বাংলা ব্যাকরণ
আলোচ্য বিষয়ঃ
বাগধারা
(পর্ব-২)
- কলুর বলদ (পরাধীন) চোখে ঠুলি দেওয়া কলুর বলদের মত আমরা দিনরাত কেবল সংসারের ঘানি টেনেই চলছি।
- কেঁচে গন্ডূষ করা (পুনরায় আরম্ভ করা) ছােট ভাইকে অঙ্ক শেখাতে গিয়ে আবার কেঁচে গন্ডুষ করতে হচ্ছে।
- কংস মামা (নির্মম আত্মীয়) আত্মীয়রা সব যে কংস মামার দল; বিপদে এগিয়ে আসবে না কেউ।
- ক-অক্ষর গােমাংস (বর্ণ পরিচয়হীন) এমন জ্ঞানী লােকের ছেলে কিনা ক-অক্ষর গােমাংস।
- কাক-ভূষন্ডী (দীর্ঘায়ু ব্যক্তি) এ কাক-ভূষন্ডী লােকটার কই মাছের প্রাণ; কত মাঘের শীত গেল, তবু সে মরল না।
- কাঠালের আমসত্ত্ব বা সােনার পাথরবাটি (অসম্ভব বস্তু)⇒ শক্তির যুগে নিরস্ত্রীকরণ; এ যেন কাঁঠালের আমসত্ত্ব কিংবা সােনার পাথরবাটি।
- কূপমন্ডুক (সীমাবদ্ধ জ্ঞানসম্পন্ন) স্ত্রীলােকটি কূপমন্ডক হলেও অতি শান্ত ও মিষ্টভাষিণী।
- কাঁটা দিয়ে কাঁটা তােলা (শত্রু দিয়ে শত্রু নাশ)→ ডাকাত লাগিয়ে ডাকাত ধরেছি; মানে কাঁটা দিয়ে কাঁটা তুলেছি।
- কত ধানে কত চাল (ঠিকঠাক হিসাব) বাবার উপর খাও; তাইতাে বােঝাে না কত ধানে কত চাল।
- কাঠের পুতুল (নির্বাক, অসার) কাঠের পুতুলের মত বসে আছ কেন ? কাজে মন লাগাও।
- কচুবনের কালাচাঁদ (অপদার্থ)→ খাবে আর ফুর্তি করবে; লেখাপড়ার বালাই নেই, পােশাকে পরিপাটি; এ যে কচুবনের কালাচাঁদ।
- খয়ের খাঁ (তােষামুদকারী) বড় লােকের খয়ের খাঁর অভাব নেই।
- খাল কেটে কুমির আনা (বিপদ ডেকে আনা) আমার একা ব্যবসায়ে তাকে অংশীদার করে খাল কেটে কুমির এনেছি।
- গলগ্রহ (পরের বােঝা হয়ে থাকা) কারাে গলগ্রহ হয়ে থাকতে চাই না।
- ঐ গােকুলের ষাঁড় (স্বেচ্ছাচারী) খায় দায় আর ঘুরে বেড়ায়; ছেলেটি যেন গােকুলের ষাঁড়।
- গোঁয়ার গােবিন্দ (কান্ডজ্ঞানহীন) সলিম মােলর ছেলেটি একেবারে গোঁয়ার গােবিন্দ; ভয়ও নেই, ভাবনাও নেই।
- গুড়ে বালি (আশায় নৈরাশ্য) → আমার উপর চিরদিন খাবে, সে আশা গুড়ে বালি।
- গোঁফ-খেজুরে (অলস) -তার মত গোঁফ-খেজুরের জীবন আবার স্বাচ্ছন্দ্য।
- গৌরচন্দ্রিকা (ভণিতা) গৌরচন্দ্রিকা বাদ দিয়ে আসল কথা বল।
- গড্ডলিকা প্রবাহ (অন্ধ অনুকরণ) গড্ডলিকা প্রবাহে জীবন ভাসিয়ে দিলে উন্নতির আশা গুড়ে বালি।
- গােবরে পদ্মফুল (অস্থানে ভাল জিনিস) দুঃখিনী বিধবার সুন্দরী মেয়ে; এ যে গােবরে পদ্মফুল।
- গঙ্গাজলে গঙ্গাপূজা (যার ধনে তার তুষ্টি সাধন) নজরুল জয়ন্তীতে নজরুলের কবিতা আবৃত্তি করে আমি গঙ্গাজলে গঙ্গাপূজা করলাম।
- ঘােড়ার ঘাস কাটা (বাজে কাজ করা) চাল নেই, চুলাে নেই, দুপয়সার সঞ্চয় নেই; সারা জীবন ঘােড়ার ঘাস কেটেছে।
- ঘােড়ার ডিম (অবাস্তব বস্তু) সারা বছর লেখাপড়া নেই, পরীক্ষায় পাবে ঘােড়ার ডিম।
- ঘােড়া রােগ (বাতিক) ভাত নেই, কাপড় নেই, তার আবার সিনেমা দেখার শখ; গরিবের এ ঘােড়া রােগ কেন ?
