বাংলা ব্যাকরণ
আলোচ্য বিষয়ঃ
বাগধারা
(পর্ব-৪)
- ফফর দালালি (অহেতুক মাতববরি) তােমাকে ডেকেছে কে, তুমি যে বড় ফফর দালালি করতে এসেছ ?
- বিদুরের খুদ (শ্রদ্ধার সামান্য উপহার) গরিবের ঘরে আমার এ বিদুরের খুদ দিয়ে আপনাদের হয়ত সন্তুষ্ট করতে পারবাে না।
- বিড়াল তপস্বী (বকধার্মিক) ক্ষমতার লােভে রাজনীতি করে স্বার্থের খাতিরে জনদরদ দেখায়; আসলে সবাই বিড়াল তপস্বী।
- বাপের ঠাকুর (শ্রদ্ধেয় ব্যক্তি-শের্থে) কী আমার বাপের ঠাকুর হয়েছেন যে; সর্বদা আমার উপর তম্বি করবেন।
- বুক দিয়ে পড়া (আপ্রাণ সাহায্য করা) পরের বিপদে এমন করে বুক দিয়ে পড়তে তাঁর মত আর কেউ নেই।
- ফোড়ন দেওয়া (খোঁচা দেওয়া)→ আমার কথার মাঝে ফোড়ন দিও না।
- বাগে পাওয়া (আওতায় পাওয়া) বাগে পেলে বেটাকে দেখে নেব।
- বালির বাঁধ (ক্ষণস্থায়ী) বড়র পিরীত বালির বাঁধ; ক্ষণে হাতে দড়ি, ক্ষণেকে চাঁদ।
- ব্যাঙের সর্দি (অসম্ভব ব্যাপার) কাঞ্চন সর্দার সাত বছর কাটিয়েছে জেলে, ওকে দেখাও জেলের ভয় ব্যাঙের আবার সর্দি।
- ব্যাঙের আধুলি (অতি সামান্য ধন) বেটা ছােট লােক; ব্যাঙের আধুলির গর্বে কারাে মান-ইজ্জত রাখল না।
- বাঁ হাতের ব্যাপার (ঘুষ) বাঁহাতের ব্যাপারে নেহাৎ ওস্তাদ না হলে সামান্য বেতনে দুবছরে কেউ এমনি দালান করতে পারে?
- বিসমিল্লায় গলদ (গােড়ায় গলদ)→ অঙ্ক করবে কি, তুমিতাে যােগ-বিয়ােগও বােঝে না। তােমার যে বিসমিল্লায় গলদ।
- বাঘের মাসি (নির্ভীক) এ মেয়ে মেয়ে নয়; এ যে বাঘের মাসি।
- বসন্তের কোকিল (সুসময়ের বন্ধু)→ সুসময়ে বসন্তের কোকিলের অভাব হয় না।
- বাঘের দুধ (দুষ্প্রাপ্য বস্তু) টাকায় বাঘের দুধ মেলে।
- বুদ্ধির পেঁকি (বােকা) হুকাটি বাড়ায়ে রয়েছে দাঁড়ায়ে বেটা বুদ্ধির পেঁকি।
- বিড়ালের আড়াই পা (বেহায়পনা) তাকে বলে লাভ নেই ; তার যে বিড়ালের আড়াই পা।
- ভরাডুবি (সর্বনাম) মামলায় হেরে গিয়ে রহিম মন্ডলের ভরাডুবি হয়েছে।
- ভূতের বাপের শ্রাদ্ধ (অপরিমিত অপব্যয় )→ পরের টাকায় ভূতের বাপের শ্রাদ্ধ অনেকেই করে।
- ভস্মে ঘি ঢালা (অপাত্রে দান) ওই বকাটে ছেলেকে উপদেশ দেওয়া আর ভস্মে ঘি ঢালা একই কথা।
- ভিজা বিড়াল (কপটচারী)⇒ সে তাে একটা ভিজা বিড়াল; বাইরে শান্ত চেহারা পেটে কিন্তু কুবুদ্ধি।
