম’ শব্দের প্রয়োগে জাতিকে উদ্ধার করার চেষ্টা চালিয়েছেন। এতে করে মূলত উভয়ক্ষেত্রেই ব্যক্তিমনের সংকীর্ণতা ফুটে উঠেছে।
জাদুঘরে কেন যাব
সৃজনশীল প্রশ্ন-০৯
নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং সৃজনশীল প্রশ্নগুলোর উত্তর দাওঃ
রাইসারা খালাতো ফুফাতো ভাইবোন সবাই গতকাল দল বেঁধে ঢাকা জাতীয় জাদুঘরে গিয়েছিল। জাদুঘরে সংরক্ষিত মানুষের উদ্ভাবন নৈপুণ্যে তারা বিস্মিত হয়েছে, আনন্দ পেয়েছে। ইসা খাঁর কামান, নবাব সিরাজ উদ-দৌলার তরবারি দেখে দেশের প্রাচীন গৌরবে উদ্দীপ্ত হয়েছে। আর বাংলাদেশের নানা মানচিত্রে দেশের নানা কৃষিজ, খনিজ শিল্প-সামগ্রীর বর্ণনায় প্রচুর জ্ঞানও অর্জন করেছে। সুদূর বাগদাদের আব্বাসীয় আমলের মুদ্রা বা মহিশুরের টিপু সুলতানের তরবারি তাদেরকে জাতীয় চেতনার সাথে সাথে বৈশ্বিক বা আন্তর্জাতিক চেতনাতেও উদ্বুদ্ধ করেছে।
ক. কোহিনুর দেখতে সকলে কোথায় ভিড় করে?
খ. বঙ্গবন্ধু জাদুঘর সম্পর্কে বর্ণনা দাও।
গ. ইসা খাঁর কামান আর নবাব সিরাজ উদ-দৌলার তরবারি ‘জাদুঘরে কেন যাব’ রচনার মতে কোন চেতনার জন্ম দেয়?
ঘ. উদ্দীপকে ‘জাদুঘরে কেন যাব’ রচনার মূলকথা বা শিক্ষণীয় অংশটুকু যথার্থরূপে প্রকাশ পেয়েছে। -মন্তব্যটি মূল্যায়ন কর।
৯ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. জ্ঞান
কোহিনুর দেখতে সকলে টাওয়ার অব লন্ডনে ভিড় করে।
খ. অনুধাবন
স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ রাষ্ট্রের স্থপতি, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতিবিজড়িত জাদুঘরকে বঙ্গবন্ধু জাদুঘর বলে।
বঙ্গবন্ধু জাদুঘর ঢাকার ধানমন্ডি আবাসিক এলাকায় অবস্থিত। এই জাদুঘরে বঙ্গবন্ধুর জীবনের বিভিন্ন পর্যায়ের অনেক দুর্লভ ছবি, তাঁর জীবনের শেষ সময়ের কিছু স্মৃতিচিহ্ন এবং তাঁর ব্যবহৃত বিভিন্ন সামগ্রী প্রদর্শনের জন্য রাখা হয়েছে।
গ. প্রয়োগ
ঈসা খাঁর কামান আর নবাব সিরাজ উদ-দৌলার তরবারি ‘জাদুঘরে কেন যাব’ রচনার মতে আত্মপরিচয় লাভ তথা জাতীয় চেতনার জন্ম দেয়।
পরিদর্শকদের মধ্যে জানার কৌতূহল বাড়িয়ে তোলাই জাদুঘরের উদ্দেশ্য। এভাবে জাদুঘর ইতিহাস ও ঐতিহ্য, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি ইত্যাদি সম্পর্কিত জ্ঞান ও তথ্যের সঙ্গে জনগণকে আকৃষ্ট ও সম্পৃক্ত করায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এই গুরুত্বের কথা এবং মানবজাতির আত্মপরিচয় তুলে ধরায় জাদুঘরের ভূমিকার কথা বর্ণিত হয়েছে প্রদত্ত উদ্দীপক এবং ‘জাদুঘরে কেন যাব’ প্রবন্ধে।
উদ্দীপকে রাইসা ও তার খালাতো-ফুফাতো ভাইবোনসহ একদল ছেলেমেয়ে ঢাকা জাতীয় জাদুঘরে যায়। জাদুঘরে সংরক্ষিত মানুষের উদ্ভাবন নৈপুণ্যে তারা যেমন বিস্মিত হয়েছে, আনন্দ পেয়েছে, তেমনি ইসা খাঁর কামান, নবাব সিরাজ-উদ-দৌলার তরবারি দেখে দেশের প্রাচীন গৌরবে উদ্দীপ্ত হয়েছে। উদ্দীপকের ছেলেমেয়েদের এ উদ্দীপনাকে ‘জাদুঘরে কেন যাব’ রচনায় ব্যক্তির আত্মপরিচয় লাভ বা জাতীয় চেতনার জন্মলাভ বলে অভিহিত করা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে রচনার লেখক বলেন, জাতীয় জাদুঘরে বঙ্গের হাজার বছরের পুরনো ইতিহাস ও সমৃদ্ধ সংস্কৃতির যে-নমুনা সেখানে ছিল তা থেকে তিনি বাঙালির আত্মপরিচয় লাভ করেছিলেন।
ঘ. উচ্চতর দক্ষতা
উদ্দীপকে ‘জাদুঘরে কেন যাব’ রচনার মূলকথা বা শিক্ষণীয় অংশটুকু যথার্থরূপে প্রকাশ পেয়েছে। -মন্তব্যটি যথাযথ।
জাদুঘর একটা শক্তিশালী সামাজিক সংগঠন। জাদুঘর হচ্ছে এমন এক সর্বজনীন প্রতিষ্ঠান যেখানে মানব সভ্যতা ও সংস্কৃতির বৈচিত্র্যপূর্ণ ও ঐতিহাসিক নিদর্শন সংগ্রহ করে রাখা হয়-প্রদর্শন ও গবেষণার জন্য। এভাবে জাদুঘর ইতিহাস ও ঐতিহ্য, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি ইত্যাদি সম্পর্কিত জ্ঞান ও তথ্যের সঙ্গে জনগণকে আকৃষ্ট করার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
উদ্দীপকে রাইসা ও তার খালাতো-ফুফাতো ভাইবোনসহ একদল ছেলেমেয়ে ঢাকা জাতীয় জাদুঘর পরিদর্শনে গিয়ে জাদুঘরে সংরক্ষিত মানুষের উদ্ভাবন নৈপুণ্যে বিস্মিত হয়, আনন্দ পায়। ইসা খাঁর কামান এবং নবাব সিরাজ উদ-দৌলার তরবারি দেখে দেশের প্রাচীন গৌরবে উদ্দীপ্ত হয়। দেশের নানা মানচিত্র দেখে দেশের কৃষিজ, খনিজ ও শিল্পসামগ্রী সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করে। সুদূর বাগদাদের আব্বাসীয় আমলের মুদ্রা এবং ‘জাদুঘরে কেন যাব’ রচনার মূলকথা শিক্ষণীয় অংশরূপে বিবেচিত।
জাদুঘর আমাদের জ্ঞান দান করে। জাদুঘর আমাদের আনন্দ দেয় সর্বোপরি জাদুঘরে জাতির অনুরূপ কীর্তির সঙ্গে যখন আমরা একাত্মতা অনুভব করি, তখন আমাদের উত্তরণ হয় বৃহত্তর মানবসমাজে। প্রশ্নোক্ত মন্তব্যটিকে তাই সংগত কারণেই যথাযথ বলা যায়।
0 Comments:
Post a Comment