- ঘােড়া ডিঙ্গিয়ে ঘাস খাওয়া (উপরওয়ালাকে টপকাইয়া স্বার্থ উদ্ধার করা) প্রমােশন চাও, বড় সাহেবকে ধরাে; ঘােড়া ডিঙ্গিয়ে ঘাস খাওয়ার চেষ্টা করাে না।
- ঘটিরাম (অপদার্থ) কপাল ভাল থাকলে ঘটিরামদেরও ভাল চাকরির অভাব হয় না।
- চুনকালি দেওয়া (কলঙ্ক দেওয়া)⇒ কুলাঙ্গার ছেলেটি বংশের মুখে চুনকালি দিয়েছে।
- চোখের চামড়া (লজ্জা) চোখের চামড়া থাকলে যার তার কাছে টাকা ধার চাইতে পারতে না।
- চিনির বলদ (ভারবাহী, ফলভােগী নয়) ক্যাশিয়ার হান্নান মিয়া রােজ লাখ টাকা গুণেন ; কিন্তু সবই ব্যাঙ্কের টাকা তিনি কেবল চিনির বলদ।
- চোখের বালি (অপ্রিয়) সাধারণের কল্যাণ চাই বলে সমাজে আমরা চোখের বালি।
- চশমখাের (চক্ষুলজ্জাহীন) বন্ধুটি আমার চশমখাের; তুচ্ছ জিনিসটার সে দাম কেটে নিতে পারলাে।
- চোরাবালি (প্রচ্ছন্ন আকর্ষণ) লােভের চোরাবালিতে পড়ে জীবনটা মাটি করাে না।
- চোখে সর্ষে ফুল দেখা (বিপন্ন অবস্থায় কি করবে বুঝতে না পারা) অনেকগুলাে বিপদ একই সঙ্গে আসাতে লােকটি চোখে সর্ষে ফুল দেখছে।
- ছেঁড়া চুলে খোঁপা বাঁধা (বৃথা চেষ্টা) -কুসংসর্গে পড়ে সব হারিয়েছ, এখন জীবনটাকে গুছাতে চাও। এ যে ছেঁড়া চুলে খোঁপা বাঁধা।
- ছাইচাপা আগুন (সুপ্ত প্রতিভা)⇒ ছেলেটা ছাইচাপা আগুন, জীবনে সে জয়ী হবে।
- ছাই ফেলতে ভাঙা কুলাে (অকাজের জন্য অপদার্থের নিয়ােগ) রমেশ ছাড়া এ নােংরা এটো কুড়াবে কে ? ছাই ফেলতে যে ভাঙ্গা কুলাের প্রয়ােজন।
- ছেলের হাতের মােয়া (অতি সামান্য বস্তু) সাহিত্য ছেলের হাতের মােয়া কিংবা গুরু হাতের বেত নয়।
- ছুঁচো মেরে হাত গন্ধ (অল্প লাভে দুর্নাম কেনা) ওর মত এ অনাথকে মারা ছুঁচো মেরে হাত গন্ধ করা মাত্র।
- ছক্কা পাঞ্জা করা (বড় বড় কথা বলা) বিদ্যা নেই, অথচ ছক্কা পাঞ্জা করে; একেই বলে অল্প বিদ্যা ভয়ঙ্করী।
- ছকড়া নকড়া (সস্তা)→ বিপদে পড়ে রামবাবু নেহায়েৎ ছকড়া নকড়ায় জমিটা বিক্রি করে দিলেন।
বাংলা ২য় পত্রের বাছাইকৃত বহুনির্বাচনি প্রশ্ন ও উত্তর
0 Comments:
Post a Comment