- ভূষন্ডীর কাক (দীর্ঘায়ু ব্যক্তি) এই ভূষন্ডীর কাক বুড়িটা আর কতদিন জ্বালাবে কে জানে।
- ভিটায় ঘুঘু চরান (সর্বনাশ করা) অপেক্ষা কর বেটা; তাের ভিটায় ঘুঘু না চরিয়ে আমি ছাড়ছি না।
- ভূঁইফোঁড় (অর্বাচীন) কোন এক ভূঁইফোঁড় সমালােচক রবীন্দ্রকাব্যে সর্বজনীনতার অভাব আবিষ্কার করেছে।
- ভূতের বেগার খাটা (বৃথা পরিশ্রম করা) সারা জীবন কেবল ভূতের বেগারই খাটলে; লাভ কিছুতেই করতে পারলে না।
- মাছের মা (নির্মম) পরপর তিনটি ছেলে মারা গেল, বিধবার চোখ দিয়ে এক ফোঁটা পানি পড়ল না, একেই বলে মাছের মার আবার পুত্রশােক।
- মাটির মানুষ (সরল প্রাণ) আমির মােল্লা একেবারে মাটির মানুষ; সবাই তাঁকে ভালবাসে।
- মগের মুল্লুক (অরাজকতা)→ একি মগের মুল্লুক পেয়েছ যে, পাঁ টাকার জিনিস পঁচিশ টাকায় নেবে।
- মিছরির ছুরি (মুখে মধু অন্তরে বিষ, এমন লােকের আপাত-মধুর কথা) তার কথাগুলাে মিছরির ছুরির মত বুকে বিধে।
- মাছিমারা কেরানি (যে লােক নিবাের্ধর মত কাজ করে চলে)→ মাথামুন্ড কিছু বােঝে না, বসে বসে কেবল নকল করে। সে যে এক মাছিমারা কেরানি।
- মাকাল ফল (অন্তঃসারশূন্য) পােশাকে পরিপাটি হলে কি হবে , ভেতরে সে মস্তবড় এক মাকাল ফল।
- মানিকজোড় (পরম বন্ধুত্ব) আসলাম ও হানিফ যেন মানিকজোড়; কেউ কাউকে ছাড়া চলতে পারে না।
- মান্ধাতার আমল (পুরানাে আমল)→ এখন ট্রাক্টরের যুগ; মান্ধাতার আমলের হাল-গরু দিয়ে জমি চাষ করলে চলবে কেন?
- মনিকাঞ্চন যােগ (শুভ মিল) শান্তিকামী দেশের সহিত শান্তিকামী দেশের বন্ধুতা মনিকাঞ্চন যােগ।
- মশা মারতে কামান দাগা (সামান্য কাজে বিরাট আয়ােজন) ওই বাউন্ডেলেকে শাস্তি দিতে পুলিশ ডাকবেন; এত মশা মারতে কামান দাগা।
- মুখে ফুলচন্দন পড়া (সুসংবাদের জন্য ধন্যবাদ) আমার পাশের খবর এনেছ; তােমার মুখে ফুলচন্দন পড়ক।
- মাঠে মারা যাওয়া (ব্যর্থ হওয়া) সব ষড়যন্ত্র শেষ পর্যন্ত মাঠে মারা গেল।
- ম্যাও ধরা (ঝামেলা পােহানাে) সবাই ফাঁকে ফাঁকে চলে; ম্যাও ধরার কেউ নেই।
- যমের অরুচি (সহজে মরে না যে) এই বৃদ্ধার প্রতি যমের ও অরুচি।
- যক্ষের ধন (কৃপণের ধন) আজীবন যক্ষের ধনের মত সমস্ত ধনসম্পত্তি আগলিয়ে রেখে কী লাভ।
- রাঘব বােয়াল (বড় লােভী) ধনীরা প্রায়ই রাঘব বােয়াল; অনেক আছে, আরাে চায়।
বাংলা ২য় পত্রের বাছাইকৃত বহুনির্বাচনি প্রশ্ন ও উত্তর
0 Comments:
Post a Comment